নয়াদিল্লি: কেন্দ্রে দল যখন ক্ষমতায়,সেই সময়ই রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে গিয়েছিল। অথচ এত বছরেও কোনও সরকারে বা বিরোধী হিসেবে সংসদে গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যায়নি রাহুল গাঁধীকে। এবার সেই ছবি পাল্টাতে চলেছে। লোকসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন রাহুল। দীর্ঘ ১০ বছর পর লোকসভা এই প্রথম বিরোধী দলনেতা পাচ্ছে। তাই রাহুলকে নিয়ে প্রত্যাশাও বাড়ছে। পাশাপাশি, বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা এবং বিশেষ ক্ষমতা পেতে চলেছেন রাহুল। (Rahul Gandhi)


লোকসভার বিরোধী দলনেতার পদটি আইনসিদ্ধ। পদ। ১৯৭৭ সালের সংসদীয় আইন অনুযায়ী বেতন এবং ভাতা প্রাপ্য। লোকসভার বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সমান সম্মান এবং মর্যাদা পান। স্বাধীনতার আগে মোতিলাল নেহরু বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর বিরোধী দলনেতার পদটি  আইনি স্বীকৃতি পায়। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলনেতার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের প্রথম বিরোধী দলনেতা রাম সুভাগ সিংহ, ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি। (Leader of Opposition)


সংসদীয় কাজকর্মে বিরোধী দলনেতা দায়িত্ব অনেক। সরকারের কাজের সমালোচনা, পর্যালোচনা এবং লোকসভায় শাসক-বিরোধী ভারসাম্য বজায় রাখেন তিনি। সবপক্ষের মতামত গৃহীত হচ্ছে কি না, সব পক্ষ সমান সুযোগ পাচ্ছে কি না, তা দেখেন। লোকভার বিরোধী দলনেতাকে 'Shadow Prime Minister'ও বলা হয়। তিনি 'Shadow Cabinet' চলান। অর্থাৎ বিরোধী শিবিরের নেতাদের নিয়ে মন্ত্রিসভার অনুরূপ একটি কমিটি গড়েন। ওই কমিটির সদস্যরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের কাজকর্মের উপির নজরদারি চালান, খামতিগুলি তুলে ধরেন।


আরও পড়ুন: Leader of Opposition: লোকসভায় বিরোধী দলনেতা হলেন রাহুল


আমলা নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতার মতামত নিতে হবে সরকারকে। সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা, খরচ-খরচা সংক্রান্ত এবং বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির অংশ হবেন। সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন, সেন্ট্রাল ইনফর্মেশন কমিশন, CBI, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, নির্বাচন কমিশনার, লোকপাল নিয়োগের কমিটিরও সদস্য হবেন বিরোধী দলনেতা। 


লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে মাসে ৩.৩ লক্ষ টাকা বেতন প্রাপ্য় রাহুলের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতো নিরাপত্তা পাবেন, যা জেড প্লাস নিরাপত্তাও হতে পারে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতো সরকারি বাংলো এবং কর্মচারী পাবেন। 


বিরোধী শিবির থেকে কোনও দল মোট আসনের ১০ শতাংশ না পাওয়ায়, ২০১৪ সাল থেকে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন না। সেক্ষেত্রে বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে নিয়োগ কমিটিতে রাখা হয়। 


গাঁধী পরিবার থেকে এই নিয়ে তিন জন লোকসভার বিরোধী দলনেতা হলেন। সনিয়া গাঁধী এবং রাজীব গাঁধীও লোকসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন একসময়। গাঁধী পরিবার থেকে, ১৯৮৯-'৯০ সালে রাজীব গাঁধীই প্রথম লোকসভার বিরোধী দলনেতা হন। ১৯৯৯-২০০৪ সাল থেকে সনিয়া গাঁধী ওই পদে ছিলেন। এবার তাঁদের ছেলে রাহুল বিরোধী দলনেতা হলেন।