চিংড়ির ব্যবসার আড়ালে ভাগাড়-মাংসের কারবার, জেরায় স্বীকার হিমঘর মালিকের, পচা মুরগিকাণ্ডের অভিযুক্তরা সম্ভবত বাংলাদেশে, দাবি পুলিশের
কলকাতা: ভাগাড়কাণ্ডে তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। রাজাবাজার হিমঘরকাণ্ডের ধৃত মালিককে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চিংড়ির ব্যবসার আড়ালে ভাগাড়-মাংসের কারবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজাবাজার হিমঘর থেকে প্রচুর রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ফর্ম্যালিন, লেড সালফেট, অ্যালুমিনিয়াম সালফেট। এদিন হিমঘরের মালিককে আদালতে পেশ করা হয়। ভাগাড় থেকে মাংস নিয়ে চলছিল চক্র। আলিপুর কোর্টে অভিযোগ সরকারি আইনজীবীর। তিনি জানান, বাজেয়াপ্ত কম্পিউটার খুলতে সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। বক্তব্য শুনে, ৮ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি, ভাগাড়কাণ্ড থেকে পচা মুরগিকাণ্ড-- হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। খাবার বিক্রেতাদের বৈধ রেজিস্ট্রেশন খতিয়ে দেখার দাবি তোলেন তিনি। পাশাপাশি, রেজিস্ট্রেশন না থাকলে কড়া পদক্ষেপের দাবিও করেন।
এদিকে, মুরগির পচা মাংসকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত কওসর আলি ঢালি ও রহুল ব্যাপারি এখনও অধরা। গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে দুজনের বাড়ি ও তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, বসিরহাট থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত কাছাকাছি হওয়ায়, দুই অভিযুক্ত বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, মাংসকাণ্ডে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশের হেফাজতে থাকা দুই অভিযুক্তকে জেরা করে পচা মাংস অনলাইনে বিক্রি হত কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ফেরার ২ অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা।
ভাগাড়কাণ্ডের জেরে শহরজুড়ে অভিযান কলকাতা পুরসভার। নামি রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে খাবারের ছোট স্টল, ফুটপাথের দোকান সর্বত্র অভিযান চালাচ্ছেন পুরকর্মীরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে খাবারের গুণমান। পুরসভার সদর দফতরের কাছে নিউ মার্কেট এলাকার বিভিন্ন খাবারের দোকানে মিলল শিল্পে ব্যবহারের বরফ ও বিষাক্ত রং। মেয়র পারিষদ স্বাস্থ্য অতীন ঘোষের দাবি, এটি পুরসভার রুটিন অভিযান। একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, ভেজাল বিক্রির জন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও আইনি সংস্থান নেই।
পচা মাংসে পুরসভার ভূমিকার প্রতিবাদে কলকাতায় কংগ্রেস-বিজেপির বিক্ষোভ। বিধান ভবন থেকে মৌলালি পদযাত্রা কংগ্রেসের। কলকাতা পুরসভার সামনে বিজেপির কর্মসূচিতে ধস্তাধস্তি, উত্তেজনা। অন্যদিকে বিধানভবন থেকে মৌলালি পর্যন্ত কংগ্রেসের মিছিল।