East Burdwan News: ‘কাজের খোঁজে’ স্কুলছুট! পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরাতে উদ্যোগ কালনার শিক্ষকদের
East Burdwan School Drop Out: রাজ্যে খুলে গেছে সব স্কুল (School Reopen)। মঙ্গলবার, স্কুল খোলার দিনই অন্ধকার বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার অরবিন্দপ্রকাশ ঘোষ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
রানা দাস, কালনা: স্কুল খুললেও প্রায় ফাঁকা ক্লাসরুম। অনেক পড়ুয়াই স্কুল ছুট (School Drop Out) হয়ে যোগ দিয়েছে কাজে। বাধ্য হয়ে পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরাতে অভিভাবকদের বোঝানো শুরু করেছেন শিক্ষকরা। এই ছবি পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কালনার (Kalna) একটি স্কুলের।
মঙ্গলবারই রাজ্যে খুলে গেছে সব স্কুল (School Reopen)। করোনা পরিস্থিতিতে (Corona Situation) দীর্ঘ সময় পর পড়ুয়াদের কলতানে ভরে উঠেছে ক্লাসঘর। কিন্তু প্রদীপের নীচে অন্ধকারের মতো, শিক্ষার এই উজ্জ্বল আলোর নীচেই রয়েছে ভয়াবহ অন্ধকার। সেই অন্ধকারে উঁকি দিচ্ছে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল ছুটদের করুণ কাহিনি। মঙ্গলবার, স্কুল খোলার দিনই এই অন্ধকার বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার অরবিন্দপ্রকাশ ঘোষ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র কাজ নিয়েছে ধান ঝাড়াইয়ের কলে। সে আর স্কুলে আসছে না। পূর্ব বর্ধমানের কালনার অকালপৌষ গ্রামের বাসিন্দা ওই ছাত্রের কথায়, “বাবা একা কাজ করতে পারছিল না। তার জন্য স্কুল ছেড়েছি। এখন ধান ঝাড়ার কাজ করছি। স্যারেরা স্কুল যাওয়ার জন্য বলেছে। দেখি, বাবা কী বলে।’’ ওই ছাত্রের মা টুটু মালিকের কথায়, “করোনা পরিস্থিতি না হলে ছেলেটা হয়তো পড়াশোনা চালিয়ে যেত। স্কুল বন্ধ হওয়াতে ওর বাবা সুযোগ পেয়ে গেল। ওর বাবা বলছে, স্কুলে যখন যাচ্ছে না, তখন কাজে যাক।’’ ওই স্কুলেরই নবম শ্রেণির এক ছাত্র হাতের লেখা এতই সুন্দর যে পরীক্ষায় সে বাড়তি নম্বর পেত। সেই ছাত্র হাতের কাজ শেখার জন্য পাড়ি দিয়েছে রাজস্থানে। পুজো উপলক্ষে ছুটিতে বাড়ি এসেছে। ওই ছাত্রের কথায়, “বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ। তাই কাজে গেছি। পড়াশোনা হচ্ছিল না, তাই বাইরে চলে গেছিলাম।’’
স্কুল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নবম শ্রেণিতে ৩৭ জন পড়ুয়ার মধ্যে উপস্থিত ছিল মাত্র ১১ জন। দশম শ্রেণিতে ৭২ জনের মধ্যে উপস্থিত মাত্র ১৯ জন পড়ুয়া। বাকিরা কোথায়? শিক্ষকদের দাবি, উপস্থিত পড়ুয়াদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন ২টি ক্লাস মিলিয়ে স্কুলছুট হয়েছে ৪০ জন পড়ুয়া। করোনা পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে কেউ এলাকায় কোনও কাজে যোগ দিয়েছে , কেউ কেউ পাড়ি দিয়েছে ভিনরাজ্য। স্কুল ছুটদের ফেরাতে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, “অনেক পড়ুয়াই বাইরে চলে গেছে। এটা খুব উদ্বেগের বিষয়। আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। ২টি টিম করেছি।’’