RG Kar Case: নির্যাতিতার পরিবারকে টাকা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে টানাপোড়েন এবার, দুই ভিডিও, দুই রকম দাবি
RG Kar Victim Family: নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে তোলপাড় গোটা দেশ। পদে পদে প্রশ্নের মুখে পড়ছে পুলিশ ও প্রশাসন। সেই আবহে মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। মেয়ের দেহ ঘরে শায়িত থাকা অবস্থাতেই পুলিশ ঘরে ঢুকে টাকার প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ তাঁদের। সেই নিয়ে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। রাজ্যের দাবি, নির্যাতিতার পরিবারকে কোনও রকম টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের তরফে একটি ভিডিও-ও তুলে ধরেছে তারা, যাতে টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে বলতে শোনা গিয়েছে নির্যাতিতার মা-বাবাকে। অন্য দিকে, নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, জোর করে তাঁদের ওই কথা বলানো হয়েছিল। পরিবারের দাবি, পুলিশকে রাগালে বিচার পেতে দেরি হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। (RG Kar Case)
আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় টানাপোড়েন চরমে। এখনও লাগাতার রাস্তায় নেমে বিচার চাইছেন সাধারণ মানুষ। সেই আবহেই গতকাল বিস্ফোরক দাবি করেন নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। মেয়ের দেহ ঘরে শায়িত থাকা অবস্থাতেই, ডিসি নর্থ অন্য ঘরে তাঁদের টাকার প্রস্তাব দেন বলে দাবি করেন নির্যাতিতার মা-বাবা। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই দাবি অস্বীকার করেছে। (RG Kar Victim Family)
এদিন একটি ভিডিও প্রকাশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি জানান, নির্যাতিতার পরিবারকে কোনও রকম টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। নির্যাতিতার মা-বাবা সত্যটা জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। শশীর বক্তব্য, "গতকাল যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে, শোকাহত মা-বাবা...যাঁদের মনের অবস্থা আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। সেই সময় টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে এমন ভিডিও যাচ্ছে। আরও একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যাতে মা-বাবা জানালেন, মিথ্যে অভিযোগ। মেয়ে নেই, তার বিচার চান বললেন।"
এদিন যে ভিডিও তুলে ধরেন শশী, তাতে নির্যাতিতার মা-বাবাকে কথা বলতে দেখা যায়। টাকার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন করলে, তাঁদের বলতে শোনা যায়, "আমাদের এসব বলার কোনও দরকার নেই। এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। আমরা কাউকে কিছুই বলিনি। মিথ্যে গল্প বানিয়েছে। আমরা বিচার চাইছি। যাতে ন্যায় বিচার পাই, তার ব্যবস্থা করুন। নিজেদের প্রচারের জন্য কেউ কেউ মিথ্যে প্রচার করছেন।"
ওই ভিডিও তাঁদেরই, স্বীকার করে নিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। এবিপি আনন্দে তাঁরা জানান, টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে যে মন্তব্য করেছেন তাঁরা, তা বলতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। নির্যাতিতার বাবা বলেন, "৯ তারিখ রাতে টাকা দেওয়া হচ্ছিল, যখন মেয়ের দেহ দোতলায় শোয়ানো ছিল। রান্নাঘরের পাশে ছোট জায়গায় নিয়ে গিয়ে টাকার প্রস্তাব দেন ডিসি নর্থ। আমি বলি, আপনার কাঁধের আইপিএস লেখাটা পেতে যে কষ্ট হয়, আমার মেয়ে তার চেয়েও কষ্ট করে এই জায়গায় পৌঁছেছে। আপনি আমাকে টাকার লোভ দেখাচ্ছেন! আমাদের মর্মান্তিক লেগেছিল। কিন্তু পুলিশের তদন্তের ছিল যেহেতু, পর দিন ওই ভিডিওয় বলতে বাধ্য হয়েছিলাম আমরা।"
নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, ঘরেই ৯ তারিখ , ইউনিফর্ম পরে থাকাকালীন ডিসি নর্থ টাকার প্রস্তাব দেন তাঁদের। টাকার বান্ডিল ছিল তাঁর হাতে। তিনি বলেন, "ইউনিফর্ম পরে এসেছিলে। টাকা দেখেই দুঃখে বুক ফেটে যাচ্ছিল। টাকার বান্ডিল দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, 'কাজে লাগবে, টাকাটা রাখুন'।" যদিও টাকার বিনিময়ে কোনও শর্ত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা।
সুবর্ণ গোস্বামীই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন এবং ভিডিও-তে ওই কথা বলতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি নির্যাতিতার বাবার। ভিডিও-টি কে রেকর্ড করে, তা বলতে পারেননি নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁদের দাবি, পুলিশের লোকই করে থাকবে। নির্দিষ্ট করে মনে পড়ছে না তাঁদের। ওই সময় মনের অবস্থা ঠিক ছিল না। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন। গায়ে জ্বর ছিল। বসতে পারছিলেন না। তাও বলছিলেন। "পুলিশকে রাগালে বিচার পেতে কষ্ট হবে", এই কথাও বলা হয়েছিল বলে দাবি নির্যাতিতার বাবার। ভিডিও রেকর্ডিং করার সময় তিনি সোফায় বসেছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সিভিল ড্রেসে এসে ভিডিও রেকর্ডিং করা হয় বলে দাবি তাঁর।
তাঁর বক্তব্য, "প্রথম থেকেই আনাদের এত চাপে রেখেছে পুলিশ, কল্পনার বাইরে। আমার মেয়ে মারা গিয়েছে, তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টা আমাদের হেনস্থা করেছে।" নির্যাতিতার মায়ের দাবি, পুলিশের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে তাঁদের। সেমিনার হলটি তাঁদের সামনে সিল করতে বলা হয়, কিন্তু পর দিনই পাশের ঘরটি ভেঙে দেওয়া হয়। নির্যাতিতার বাবা জানান, তাঁরা যখন মেয়েকে দেখেছেন ৩.৩০-টের সময়, খোলা জায়গায় সাদা চাদরের ভিতর মেয়ে পড়েছিল। পরে চাদর বদল করা হয়। তাঁরা সবুজ চাদর দেখেছিলেন। কিন্তু পুলিশ বার বার অন্য দাবি করছে।