কলকাতা: হাঁটতে গেলে সমস্যা। হাঁটু ব্যথা। কোমরের জোর কমে আসা। বয়স হলে এমন নানা সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা একটু আগে থেকেই জানান দিতে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলি হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার সমস্যা। যা থেকে ভবিষ্যতে নানা রোগ হতে পারে। অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওআর্থারাইটিস-এমন নানা রোগের কথা ইদানিং শোনা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কম বয়স থেকেই ঠিকমতো খেয়াল রাখলে অনেকটা সময় পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা যায় হাড়ের ক্ষয়।  

  


অস্টিওপোরোসিস কী?
এটি হাড়ের ক্ষয় সংক্রান্ত একটি রোগ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হাড়ের কলা বা টিস্যু প্রতিনিয়ত ধ্বংস ও তৈরি হচ্ছে। পুরনো কলা ধ্বংস হয়ে,  নতুন তৈরি হচ্ছে, এর ফলে হাড় ঠিক থাকছে। বয়স বাড়লে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া স্লথ হতে থাকে। কিন্তু, যখন অস্টিওপোরোসিস হয় তখন এই ভারসাম্য দ্রুত নষ্ট হয়। নতুন টিস্যু তৈরির আগেই পুরনো টিস্যু ধ্বংস হয়ে যায়। যার ফলে হাড় ক্রমশ ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।  


ডায়েটে কী কী আছে, সব পোষক ঠিকমতো শরীরে যাচ্ছে কিনা তার উপর নির্ভর করে হাড়ের স্বাস্থ্য। শুধুমাত্র ক্যালশিয়ামে ভরপুর খাবার খেলে বা প্রচুর ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেলেই কাজ হয় না।


নানা ধরনের খাবার:
শুধু ক্যালসিয়াম নয়, বিভিন্ন ধরনের খাবার পাতে রাখতে হবে। নানা ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই খেতে হবে। কারণ এই দুটি হাড় ভাল রাখতে সাহায্য় করে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হাড় সুস্থ রাখতে ভিটামিন কে, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের ভূমিকা রয়েছে।


প্রয়োজন রোদ:
ত্বক রোদের সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি প্রস্তুত করে, যা হাড় শক্তিশালী করে। ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণে সাহায্য করে। এর ফলে পেশিও শক্তিশালী হয়। 


কোলাজেন:
হাড় এবং পেশির স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য কোলাজেন (Collagen)। এটি স্ট্রাকচারাল প্রোটিন। হাড়ের কলার তৈরি করতে অপরিহার্য। বাকি পোষকপদার্থগুলিকে একসঙ্গে রেখে হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল করতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ, মাংস এবং আরও কিছু খাবার থেকে প্রাকৃতিক ভাবে কোলাজেন মেলে।


শরীরচর্চা:
সুস্থ থাকতে গেলে যে কোনও শরীরচর্চা জরুরি। সাঁতার বা জগিং, ফুটবল খেলা বা জিম। সবেতেই উপকারিতা মেলে। পেশি এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য যেমন প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে বলা হয়। তেমনই হাড় ভাল রাখতে গেলেও প্রতিদিন ব্যায়াম বা শরীরচর্চা জরুরি।


লো ক্যালোরি খাবারে না:
ক্যালোরি খুব কম রয়েছে, এমন খাবার টানা খাওয়া যাবে না। অনেকসময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমন করে তাকেন অনেকে। কিন্তু তা দীর্ঘদিন ধরে করলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তার প্রভাব হাড়েও পড়বে। ঠান্ডাপানীয়ের পরিমাণও কমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
 
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: শীত পড়তেই বাতের ব্যথায় কাবু? সারিয়ে ফেলুন সহজ পাঁচ উপায়ে