শিবরাত্রির তিথিতে জন্ম, অরিন্দমের আবদারে বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন দাদু
আদি বাড়িতে ১৮০ বছরের পুরনো জগদ্ধাত্রী পুজো হত। সেসময় ঠাকুরের বায়না করতে যাওয়াটা একটা রীতি ছিল। এক বছর, দাদুর হাত ধরে ঠাকুরের বায়না দিতে যাচ্ছিলেন তিনি।
কলকাতা: আদি বাড়িতে ১৮০ বছরের পুরনো জগদ্ধাত্রী পুজো হত। সেসময় ঠাকুরের বায়না করতে যাওয়াটা একটা রীতি ছিল। এক বছর, দাদুর হাত ধরে ঠাকুরের বায়না দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। রাস্তায় ছোট্ট দুর্গাপ্রতিমা দেখতে পান তিনি। আবদার করেন, এটিই তাঁর চাই। নাতির কথা মনে রেখেছিলেন দাদু। পরের বছর, কাউকে কিছু না বলে, বাড়িতে প্রতিমা নিয়ে চলে আসেন তিনি। শুরু হয় দুর্গাপুজো। ছোটবেলার পুজোর গল্প বলতে গিয়ে টুকরো টুকরো স্মৃতি হাতড়ালেন পরিচালক অরিন্দম শীল।
শিবরাত্রির তিথিতে জন্ম হয়েছিল অরিন্দম শীলের। তাঁর বায়নাতেই শুরু হয় বাড়ির দুর্গাপুজো। পরিচালক বলছেন, 'আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়ে উঠেছি। প্রতিবছর দেখতাম, দুর্গাপুজোর আগে বাড়িতে আসতেন সমস্ত আত্মীয়রা। তাঁরা ফিরতেন একেবারে জগদ্ধাত্রী পুজোর পর। পুজোর বাজার করতেও যাওয়া হত দল বেঁধে। কিছু বাঁধা দোকান ছিল। এক দোকান থেকে মায়েদের শাড়ি কেনা হত। মফতলালের শো-রুমে গিয়ে থান কেনা হত। সেখান থেকে তৈরি হত জামা। আর ছিল পুজোর গান। বড় বাড়ির মাঝের উঠোনে গান চালানো হত। গোল হয়ে বসে শুনতেন সবাই। খাওয়া-দাওয়া, পুজোর ভোগের পরিকল্পনা, সব মিলিয়ে পুজোর আমেজটা শুরু হয়ে যেত অনেক আগে থেকেই। রেকর্ড প্লেয়ারের সঙ্গে চোঙা মাইক লাগানো হত। সকাল শুরু হত, বিসমিল্লা খানের সানাই দিয়ে।'
শীল বাড়ির পুজোয় বহু দূর থেকে মানুষ আসতেন। অরিন্দম বলছেন, 'পুজোর সময় যাঁরা আসবেন, তাঁরা কেউ খালি হতে ফিরবেন না। ভোগ খাবেন। ছোট থেকেই ভোগ দেওয়ার একটা গুরুদায়িত্ব ছিল আমার। পুজোর কয়েকটা দিন পড়াশোনা কম করতে হত। সেটা একটা অন্যরকম মজা ছিল। বাড়ির পুজো থেকে একটা জিনিস শিখেছি, সবাইকে নিয়ে বড় হয়ে ওঠা। কোভিড পরিস্থিতির পর এই বেঁধে বেঁধে থাকাটা যেন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও তাই। একা একা পথ চলে কোনও লাভ নেই।'