Durnibar Saha: 'চোখেমুখে যাদের অশিক্ষার ছাপ, তাদের থেকে দূরে থাকুন', রাস্তায় হেনস্থার শিকার হয়ে পোস্টে আর্জি দুর্নিবারের
Durnibar Saha Post: দুর্নিবার একটি ভিডিও পোস্ট করেন শনিবার বিকেলের দিকে। এদিনই দুপুর ৩টে নাগাদ এক সাংঘাতিক অভিজ্ঞতার শিকার তাঁরা, জানালেন দুর্নিবার। তিনি শারীরিক হেনস্থার শিকার বলে জানালেন।
কলকাতা: বাড়ি থেকে বেরিয়ে পোষ্যকে নিয়ে গ্রুমিং সেন্টার (Grooming Center) যাওয়ার পথে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার সস্ত্রীক সঙ্গীতশিল্পী দুর্নিবার সাহা (Durnibar Saha)। শিল্পীর কথায় যা 'অত্যন্ত অসভ্য ঘটনা'। ৯৯নং ওয়ার্ডে, নেতাজি নগর থানার অধীনে নাকতলার ভিতরের এক রাস্তার মোড়ের ঘটনা। ভিডিওয় সবটাই তুলে ধরেছেন তিনি। (Social Media Post)
রাস্তার শারীরিক হেনস্থার শিকার দুর্নিবার-ঐন্দ্রিলা, ভিডিওয় শোনালেন অভিজ্ঞতা, করলেন সতর্ক
দুর্নিবার একটি ভিডিও পোস্ট করেন শনিবার বিকেলের দিকে। এদিনই দুপুর ৩টে নাগাদ এক সাংঘাতিক অভিজ্ঞতার শিকার তাঁরা, জানালেন দুর্নিবার। তিনি জানাচ্ছেন সারমেয়কে নিয়ে গ্রুমিং সেন্টারে যাওয়ার পথে দেখেন রাস্তায় 'ভরদুপুরবেলা ৩টের সময়' কাজ হচ্ছে, 'যেটার কোনও মানে নেই', দাবি দুর্নিবারের। তিনি জানাচ্ছেন সেন্টারে পৌঁছনোর নির্দিষ্ট সময় থাকায় বারবার হর্ন বাজান তিনি, কিন্তু লাভ হয়নি।
দুর্নিবারের স্পষ্ট দাবি, 'কোথাও কোনও স্টপ সাইন, কোনও রোড ব্লক কোনও সাইন ছিল না। এটা কনট্রাক্টরের দায়িত্ব। তিনিও এই ঘটনাস্থলে ছিলেন না। ৫-৬ বার হর্ন বাজানোর পর আমি গাড়ির কাচ নামিয়ে বলি যে এই দুপুরবেলা রাস্তা ঠিক করার সময় নয়, আপনারা প্লিজ সরে যান গাড়িটা যেতে দিন। তাঁরা রীতিমতো তেড়ে আসেন। গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আঙুল তুলে, প্রচণ্ড উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকেন। আমি গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হই ওঁদের সঙ্গে কথা বলার জন্য।'
এরপরেই শারীরিক হেনস্থার দাবি দুর্নিবারের। গাড়ি থেকে নামার পরেই অভিযুক্ত ওই রাস্তা সারাইয়ের কর্মীরা শিল্পীর গলা চেপে ধরেন বলে অভিযোগ। দুর্নিবার গলায় দাগও দেখান ভিডিওয়। তিনি বলছেন, 'আমি আহত। আমার গলায় যথেষ্ট ব্যথা লেগেছে। আমি ঢোঁক গিলতে পারছি না ঠিক করে। আমার হাতের দাগও দেখতে পাবেন। নিজেকে রক্ষা করার জন্য যাঁরা আমাকে হেনস্থা করছিলেন তাঁদের একজনের গলা আমিও ধরি।' দুর্নিবার জানান একসঙ্গে ২-৩ জন মিলে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তার উল্টোদিকে নিয়ে যান। ক্ষুব্ধ দুর্নিবারের অভিযোগ, 'আমার পুরুষাঙ্গ জোরে চেপে ধরেছিলেন একজন। আমাকে নিগ্রহের চেষ্টা করছিলেন, যাতে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় আমার।'
এরপরে শিল্পীর স্ত্রী, মোহর গাড়ি থেকে নামলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন দুর্নিবার। তাঁর কথায়, 'কিন্তু মোহর যথেষ্ট সাহসী এবং ও বলে যে এই পরিস্থিতিতে পারলে আমার গায়ে হাত দিয়ে দেখান। তা সত্ত্বেও ওখানে থাকা এক ভদ্রলোকের স্ত্রী বা পরিচিতা কেউ দু'বার মোহরকে গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দেয়। মোহরের ব্যথাও লাগে।' স্বাভাবিকভাবেই লোকজন জড়ো হয়ে যায়। অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে হাতে গাছের ডাল নিয়ে তেড়ে আসার অভিযোগও করেন তিনি।
শারীরিকভাবে বিশেষ ক্ষতি না হলেও, এই ভিডিওয় তাঁরা স্পষ্ট করেন যে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত দুর্নিবার ও মোহর। নেতাজি নগর থানায় অভিযোগ জানাতে যাওয়ার পথে এই ভিডিও তৈরি করেছেন। দুর্নিবারের স্পষ্ট বার্তা, 'এই পরিস্থিতিতে রাস্তাঘাটের লোকজনের সঙ্গে আপনারা একটু সাবধানে কথা বলবেন। বিশেষ করে যাদের চোখেমুখে অশিক্ষার ছাপ আছে তাদের থেকে দূরে থাকবেন। সবচেয়ে বড় কথা, রাস্তাঘাটে যদি কাজকর্ম হয়, যেখানে লোকজন অসভ্যের মতো আচরণ করছেন, তাদের থেকে দূরে থাকুন, মুখে লাগবেন না, কথা বলবেন না।' গাড়ি চলাচল করে যে রাস্তায় সেখানে কাজ হলে নিশ্চিতভাবে কোনও বোর্ড লাগানো উচিত, কিন্তু তা না করে 'লোক ঠকানো' কাজের তীব্র প্রতিবাদ করেন শিল্পী।
তবে এর মধ্যেও এক বয়স্ক ভদ্রলোক বারবার মোহরকে গাড়িতে উঠে গিয়ে বসতে বলেন, তিনি কাঁদতে শুরু করে দেন বলে জানাচ্ছেন শিল্পীর স্ত্রী। মোহর বলছেন, 'এতকিছুর মধ্যেও কিছু ভাল মানুষ নিশ্চয়ই আছেন। বারবার উনি আমাকে হাতজোড় করে বলেন যে মা তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো।' কিন্তু এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে ফের এমন এক নিগ্রহের ঘটনা, উদ্বিগ্ন করেছে নেটিজেনদের।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।