কলকাতা: ওষুধ খাওয়া হচ্ছে। কিন্তু আদতে কোনও কাজ হচ্ছে না। অর্থাৎ ড্রাগ রেসিসটেন্স। শরীরের মধ্যে যে ব্যাকটেরিয়া থাকে সেগুলিকে ঠিকমতো নির্মূল না করলে তা বেঁচে ওঠে। ওষুধের সঙ্গে লড়ার শক্তি পায়‌। অর্থাৎ বেঁচে থাকার কায়দাটা শিখে ফেলে। এতে পরে যখন একই ওষুধ খাওয়া হয়, তখন আর কাজ করে না সেটি‌। কারণ ততদিনে ওষুধটির সঙ্গে লড়াই করার কায়দাকানুন দিব্যি শিখে ফেলেছে ব্যাকটেরিয়াগুলি। 


ওষুধ নিয়ে সাম্প্রতিক নির্দেশিকা


সম্প্রতি ওষুধ নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র। ড্রাগ রেসিস্টেনস ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর ফলে কাজ করছে না ওষুধ। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের ওষুধ দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে বলা হয়। গ্যাসের ওষুধ, প্যারাসিটামলের মতো ওভার দ্য কাউন্টার মেডিসিন দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। কিন্তু আদতে দেখা গেল সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে।  সম্প্রতি এক গবেষণা তাই বলছে।


কী বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা?


একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, হাসপাতালের সিঙ্কেই এমন ব্যাকটেরিয়া সংখ্যায় বাড়ছে। একটি হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করেন গবেষকরা। তখনই এমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি।‌


হাসপাতালের সিঙ্ক থেকে ছড়াচ্ছে রোগ


২০১৭ সালে তোহো ইউনিভার্সিটি ওমরি মেডিকেল সেন্টারে একটি কার্বামেনেপেস প্রডিউসিং এনটেরোব্যাকটেরালস (সিপিই) সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া যায়‌। ২০১৬ সালে একটি এক বছর বয়সি শিশুর মধ্যে হার্টের রোগ দেখা দেয়। যার নেপথ্যে ছিল এই ব্যাকটেরিয়া। এর নয় মাস ২০১৭ সালে একটি ১৫ বছরের ছেলে এই সুপারবাগের সংক্রমণে সংক্রমিত হয়। এর পর একে একে ১৯ জন শিশুর মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল।


ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও…


এর পর হাইড্রোজেন পারক্সাইডসহ নানা রাসায়নিকের সাহায্যে হাসপাতাল সাফ করা শুরু হয়। কিন্তু তাতেও আটকানো যায়নি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। পরে বিজ্ঞানীরা ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএপরীক্ষা করে দেখেন। তাতে দেখা যায়, ড্রাগ রেসিস্টেন্সের চিহ্ন।‌ যা এক ব্যাকটেরিয়া থেকে তার পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর সে কারণেই সংক্রমণ বাগে আনতে বেগ পাচ্ছেন হাসপাতাল কর্মীরা। 


কী পরামর্শ বিজ্ঞানীদের


অবশেষে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। বেশ কয়েকটি  ব্যবস্থা অবলম্বনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। নিয়মিত হাত ডিসইনফেক্ট করা, জল পরিবহন ব্যবস্থার দিকে কড়া নজর রাখা, হাসপাতালের সিঙ্ক যাতে পরিস্কার থাকে সেদিকে নজর রাখার মতো পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের কথায়, নালা ও জল পরিবহনের লাইন দিয়েই ছড়িয়ে পড়তে পারে ব্যাকটেরিয়া। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।


আপনার পছন্দের খবর এবার হোয়াটসঅ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন - Health Update: প্রিয় সামুদ্রিক খাবারে 'ফরেভার কেমিকাল', কী এটি, কেন বিপদের ?