Recruitment Scam : বহু অযোগ্য প্রার্থীকে পাস করিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন, আদালতে দাবি ইডি-র
Manik Bhattacharya : মানিক ভট্টাচার্য গোটা পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন বলেও আদালতে দাবি করেন ইডির আইনজীবী।
প্রকাশ সিনহা, আবীর দত্ত ও বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা : ২০১২ এবং ২০১৪-র TET-এ বহু অযোগ্য প্রার্থীকে পাস করিয়ে দিয়ে, প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন শীল। মঙ্গলবার আদালতে রিমান্ড লেটারে এই দাবি করল ইডি (Enforcement Directorate)। মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) গোটা পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ (Foreign Trip) করেছেন বলেও আদালতে দাবি করেন ইডির আইনজীবী।
এ যেন গোলকধাঁধা ! একের পর এক গ্রেফতারি। আর তারই সঙ্গে জটিল সম্পর্কের উদঘাটন ! কার সঙ্গে সঙ্গে কে জড়িয়ে তা বুঝে ওঠা দায় ! পার্থ-কুন্তল-শান্তনু-মানিক-অয়ন... নিয়োগ দুর্নীতিতে সব যেন মিলে মিশে এক।
নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় বিশ্বভ্রমণ-
২০১৪-র পর এবার ED-র স্ক্যানারে ২০১২-র TET-ও। মঙ্গলবার মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে আদালতে পেশ করে রিমান্ড লেটারে ED-র তরফে দাবি করা হয়েছে, ধৃত কুন্তল ঘোষের বয়ান থেকে জানা গেছে যে, ২০১২ এবং ২০১৪-র TET-এ বহু অযোগ্য প্রার্থীকে পাস করিয়ে দিয়ে, তাঁদের থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন শীল। গোটা বিষয়টা জানতেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এর পাশাপাশি, ED-র আইনজীবী এদিন আদালতে দাবি করেন, মানিক ভট্টাচার্য গোটা পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। কার্যত বিশ্বভ্রমণ করেছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে এক টাকাও খরচ হয়নি। মনে করা হচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা দিয়েই এই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন মানিক ভট্টাচার্য।
ED-র পাল্টা মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী বলেন, ২০১৪-র TET-এর বিষয়টা ED-র তদন্ত করার কথা। সেই মামলায় মানিক ভট্টাচার্য হেফাজতে রয়েছেন। এখন তারা TET ২০১২-র কথা বলছেন। যেটা সবে সামনে এসেছে। ED বলছে, কুন্তল এবং অয়ন ২০১২-র TET-এর পরীক্ষার্থীদের বেআইনিভাবে চাকরি দিয়েছেন। ED বলছে, যেহেতু অয়ন শীল গ্রেফতার হয়েছেন এবং নতুন তথ্য এসেছে, তাই নাকি মানিক ভট্টাচার্যর জামিন অনুমোদন হওয়া উচিত নয়। সেটা কীভাবে ?
এদিন আদালতে মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল কিছু বলতে চান। তখন বিচারক বলেন, আমরা সবাই আইনের ছাত্র। শুনেছি উনি আইন কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। উনি নিশ্চই জানেন, একবার আইনজীবী নিয়োগ করলে আর আদালতে নিজে বলা যায় না। কোর্টের ডেকোরাম তো জানা উচিত। আর্টিক্যাল ২১-এর জন্য হাইকোর্টে যেতে হয়।
তখন মানিক ভট্টাচার্য বলেন, একটি কথা বলতে চাই। এর বিরোধিতা করে ED-র আইনজীবী বলেন, ওঁর ভাই, হীরালাল ভট্টাচার্য।
অনেকগুলি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তাঁর (হীরালাল ভট্টাচার্য) নামেও অ্যাকাউন্ট আছে। উনি (হীরালাল ভট্টাচার্য) জানিয়েছেন যে, আমার দুর্ভাগ্য আমি মানিক ভট্টাচার্যর দাদা। জোর করে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল। একজন বাবার কর্তব্য তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে রক্ষা করা। মানিক ভট্টাচার্যর জন্য তাঁর স্ত্রী ও ছেলে জেলে রয়েছেন। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করছি।
শুনানি শেষে বিচারক মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আইন কলেজের প্রিন্সিপালকে বলে দেবেন আর্টিকল ২১-এর জন্য হাইকোর্ট যেতে।