Tea Garden at Howrah: আর ডেস্টিনেশন দার্জিলিং নয়, এবার বাড়ির পাশেই চা বাগান! কেনা যাবে ৭০ রকমের চা
Tea Garden at Howrah: শুধু পাহাড় নয় সমতলের জমিতেও চা চাষ সম্ভব। এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে দার্জিলিং এর আদলে তৈরি হয়েছে চা বাগান!

সুনীত হালদার, হাওড়া: চা বাগান মানেই তার পিছনে থাকবে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়। এটাই তো চিরকাল কল্পনা করে এসেছে মানুষ। দার্জিলিং যাওয়ার একটা আকর্ষণ যদি পাহাড় হয়, অন্য আকর্ষণ অবশ্যই চা বাগান। তবে এবার আর পাহাড় নয়, চা বাগানের দেখা মিলবে হাওড়াতেই!
শুধু পাহাড় নয় সমতলের জমিতেও চা চাষ সম্ভব। এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে দার্জিলিং এর আদলে তৈরি হয়েছে চা বাগান! 'দ্য গ্রেট বেনিয়ান ট্রি'-র উল্টোদিকে দেড় বিঘা জমিতে তৈরি করা হয়েছে ঢালু চা বাগান। আজ থেকে তা খুলে দেওয়া হলো সাধারণ দর্শকদের জন্য। শুধু তাই নয়, প্রকৃতি প্রেমিকরা এবার এখান থেকে কম দামে সংগ্রহ করতে পারবে ৭০ প্রজাতির গাছ। পরে তা বাড়ানো হবে।
আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু বোটানিক্যাল গার্ডেন। যার সংক্ষিপ্ত নাম শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই গার্ডেনের নতুন আকর্ষণ দার্জিলিংয়ের চা বাগান। পরীক্ষামূলকভাবে চা বাগান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে যাতে প্রতিকূল আবহাওয়ায় চা গাছ বাঁচতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়ছে। এর জন্য দার্জিলিং এর পাদদেশ এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই চা গাছের চারা এনে বাগানে রোপণ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সেগুলি বেড়ে উঠছে। কৃত্রিমভাবে গড়ে ওঠা এই চা বাগানের নান্দনিক সৌন্দর্য যাতে সাধারণ মানুষ উপভোগ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে শুক্রবার সাধারণ দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হল। এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার পদস্থ কর্তারা। এই গাছগুলি থেকে চা উৎপাদন শুরু হলে বোটানিক্যাল গার্ডেনের আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

১৮২৩ সালে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে চা উৎপাদন শুরু করেছিল ব্রিটিশরা। কর্তৃপক্ষ জানায় এখান থেকেই ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় চা গাছের চারা পাঠানো হয়েছিল। তাতে সাফল্যও মিলেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং পরিচর্যার অভাবে এই গার্ডেন থেকে চা চাষ হারিয়ে যায়। সম্প্রতি সেই পুরানো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চা বাগান গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয় কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দার্জিলিং এর পাদদেশ এবং ডুয়ার্সের কিছু এলাকা থেকে চা গাছের চারা নিয়ে এসে এখানে রোপণ করা হয়। চার থেকে পাঁচ রকম প্রজাতির চা চারা রোপণ করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে ৫০০ চারা বসালেও ২৫ শতাংশ শুকিয়ে যায়। তবে এখনকার আবহাওয়া এবং মাটি আলাদা হওয়ার কারণে প্রথম থেকেই চা চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি তৈরিতে নজর দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। চা চাষের জন্য দেড় বিঘা জমি ঢালু করা হয় যাতে জল না দাঁড়ায়। পাশাপাশি জমির অম্লতা কমানো হয়। এখানে রোপণ করা চা গাছে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে জল দেওয়ার জন্য অটো-স্প্রিঙ্কলার বসানো হয়েছে। এছাড়া বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা বিভাগ করা হয়েছে। এই বিষয়ে গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, প্রখর রোদেও ৭৫ শতাংশ গাছ প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠেছে। গাছের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে উপযুক্ত মাটি তৈরি করা হয়। ব্রিটিশ আমলে এখানে প্রথম চা চাষ করা হয়। পরে এখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় চা চারা পাঠানো হয়। এখানে চা চাষ সফল হলে ফিরে আসবে পুরনো স্মৃতি। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব নমিতা প্রসাদ বলেন চা উৎপাদন শুরু হলে গার্ডেনের আকর্ষণ আরও বাড়বে। এছাড়াও বাগানের কাউন্টার থেকে অল্প মূল্যে ৭০ প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি করা হবে। গাছে কিউআর কোড লাগানো থাকবে। যাতে বিরল প্রজাতির গাছ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।






















