Kolkata Heritage Building : "ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই", কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বাড়ির নতুন তালিকা ঘিরে বিতর্ক !
Heritage Building : একটি ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হয়েছে ২০১০-১১ সালে। কিন্তু ঠাঁই পেয়েছে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বাড়ির নতুন তালিকায়
সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : ফ্ল্যাট থেকে ঐতিহাসিক গুরুত্বহীন বাড়ি। কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বাড়ির নতুন তালিকায় এমন অনেক বাড়ি ঠাঁই পেয়েছে, যাকে হেরিটেজ বলা যায় না। এই দাবি বাড়ির বাসিন্দাদের। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কলকাতা পুরসভার মেয়রের দাবি, বিষয়টি খতিয়ে দেখবে পুরসভার হেরিটেজ কমিটি।
একটি ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হয়েছে ২০১০-১১ সালে। কিন্তু ঠাঁই পেয়েছে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বাড়ির নতুন তালিকায়। শুধু তাই নয়, এমন বাড়িও তালিকায় আছে, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। কলকাতা পুরসভার ওয়েবসাইটে হেরিটেজ বাড়ির নতুন যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, বা ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী- এমন বাড়িকে হেরিটেজ তকমা দেয় পুরসভা। আবার যে সব পুরনো বাড়ির স্থাপত্যের বিশেষত্ব রয়েছে, সেগুলিও হেরিটেজ তকমা পায়। কিন্তু নতুন হেরিটেজ তালিকায় ঠাঁই পাওয়া অনেক বাড়িই হেরিটেজ তকমার যোগ্য নয় বলে বাসিন্দারাই দাবি করছেন।
১৯ নম্বর শোভাবাজার স্ট্রিট। এখানকার রুক্মিণী টাওয়ারের বাসিন্দা পঞ্চমদাস মোহতা। তাঁর দাবি, ২০১০-১১ সালে এই ফ্ল্যাটবাড়িটি তৈরি হয়েছিল। পঞ্চমদাস মোহতা বলেন, ২০১১ সাল থেকে আমরা এই ফ্ল্যাটে রয়েছি। ২০১০-১১ সাল নাগাদ ফ্ল্যাট বাড়িটি তৈরি হয়েছে। শোনা যায়, এখানে আগে গেঞ্জি তৈরির কারখানা ছিল।
৩ নম্বর শোভাবাজার স্ট্রিট । এখানকার একটি বাড়ির মালিক অসিতকুমার হোমচৌধুরী। তাঁর দাবি, এই বাড়ি বা জমির কোনও ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। ৩ নম্বর শোভাবাজার স্ট্রিটের বাসিন্দা অসিতকুমার হোমচৌধুরী বলেন, আগে এখানে নুনের গোলা ছিল। তারপর হয় চালের গোলা। পরে আমাদের পরিবার এখানে বাড়ি তৈরি করে। এই জায়গার কোনও ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই।
২৭ নম্বর শোভাবাজার স্ট্রিটের একটি বাড়ির মালিক ভরতকুমার বাছাওয়া বুঝতেই পারছেন না, কী জন্য তাঁর বাড়িকে হেরিটেজ তালিকায় রাখা হল ? তিনি বলেন, ৪৭ বছরের বেশি এই বাড়িতে আছি। তবে কী জন্য হেরিটেজ করল তা বলতে পারব না। বিল্ডিংয়ের এমন কোনও কাঠামো নেই যা হেরিটেজ তকমা পাওয়ার যোগ্য। হেরিটেজ করে লাভ কী ?
৩১ A শোভাবাজার স্ট্রিট । পাশাপাশি দুটি ঠিকানায় দুটি বাড়ি একই পরিবারের। ৩১ A ও ৩১ B। ৩১ A বাড়ির বাসিন্দা দিলীপকুমার ভট্টাচার্যের দাবি, তাঁর পাশের বাড়িটি অনেক বেশি পুরনো। অথচ পাশের বাড়ির সঙ্গে তাঁদের বাড়িকেও হেরিটেজ তালিকায় রাখা হয়েছে। দিলীপকুমার ভট্টাচার্য বলেন, পাশের ৩১ বি তে থাকতেন আমার ঠাকুরদা হরিদাসচন্দ্র জ্যোতিষার্ণব। সেই বাড়িটি বেশ পুরনো। পরে স্থান সংকুলানের জন্য ৩১ এ ঠিকানায় এই বাড়ি তৈরি হয় ৬০ এর দশকে। নতুন বাড়িকে কেন হেরিটেজ ঘোষণা করা হল তা বুঝতে পারছি না।
এনিয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, হেরিটেজ কমিটির সদস্যরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন লোক হেরিটেজ করার জন্য চিঠি দেয়। আমরা সেই অনুসারে হেরিটেজের তালিকা তৈরি করেছি। পরে হেরিটেজ কমিটির লোকেরা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে।
এখন হেরিটেজ কমিটির সদস্যরা খতিয়ে দেখার পর তালিকায় বদল হয় কি না, সেটাই দেখার।