অশান্তি রুখতে ব্যর্থ সরকারের নজর ঘোরানোর চেষ্টা, পাল্টা রাজ্যপাল
কলকাতা: রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাতে নতুন মোড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হুমকির’ অভিযোগ এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জবাব দিলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।
রাজভবনের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে রাজ্যপাল বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন শিক্ষামন্ত্রী। আইনশৃঙ্খলা থেকে নজর ঘোরাতেই এই প্রয়াস।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজ্যপাল সাংবিধানিক পোস্ট। সংবিধান মেনে কাজ করতে হয়। আমি ইলেক্টেড বাই পিওপল। উনি নমিনেটেড বাই সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট।
এদিন কেশরীনাথ জানান, সাংবিধানিক দায়িত্ব-সীমাবদ্ধতা জানেন তিনি। কারুর কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্বাচিত, সেরকম রাজ্যপালও নির্বাচিত সরকারের দ্বারাই মনোনীত।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, মনে হচ্ছে বিজেপির ব্লক সভাপতি কথা বলছেন। বুধবার, রাজ্যপালকে আরও তীব্র আক্রমণ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বলেন, রাজভবন বিজেপির আস্তানা হয়ে গেছে। এক্তিয়ারের বাইরে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। তাঁর আচরণ বিজেপির ক্যাডারসুলভ।
রাজ্যপাল মনে করিয়ে দেন, রাজভবন রাজ্য সরকারের দফতর নয়। এখানে যে কেউ এসে তাঁর অভিযোগ জানাতে পারেন। তিনি যোগ করেন, রাজভবন শুধু বিজেপি-আরএসএসের নয়।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিলেন, রাজ্যপাল অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। অসম্মানিত বোধ করেছি। থ্রেট করেছেন ফোন করে।
এদিন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী অপমানিত বোধ করেন, হুমকি মনে করেন, এমন একটা শব্দও ব্যবহার করা হয়নি। তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মমতাকে আক্রমণ করলে দল ছেড়ে কথা বলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাতের কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
জবাবে রাজ্যপাল জানান, মানুষের আবেগকে ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা হচ্ছে। কারও কাছ থেকে অভিযোগ পেলে সেই অভিযোগপত্র ছিঁড়ে ওয়েস্টপেপার বাস্কেটে ফেলা হয় না। তা যথাযথভাবে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্যপাল বলেন, আমার দিকে অভিযোগের আঙুল না তুলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী। জাতপাত-ধর্মের উর্ধ্বে উঠে কাজ করুক সরকার।
--