(Source: Poll of Polls)
Cyclone Yaas Update: ইয়াসের ধাক্কায় বিধ্বস্ত বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, ভিটে-মাটি হারিয়ে সহায় সম্বলহীন বহু মানুষ
কোলে সন্তান, মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশেহারা মা। ছেলেকে পিঠে নিয়ে, জল ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাবা।
হিন্দোল দে ও সুমন ঘরাই: ভরা কোটালের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উত্তাল হল বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জের সমুদ্র। জলের তোড়ে উল্টে গেল মাটি কাটার যন্ত্র। ভিটে-মাটি হারিয়ে সহায় সম্বলহীন বহু মানুষ। জলমগ্ন বহু এলাকা।
চেনা বকখালির, অচেনা সমুদ্র। বছরভর যে সমুদ্র শান্তই থাকে, ভরা কোটালের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে, সেই সমুদ্রেই উথালপাথাল। সমুদ্রের জল ঢুকে প্লাবিত বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফ্রেজারগঞ্জ থানার সামনে ভাসল মাটি কাটার পে-লোডার।
ভিটে-মাটি হারিয়ে সহায় সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে বহু মানুষ। কোলে সন্তান, মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশেহারা মা। ছেলেকে পিঠে নিয়ে, জল ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাবা। ঘূর্ণিঝড় আমফানের দুঃস্বপ্নের বছর ঘুরতেই, ফের সব হারানোর যন্ত্রণা ফিরে এল, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জের এই হত দরিদ্র মানুষগুলোর জীবনে।
নির্ধারিত সময়ের আগেই ওড়িশার বালেশ্বরে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবার, সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ডফল। ওড়িশার বালেশ্বর থেকে ৩১৭ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ। বালেশ্বরে যখন আছড়ে পড়ে ইয়াস, তার বহু আগে থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ফুঁসতে শুরু করে বকখালির সমুদ্র।
কোথাও বাঁধ টপকে, কোথায় বাঁধ ভেঙে হু হু করে সমুদ্রের জল ঢুকতে শুরু করে ফ্রেজারগঞ্জের গ্রামগুলিতে। মুহুর্তে জলমগ্ন হয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন হয়ে পড়ে বকখালির পাতিবুনিয়া। কালীস্থানে ভেঙেছে সমুদ্র বাঁধ। হুড়মুড়িয়ে গ্রামে ঢুকতে শুরু করে সমুদ্রের জল, ভেসে যায় সব কিছু।
রুদ্ররূপ সমুদ্রের। ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সব কিছু! তার মধ্যেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে জীবন বাঁচাতে বহু মানুষ আশ্রয় নেন নামখানা-বকখালি রাস্তার উপর।ঝড়-বৃষ্টি কিছু কমলে, গ্রামে ফিরে ধ্বংসস্তুপ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন বহু মানুষই।
এক সময় শান্ত হয় ঘূর্ণিঝড়। চেনা চেহারায় ফিরতে শুরু করে সমুদ্র। কিন্তু, এই হতদরিদ্র মানুষগুলোর জীবনে যে ঝড় বয়ে গেল, এই তছনছ হওয়া ঘরগুলি, সেই স্মৃতিই বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।