Mamata Banerjee : 'এটা মূল্যহীন', ভরা সভামঞ্চ থেকে আচমকা কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ মমতার ! 'হিসেব আপনাকে দিতেই হবে', পাল্টা শুভেন্দুর
Suvendu Adhikari : 'এই টাকার হিসেব আপনাকে দিতেই হবে।' মুখ্যমন্ত্রীর কাগজ ছেঁড়ার ভিডিও পোস্ট করে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

আশাবুল হোসেন, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, অর্ণব মুখোপাধ্যায় : হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরেও একশো দিনের কাজের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। উল্টে নতুন শর্ত চাপানো হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে কোচবিহারের দলীয় সভামঞ্চ থেকে কাগজ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানালেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। 'এই টাকার হিসেব আপনাকে দিতেই হবে।' মুখ্যমন্ত্রীর কাগজ ছেঁড়ার ভিডিও পোস্ট করে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
মঞ্চ থেকে কাগজ ছেড়া। হঠাৎ, আচমকা ! ভরা সভা মঞ্চ থেকে উপস্থিত হাজারো জনতার সামনে। একশো দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শর্তের পাল্টা এভাবেই কাগজ ছিড়ে প্রতিবাদ জানালেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়! মঞ্চে তিনি বলেন, "এই কাগজটার কোনও মূল্য নেই। এটা মূল্যহীন। তাই এই কাগজটাকে, এটা আমার নোট, সরকারের নোট। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের অর্ডার নয়, ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। আমি এটাকে মনে করি অসম্মান, অপমান।"
১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা নিয়ে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সংঘাত দীর্ঘদিনের। মঙ্গলবার কোচবিহারে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জনসভা ছিল। সেখানে মুখ্য়মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে রাজ্য সরকারকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। যেখানে কিছু শর্ত চাপিয়ে লেবার বাজেট দেখানোর কথা বলা হয়েছে। এরপরই মুখ্য়মন্ত্রী ছিঁড়ে ফেলেন হাতে থাকা কাগজ। বলেন, "হঠাৎ করে গত পরশুদিন একটা চিঠি দিয়েছে আমাদের, হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্ট হয়ে যাওয়ার পর, প্রায় ১ বছর পর। তাতে বলছে ফোর্স বাই কোর্ট অর্ডার ৬ ডিসেম্বর থেকে রেস্ট্রিক্টিভ কন্ডিশন দিয়েছে, শর্ত দিয়েছে। কী শর্ত? ত্রৈমাসিক লেবার বাজেট দেখাতে হবে। দেখাবার সময় কোথায়? ৩ মাসও যদি হয়, সময় কোথায় ? এটা ডিসেম্বর মাস, ফেব্রুয়ারিতে ভোট। আমি বলি, তোমার এই কাগজটা দেখছ না..., এই কাগজটার কোনও ভ্যালু নেই। এটা ভ্যালুলেস। আবার আমরা ক্ষমতায় আসব।"
মুখ্যমন্ত্রীর এই কাগজ ছেঁড়ার ভিডিও এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে লিখেছেন, মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভায় দাঁড়িয়ে আপনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যতই অসহযোগিতার ও বঞ্চনার অভিযোগ তুলুন, অথবা কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাকে অমান্য করে সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলে আপনি আপনার বশংবদদের বাহবা বা হাততালি কুড়োতেই পারেন, কিন্তু আসল কথা হল ১০০ দিনের (MGNREGA) দিনের কাজের তহবিলের অর্থ আপনার সরকার ও দল যে চুরি করেছে সেটা প্রমাণিত, এবং এই টাকার হিসেব আপনাকে দিতেই হবে। তাই যতোই নাটক আপনি মঞ্চস্থ করুন না কেনো, জনগণ জেনে গেছে যে আপনার জ্বালার কারণ আসলে - আঙুর ফল টক !!!
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায়, ১৮ জুন কলকাতা হাইকোর্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, পয়লা অগাস্ট থেকে রাজ্য়ে '১০০ দিনের প্রকল্প' চালু করতে হবে। তবে দুর্নীতি আটকাতে যে কোনও শর্ত আরোপ করা যাবে। আর এই শর্ত আরোপ হবে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের জন্য়ই। প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট বলেছিলেন, কেন্দ্র চাইলে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমের সরাসরি নির্দিষ্ট ব্যক্তির অ্য়াকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবে। হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। ২৭ অক্টোবর, মামলার শুনানিতে, কার্যত কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।


















