Madhya Pradesh News: ৩০৫ কোটি খরচে নির্মাণ, টোল আদায় ৬৫০ কোটি, বাইপাস ধসে ৩০ ফুট গভীর গর্ত, কৃষকদের দোষ দিচ্ছে মধ্যপ্রদেশ সরকার!
Bhopal Bypass: সোমবার ভোপাল বাইপাসের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে যায়।

ভোপাল: এক কোটি, দু’কোটি নয়, রাস্তা তৈরিতে খরচ হয়েছিল ৩০৫ কোটি টাকা। ১২ বছরে টোল বাবদ আদায় হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সেই রাস্তা ধসে যাওয়ার দায় চাপল কৃষকদের ঘাড়ে। ভোপাল বাইপাসে ধসে যাওয়ার জন্য সরাসরি কৃষকদের দায়ী করেছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার। যদিও রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি এবং রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। (Madhya Pradesh News)
সোমবার ভোপাল বাইপাসের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে যায়। রাস্তার মাঝখানে ৩০ ফুট গভীর গহ্বরের সৃষ্টি হয়। সেই নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছে মোহন যাদবের সরকার, যাতে রাস্তার ওই অবস্থার জন্য কৃষকদের দায়ী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দেওয়াল সংলগ্ন জায়গায় চাষবাসের কাজে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করেন কৃষকরা। সেই কারণেই এমন দশা হয়েছে রাস্তার। (Madhya Pradesh News)
যদিও ওই যুক্তি ধোপে টিকছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাইপাস থেকে জল বেরনোর উপায় ছিল না। বৃষ্টি হলেই জল জমে থাকত। দীর্ঘ দিন ধরে এমন চলে আসছিল। রক্ষণাবেক্ষণও হতো না। তার দরুণই বিপর্যয় ঘটেছে। ভোপাল ইস্টার্ন বাইপাসের যে অংশ ধসে গিয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই অংশ দিয়েই জবলপুর, জয়পুর, মান্ডলা, সাগর, ইন্দৌর, হোসঙ্গাবাদ যেতে হয়। ফলে সাধারণ মানুষও বিপদে পড়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে ভোপাল বাইপাসের নির্মাণ সম্পন্ন হয়। সেই সময় বরাত ছিল M/s Transtroy Pvt Ltd-এর হাতে। ২০২০ সালে তাদের সেই বরাত বাতিল করা হয়। এর পর আর কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছিল না। কোথাও ভাঙলে, গর্ত হলে রাজ্য সড়ক উন্নয়ন বিভাগের তরফে ঠিকে সংস্থাকে দিয়ে জোড়াতাপ্পি দেওয়ানো হতো।
শুধু তাই নয়, একাধিক অনিয়মের অভিযোগও সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে-
১) রাস্তা তৈরির সামনে গোড়াতেই যে নুড়ি-কাঁকর দিয়ে ভরাট করতে হয়, তা না দিয়ে মোরাম ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ফলে রাস্তার ভিত্তিই মজবুত হয়নি।
২) মাত্র ১২-২০ সেন্টিমিটার পিচ ফেলা হয়েছিল। অথচ সাধারণক্ষেত্রে ২০-২৫ সেন্টিমিটার পিচের আস্তরণ থাকে। পিচের নীচের মাটিও ভেজা ছিল, হাত দিয়ে চাপ দিলেই ভেঙে যাচ্ছে।
৩) সেতুর পাশে যে দেওয়াল তুলেছে রাজ্য সড়ক উন্নয়ন বিভাগ, তা ত্রুটিপূর্ণ ছিল। ৫০ ফুট দেওয়াল তোলার ক্ষেত্রে আড়াআড়ি যে ঢাল তৈরি করতে হয়, তা ছিল না। মাটি ধরে রাথার উপযুক্তই ছিল না ওই দেওয়াল।
৪) চাষের জমি, পুকুর সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতা দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে বাইপাস। অথচ জল বেরনোর ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বৃষ্টির জল জমে জমেই মাটি আলগা হয়ে যায়। বসে যায় রাস্তা।
৫) রাস্তায় ফাটল ধরত প্রায়শই। বৃষ্টি হলে আরও খারাপ হতো পরিস্থিতি। কিন্তু ভ্রূক্ষেপ ছিল না কারও।
রাস্তার গুণমান নিয়ে এর আগে বিক্ষোভও হয়েছে এলাকায়। ২০১৩ সালেই দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। কংগ্রেসের গ্রামীণ জেলা সভাপতি আনোখি পটেল জানিয়েছেন, মোরাম ফেলার সময়ই প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু কথা কানে তোলেনি সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান ভোপালের রাস্তাকে আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করতেন। এখন এই অবস্থার দায় তিনি নেবেন কি না, প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। ওই ১০০ মিটার অংশ ছাড়াও, বাইপাসের অন্য অংশের অবস্থাও খারাপ বলে দাবি স্থানীয়দের।






















