North 24 Pargana : রাস্তা যেন মৃত্যু ফাঁদ ! প্রাণ বাঁচাতে জলমগ্ন রাস্তায় ভেলা ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া হল রোগী
বড় রাস্তা পর্যন্ত যেতে গেলে, অসুস্থ রোগীদের ভরসা কলার ভেলা। সাম্প্রতিককালে বারবার রাজ্যের নানা প্রান্তে চোখে পড়েছে রাস্তার বেহাল দশা!

সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : এ যেন পথশ্রীর রাজ্যে হতশ্রী ছবি। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন এলাকা। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় তাই এবার বাধ্য হয়ে অ্যামবুল্যান্সের বদলে অসুস্থ রোগীকে কলার ভেলায় চাপিয়ে নিয়ে যেতে হল বড় রাস্তা অবধি! গ্রামবাসীদের দাবি, এই দুর্ভোগের কথা জানেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে, বিধায়কও। তবু এত বছরে সুরাহা মেলেনি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বর্ষাকালে প্রতিবছরই প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস, ঠিক এভাবেই জলমগ্ন থাকে এলাকা। কোথাও কোমর সমান, কোথাও বুক সমান জল জমে একেবারে স্তব্ধ হয়ে যায় জনজীবন। বড় রাস্তা পর্যন্ত যেতে গেলে, অসুস্থ রোগীদের ভরসা এই কলার ভেলা। সাম্প্রতিককালে বারবার রাজ্যের নানা প্রান্তে চোখে পড়েছে রাস্তার বেহাল দশা! বারবার চরম ভোগান্তি হয়েছে রোগীদের!
কোথাও আবার বেহাল রাস্তার জেরে নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারায় মৃত্যুর অভিযোগ অবধি উঠেছে!
মনে পড়ায় নারায়ণগড়ের ছবি
কিছুদিন আগে শিরোনামে উঠে আসে পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামের একটি ঘটনা। নারায়ণগড়ে গ্রামরাজ পঞ্চায়েত এলাকার সানদেউলি গ্রামে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার এমনই শোচনীয় অবস্থা, যে গাড়ি, বাইক তো দূরের কথা, সাইকেল অবধি চালানো দুষ্কর। সেখানে প্রাণ বাঁচাতে, হৃদরোগে আক্রান্ত বৃদ্ধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা পেতে বাঁশের ডুলিতে করে নিয়ে যেতে হয়। সেই ঘটনা নিয়ে চর্চা হয় বিস্তর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে তাঁদের। প্রশাসনকে জানালেও কেউ কথা কানেই তোলেননি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। এই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই টনক নড়ে প্রশাসনের। রাস্তা মাপার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে শুরু হয় মাপজোক।
বাঁকুড়াতেও হতশ্রী পথ
একই রকম হতশ্রী রাস্তার ছবি বাঁকুড়াতেও। জল, কাদায় ভরা রাস্তা, দু'পা চলতে গেলেও জীবন বেরিয়ে যায়। যে কোনও সময়ে পিছলে পড়ে হাত-পা ভাঙার ভয় নিয়েই যাতায়াত করতে হয়। বাঁকুড়ার এক নম্বর ব্লকের কেঞ্জাকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ধগড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছতে গেলে এই ৩০০ মিটার রাস্তা পার করতেই হয় ক্ষুদে পড়ুয়াদের। সারা বছরই বেহাল অবস্থায় থাকে এই কাঁচা রাস্তা, স্কুলের জুতো হাতে নিয়েই এই পথ পার করতে হয় পড়ুয়াদের। বৃষ্টি পড়লে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয় পড়ুয়া থেকে অভিভাবক সকলকেই।
খারাপ রাস্তা, জলযন্ত্রণা নিয়ে সমানে চলছে রাজনীতি। আকচাআকচি চলছেই। কিন্তু দুর্ভোগের দিন শেষ হবে কবে? উত্তর অজানা।























