কলকাতা: ভাজাভুজি, ফাস্টফুড খেতে অনেকেই ভালবাসেন। এদিকে গর্ভে অপেক্ষা করছে পরিবারের নবীন সদস্যটি। আর কিছুদিন পরেই সে পৃথিবীর আলো দেখতে চলেছে। এই অবস্থায় এমন ধরনের খাবার খাওয়া কতটা ঠিক? সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এরই হদিশ দিলেন তাদের গবেষণায়। এনভারনমেন্টাল ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে ওই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গর্ভবতীদের সম্ভাব্য বিপদের কথা তুলে ধরেছেন চিকিৎসকরা।


ফাস্টফুড কি গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায় ?


গবেষকদের কথায়, গর্ভাবস্থায় ফাস্টফুড খাওয়া উচিত নয়। তবে এর জন্য খাবারের কোনও উপাদানকে দায়ী করছে না এই গবেষণা। অর্থাৎ, খাবারের মধ্যে থাকা উপাদানের জন্য ক্ষতি হচ্ছে বলে জানাননি বিজ্ঞানীরা। তবে ক্ষতি করছে খাবারের মোড়ক। ফাস্টফুড অধিকাংশ সময়েই কিছু প্লাস্টিকের মোড়কে পরিবেশন করা হয়ে থাকে। কখনও কখনও সেই প্লাস্টিকগুলি খুব পাতলা র‌্যাপিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞদের কথায় এই প্লাস্টিকগুলিই ক্ষতি করছে শরীরের। কারণ এর মধ্যে থ্যালেটের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। 


থ্যালেট আদতে কী জিনিস ?


থ্যালেট একটি বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। এটি প্লাস্টিককে পোক্ত করে তোলে। তাই এদের প্লাস্টিসাইজারও বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। প্লাস্টিক উৎপাদন ছাড়াও থ্যালেট আরও বেশ কিছু কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন ভিনাইল ফ্লোরিং থেকে লুব্রিকেটিং তেল তৈরিতে। এছাড়াও, থ্যালেট দিয়ে আমাদের রোজকার ব্যবহারের প্রসাধনী দ্রব্যও তৈরি করা হয়।


থ্যালেট কেন বিপদের ?


থ্যালেট শরীরে প্রচুর পরিমাণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে। একই সঙ্গে এটি প্রদাহের কারণ। দেখা গিয়েছ, এটি গর্ভবতী মহিলার ভ্রুণের উপরেও প্রভাব ফেলে। এর আগেও থ্যালেট নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, এই রাসায়নিকের জেরে সন্তানের ওজন কম হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সময়ের আগে শিশুর জন্ম হচ্ছে। এর পিছনেও থ্যালেট দায়ী বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


থ্যালেট বিপদ ঘটায় ভবিষ্যতেরও 


থ্যালেট শুধু যে হবু মায়ের জন্য বিপজ্জনক, তা নয়। বরং শিশুদের ভবিষ্যতের জন্যও ক্ষতিকর। দেখা গিয়েছে,এই রাসায়নিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। এমনকি মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হল এডিএইচডি - অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার। এই মানসিক সমস্যাটির নেপথ্যেও থ্যালেট রয়েছে বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। আর ঠিক এই কারণেই মায়েদের ফাস্টফুড না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে সাম্প্রতিক গবেষণা।


আরও পড়ুন - Laziness Remedies: আলস্য কাটবে নিমেষে ! মাথায় রাখুন ৪ টিপস