Panchayat Election: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন, এবার টিকিট পেলেন না তৃণমূল নেতা
North 24 Parganas:বাগদার 'সৎ রঞ্জনে'র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি। নিশানায় ছিল দলের একাংশও
সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দলেরই একাংশকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তিনি। তাই এবার আর ভাগ্যে জুটল না পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট! এই অবস্থায় ফের একবার ক্ষোভ উগরে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অনুপ ঘোষ। এর আগে বাগদার 'সৎ রঞ্জনে'র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নিজের দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন, বাগদার তৃণমূল নেতা ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অনুপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, 'সরকার কি জানে না, এ চাকরি কীভাবে হচ্ছে? তাহলে আগা থেকে মাথা পর্যন্ত সব ধরুক। চন্দনের একার দোষ দিলে হবে না।' সেই কারণেই কি দলের রোষের মুখে পড়লেন তিনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের নাম করে সমালোচনা করার কারণেই কি এবার আর ভোটের টিকিট জুটল না তাঁর? তিনি নিজেই সেইদিকে ইঙ্গিত করেছেন, বলেছেন, 'না আমি টিকিট পাইনি। এই যে চাকরিবাকরির এই চন্দন, পার্থ, সুবীরেশ, কুন্তল ঘোষ এইসব যেসব পরিস্থিতির শিকার মানুষ, সেই ব্যাপারে কথা বলে হয়ে গেছে। তারজন্য এই পরিস্থিতি।'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাগদার মামা ভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা সৎ রঞ্জনের কথা সবার প্রথমে উঠে আসে প্রাক্তন সিবিআই কর্তা ও তৃণমূল বিধায়ক উপেন বিশ্বাসের মুখে। সেই সৎ রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলকে অনেকদিন আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁকে নিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন খোদ বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল সদস্য অনুপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, 'এ কার মাস্টার প্ল্য়ান? যারা সরকার চালাচ্ছে, শিক্ষা দফতর কারা আছে, চন্দন কে? চন্দন তো আমার মামা-ভাগিনার ছেলে। কলকাতায় শিক্ষা পরিচালনা কারা করছে? শিক্ষা দফতর কারা চালাচ্ছে? সেটা আগে দেখুক। বড় বড় যারা এই এলাকায় চাকরি করে, আর প্রভাবশালী লোক, সবাই ওখানে গেছে। প্রভাবশালী লোক যারা আছে, সবাই চন্দনের ফোঁটা নিয়েছে। কেউ বাকি নেই চন্দনের ফোঁটা নিতে। ১৬ কোটি তো বাচ্চা। বস্তা বস্তা টাকা গেছে এখান থেকে।' এই প্রেক্ষাপটে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে, বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের এই তৃণমূল সদস্যকে আর প্রার্থী করেনি দল। অনুপ ঘোষ বললেন, 'আমি মমতা ব্যানার্জির দল করি। এখন যে মমতা ব্যানার্জি সেই মমতা ব্যানার্জির দল আর আমার করতে ইচ্ছে করে না। আগের যে মমতা ব্য়ানার্জি ছিল সেই দলই আমি করি। এখনও আমি টিএমসি করি। ঘেন্না লাগলেও কিছু করি না। যাঁরা মমতাকে আজ গাল দিচ্ছে, তাঁরাই মমতার টাকা খেয়েছে। আর আমরা না খেয়ে এখনও মমতার হয়ে লড়ছি।'
চন্দন মণ্ডলের প্রভাব কি ভোটে পড়বে? অনুপের মতে, 'মানুষের ইচ্ছে নেই টিএমসিকে ভোট দেওয়ার। তাও মানুষ দিচ্ছে কী করবে, মানুষ যাবে কোথায়?'
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, 'উনি ঠিকই বলেছেন। তৃণমূল যে চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত, তা নিয়ে বলেছিল বলেই তো টিকিট পায়নি। এই দলে সত্যি কথা বলা যাবে না। নীরবে চুরি করে যেতে হবে।'
বিজেপিকেও নিশানা সৎ রঞ্জনের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল নেতার। বিজেপির টিকিটে জিতে বনগাঁর বিধায়ক হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। তিনি এখন তৃণমূলে। তাঁকে নিশানা করে অনুপ ঘোষ বলেন, 'বিজেপিরাও আরেক বদ। ওই যে বিশ্বজিৎ দাস আরেক বদ। ওই বদ এখনও টিএমসির বনগাঁর হর্তাকর্তা, আবার বিজেপির এমএলএ। এই তো বাগদার মানুষ এই পরিস্থিতির শিকার।'
পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। তাঁর দাবি, 'ওর সম্পর্কে আমাদের কাছে অনেক রিপোর্ট জমা পড়েছে। যে ও ৫ বছর ধরে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার নামে নিজের পরিষেবা বেশি করেছে। আর ও সুস্থ স্বাভাবিক নয়। এটা ওখানকার মানুষ জানে। মানুষ চায়নি ওকে প্রার্থী করতে। আমরা এবার মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছি। ওর কথার কোনও মূল্য নেই। আমি ওর সুস্থতা কামনা করি।'
আরও পড়ুন: অসময়ে বেশি খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা রয়েছে? এই সমস্যা দূর করতে কী কী করবেন