Enforcement Directorate: দিনমজুরদের নামে অ্য়াকাউন্ট খুলে লাখ লাখ টাকা লেনদেন শান্তনুর? বিস্ফোরক ইডি
ED-র দাবি, ৩০০ জনের তালিকাতেই শেষ নয়, আরও ২৬ জনের কাছ থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
প্রকাশ সিনহা ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: দিনমজুরদের নামে অ্য়াকাউন্ট। সেই অ্য়াকাউন্ট থেকে লাখ লাখ টাকা লেনদেন! অথচ তাঁরা এসবের কিছুই জানতেন না। অভিযোগ, এভাবেই নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতেন শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আদালতে বিস্ফোরক দাবি করেছে ইডি। শুধু তাই নয়, ইডির দাবি, ৩০০ জনের তালিকাতেই শেষ নয়, আরও ২৬ জনের কাছ থেকে চাকরি বিক্রির টাকা নিয়ছিলেন শান্তনু।
কথায় আছে লোভে পাপ, পাপে মৃত্য়ু, সবাই জানে! কিন্তু তবুও লোভ-লালসা থেকে অনেকেই দূরে থাকতে পারেন না! যেমন পারেননি শান্তনুরাও। রোজই তাঁদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্য়ে আসছে। ED-র দাবি, ৩০০ জনের তালিকাতেই শেষ নয়, আরও ২৬ জনের কাছ থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
এর আগে শান্তনুর বলাগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাওয়া গেছিল বলে ইডি-র তরফে দাবি করা হয়েছিল। বুধবার আদালতে ইডি দাবি করে, ওই ৩০০ জনের বাইরে অতিরিক্ত ২৬ জন চাকরিপ্রার্থীর খোঁজ মিলেছে। যাঁদের সঙ্গে শান্তনুর আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এঁদের কাছ থেকে শান্তনুর কাছে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা গেছে।
পুরোটাই অবৈধভাবে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে শান্তনু পেয়েছেন বলে ইডি-র আইনজীবীর দাবি। নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতে একের পর এক ফাঁদ তৈরি করেছিলেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা! গরিব-দিনমজুর মানুষগুলোকেও ছাড়েননি তিনি।
আদালতে, ED-র দাবি, এলাকার দিনমজুরদের ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্ট ব্য়বহার করতেন শান্তনু। নানা সময় তাঁদের বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দিতেন। এরপর দিনমজুরদের অজান্তেই ব্য়বহার করতেন তাঁদের ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্ট। কখনও আবার চেকবুকে সই করিয়ে নিয়ে যখন খুশি অ্য়াকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতেন।
সিপিএমের রাজ্য় সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, তৃণমূল যদি আগে জানত যে আরও টাকা আছে, তাহলে আরও বড় নেতা হতে পারত।
শুধু দিনমজুরদের অ্য়াকাউন্ট ব্য়বহার করা নয়, অভিযোগ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েও কালো টাকা সাদা করতেন শান্তনু। এক্ষেত্রে উঠে আসছে একটি কনস্ট্রাকশন এক সংস্থার নাম। ED-র আইনজীবীর দাবি, নিজে তৃণমূল নেতা ও হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার সুবাদে, ওই কোম্পানিকে বিভিন্ন সরকারি কাজের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন শান্তনু।
পরবর্তীকালে ওই কোম্পানির ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টেই রাখতেন নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা। ED সূত্রে দাবি, কালো টাকা সাদা করার জন্য ফান্ড রুট হিসেবে ব্যবহার করা হত সংস্থার ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টটিকে।
এই ভাবে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পৌঁছে যেত সুবিধাপ্রদানকারীদের কাছে। যদিও এ প্রসঙ্গে ক্য়ামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি শান্তনু। ১৭ মে পর্যন্ত শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ব্য়াঙ্কশাল আদালত।