কলকাতা: সারাদিন বসে বসে কাজ। কেউ কেউ ভাবেন, এতেই তো সুখ! কিন্তু কোনও কিছুই যে অতিরিক্ত ভাল নয়। তাই দীর্ঘ সময় বসে থাকলেও অনেক দুঃখ। সেই দুঃখ বড় বড় রোগের জন্য। হ্যাঁ, শুধু বসে থেকে থেকেই রোগ বাঁধিয়ে ফেলা যায়। ফোন বা ল্যাপটপে কাজ করলেও সেই একই বিপদ হতে পারে। সারা বিশ্বেই এখন বসে বসে কাজ বা ডেস্ক ওয়ার্কের সংখ্যা বাড়ছে। যত ডিজিটাল দুনিয়ার গতি বাড়ছে, তত বাড়ছে এই ধরনের কাজ। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানারকমের রোগ।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে কী কী রোগ হয় ?
- ওজন বাড়তে থাকে: ওজন দ্রুত হারে বাড়তে থাকে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে কোনও শরীরচর্চা করা হয় না। তাই অতিরিক্ত ক্যালোরি আমাদের শরীরে মেদের আকারে জমতে থাকে।
- কোমরে ব্যথা: অনেকক্ষণ ধরে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে থাকলে কোমরে ব্যথাও হয়। কোমর ধরে যায়। এমনকি পেশির এই ব্যথা এক-দুদিন থেকে যায়।
- নিতম্বে ব্যথা: আমাদের নিতম্বে ফ্লেক্সর পেশি থাকে। অনেকটা সময় বসে থাকলে এই পেশিগুলি সংকুচিত হয়ে যায়। এর ফলে হিপ জয়েন্টে ব্যথা হতে থাকে।
- পায়ের ব্যথা: অনেকটা সময় বসে বসে কাজ করার কারণে পায়ের পিছনের দিকে বড় পেশিগুলিতে ব্যথা হতে শুরু করে। এই ব্যথার কারণে হাঁটার উপরেও প্রভাব পড়ে।
- ঘাড়ের ব্যথা: স্পন্ডিলাইটিসের সমস্যা এখন বেড়েই চলেছে। তার অন্যতম কারণ এই বসে বসে কাজ করার প্রবণতা।
- হার্টের রোগ: দীর্ঘক্ষণ বসে বসে কাজ করলে হার্টের সমস্যাও হতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাঁদের থেকে বসে থেকে কাজ করিয়ে-দের হার্টের রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি।
- দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ: শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ বসে বসে কাজ করলে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ দুই-ই বাড়তে থাকে। এর প্রভাব ব্যক্তিগত জীবনেও পড়ে।
বসে বসে কাজ করলেও ভাল থাকা যায় !
বসে বসে কাজ করেও ভাল থাকা সম্ভব। তার জন্য রোজকার রুটিনে কিছু কাজ রাখতেই হবে।
- রোজ অন্তত একঘন্টা হাঁটাহাঁটি করুন। অথবা ব্রিস্ক ওয়াকিং বা জগিং করতে পারেন।
- এছাড়াও, সাইক্লিং একটা ভাল শরীরচর্চার কায়দা হতে পারে। সেটাই বেছে নিতে পারেন।
- লিফট বা এসক্যালেটরের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
- নিজের এলাকার মধ্যে কোথাও যেতে হলে বাইক বা গাড়ি নয়। হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে শরীরের অনেকটাই উপকার হবে।
- সারাদিন বাড়ি থেকে বেরনোর সুযোগ না পেলে বাড়িতেই ব্যায়াম করতে পারেন। অন্তত ৪০ মিনিট তার পিছনে খরচ করতে হবে।
- কাজের মাঝে মাঝে পাঁচ মিনিটের ছোট বিরতি নিন। বসা থেকে উঠে কিছুটা সময় হাঁটাহাঁটি করে আসুন।
ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন - Mobile Surfing: ফোন ঘেঁটেও দিব্যি ভাল থাকা যায়! সঠিক কায়দা জানলেই হবে