উত্তর কলকাতায় সিপিএম-এর ‘শ্রমজীবী বাজার’, ৬৫-র পেঁয়াজ ৪০ টাকায়, আলু ৩০-এ
আলু, পেঁয়াজ, পটল, ঝিঙে, বরবটি, কুমড়ো, টমেটো, বেগুন, ক্যাপসিকাম থেকে আদা, রসুন, লঙ্কা – সবই পাওয়া যাচ্ছে সিপিএম-এর ‘শ্রমজীবী বাজারে’।
কলকাতা: দক্ষিণে শ্রমজীবী ক্যান্টিন, উত্তের সিপিএম-এর শ্রমজীবী বাজার। বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে একেবারে অভিনব কায়দায় মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে জোড়াল প্রচারে কলকাতা জেলা সিপিএম। কুমোরটুলির কাছে রবীন্দ্র সরণীর উপর মদনমোহন তলার সামনে ‘শ্রমজীবী বাজার’ শুরু করেছে সিপিএম। ছাত্র-যুব-মহিলা-শ্রমিক সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে সপ্তাহে রোজ সকাল ৭টা থেকে ১১ পর্যন্ত বাজার বসাচ্ছে শ্যামপুকুর এরিয়া কমিটি (এক)।
আলু, পেঁয়াজ, পটল, ঝিঙে, বরবটি, কুমড়ো, টমেটো, বেগুন, ক্যাপসিকাম থেকে আদা, রসুন, লঙ্কা – সবই পাওয়া যাচ্ছে সিপিএম-এর ‘শ্রমজীবী বাজারে’। শুধু তাই নয়, বাজার দর থেকে কমেই নিত্য প্রয়োজনীয় সব্জি শ্রমজীবী মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন তাঁরা।
বাজারে যেখানে এক নম্বর পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে বিকোচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, সেখানে শ্রমজীবী বাজার তা দিচ্ছে মাত্র ৪০ টাকায়। বাজারে চন্দ্রমুখী আলু যেখানে প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে শ্রমজীবী বাজারে তা পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। ক্যাপসিকাম যেখানে কেজিতে দেড়শো টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে সেখানে সিপিএম তা বিক্রি করছে অর্ধেকেরও কমে। ৬০ টাকায় ১ কেজি ক্যাপসিকাম! এত সস্তা, কীভাবে?
সিপিএম নেতা শ্রীজীব গোস্বামীর কথায়, “সস্তায় সব্জি দেওয়া সম্ভব। ফোড়েদের দাপট আর দালালদের বাড়বাড়ন্ত বন্ধ করা গেলেই সর্বসাধারণের হাতে ন্যয্য মূল্যে সব্জি তুলে দেওয়া সম্ভব। সিপিএম তার সীমিত ক্ষমতায় পারলে রাজ্য সরকার কেন পারবে না?” চাষী থেকে ক্রেতা, এই দ্বিমুখী বিনিময়ের মধ্যে ফোড়ে ও দালাল, ‘যারা আসলে তৃণমূলের বাহুবলী’ তারা ঢুকে পড়েই সর্বনাশ ডেকে আনছে। এতে একদিকে চাষী যেমন তাঁর ফসলের সহায়ক মূল্য পাচ্ছে না, অন্যদিকে শ্রমীজীবী মানুষের হাতে আসতে আসতে সব্জির দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
আরও একধাপ এগিয়ে সিপিএম নেতা বলেন, “বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের সরকার যে কৃষি বিরোধী আইন নিয়ে এসেছে, তাতে চোর উঠে গিয়ে বড় ডাকাতদের আসার পথ প্রশস্থ হচ্ছে। কর্পোরেটদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে পুঁজিপতি অর্থনীতিকে আরও মজবুত করছে বিজেপি সরকার। সিপিএম প্রথম দিন থেকে তার বিরোধিতা করে আসছে এবং আগমীতেও করবে।” শ্রীজীব গোস্বামীর বক্তব্য, “এই শ্রমজীবী বাজার রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ। দোকানদারদে সস্তায় মাল দিতে পারলে যে ক্রেতাও সস্তায় ভোগ্য সামগ্রী পাবে, তা আমরাই দেখিয়ে দিচ্ছি।”