কলকাতা: বসে বসে কাজ, পেশাগত জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য় রাখা নিয়ে সমস্যা। খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, এরকম একাধিক কারণে ইদানিং বিপদ বাড়াচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল। তার সঙ্গে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, অত্যধিক স্ট্রেস, জাঙ্ক ফুডের উপর ভরসা করাও ডেকে আনছে বিপদ। কোলেস্টেরল মানবদেহে প্রয়োজনীয়। কোষের মেমব্রেন বা ঝিল্লির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য় করে কোলেস্টেরল। কিন্তু পরিমিত মাত্রার চেয়ে বেড়ে গেলেই ডেকে আনে বিপদ। 


রক্তে পরিমিত মাত্রার চেয়ে বেশি কোলেস্টেরল (cholesterol) থাকলেই রক্তবাহী ধমনীর ক্ষতি করে। সেক্ষেত্রে রক্তচলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। হৃদযন্ত্রে নানা সমস্যাও তৈরি হয়, যা স্ট্রোক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও হতে পারে। এই বিপদ সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায় জীবনযাপনে বদল এনে। কিছু অভ্যাস এবং ডায়েটে বদল আনলেই সহজেই এড়ানো যাবে মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরলের বিপদ।     


ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া:
স্বাস্থ্যকর খাবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। স্যাটুরেটেড ফ্যাট (Saturated Fat) রয়েছে এমন খাবার খাওয়া উচিত না। যেমন অত্য়ধিক রেড মিট খাওয়া যাবে না। ট্রান্স-ফ্যাট রয়েছে এমন খাবারেও লাগাম পরানো উচিত। যেমন ভাজাভুজি বিশেষ করে ডিপ ফ্রাই কোনও খাবার। এর বদলে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এমন খাবার ডায়েটে যোগ করতে হবে।  কোলেস্টেরল যাতে বেশি মাত্রায় শরীর শোষণ না করতে পারে, তার জন্য বিনস, ওটস-জাতীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।  


ফল-সব্জিতে ভরসা:
মরসুমি ফল খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিনই কোনও না কোনও ফল খাওয়া প্রয়োজন। তার সঙ্গেই ডায়েটে রাখতে হবে শাকসব্জি। পাশাপাশি, ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। এসবে উপস্থিত ভিটামিন, মিনারেলস, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড (Omega 3 Fatty Acid) শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।  


নেশাদ্রব্য থেকে দূরে:
ধূমপানের অভ্যাস ছেড়ে দিলে এক লাফে অনেকটা কমে যায় হার্টের রোগের ঝুঁকি। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। রক্তচাপএবং হার্ট রেটও স্বাভাবিক থাকে ধূমপানের অভ্যাস ছাড়লে। মদ্যপানের অভ্যাসও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে অত্যধিক মদ্যপান। তাছাড়া, মদ্যপানের সময় যে ধরনের জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হয়ে থাকে সেটাও ক্ষতি করে। যা আদতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি অনেক বাড়়িয়ে দেয়। 


নিয়মিত শরীরচর্চা:
প্রতিদিন শরীরচর্চা করলে ভাল থাকে শরীর। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সবকিছুতেই সহায়ক এই অভ্যাস। ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম হোক বা হাঁটা, উপকার মেলে সবেতেই। শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলে ওবেসিটি থাবা বসাতে পারে না। যার ফলে দূরে থাকে অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল-সহ আরও একাধিক সমস্যা।  


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।

আরও পড়ুন: ক্যান্সারের ঝুঁকি কার কতটা আগে থেকে বলা যায়?