Parth Pawar: মহারাষ্ট্রে জমি দুর্নীতি? ১৮০০ কোটির সরকারি সম্পত্তি ৩০০ কোটিতে বিক্রি, স্ট্যাম্প ডিউটি মাত্র ৫০০ টাকার, নাম জড়াল উপমুখ্যমন্ত্রীর ছেলের
Maharashtra Land Deal Corruption: ৭০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে একসময় নাম জড়িয়েছিল খোদ অজিতের।

মুম্বই: দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের ছেলের বিরুদ্ধে নামমাত্র দামে সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। সেই নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই ছেলেকে আড়াল করতে এগিয়ে এলেন খোদ অজিত। তাঁর দাবি, যে জমি ঘিরে বিতর্ক, সেটি সরকারি জমি বলে জানতেন না তাঁঁর ছেলে। চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলেও দাবি করলেন। কিন্তু বিতর্ক থামছে না। কারণ ৭০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে একসময় নাম জড়িয়েছিল খোদ অজিতের। সেই মামলা থেকে রেহাই পেতেই তিনি কাকা সুপ্রিমো শরদ পওয়ারের হাত ছেড়ে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েন বলে অভিযোগ ওঠে। এবার তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ। (Maharashtra Land Deal Corruption)
অজিতের ছেলে পার্থ পওয়ারের বিরুদ্ধে নামমাত্র দামে সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে সম্প্রতি। সম্প্রতি ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশনের তরফে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট পেশ করা হয়, যাতে ১৮০০ কোটি টাকার সরকারি জমি নামমাত্র দামে হস্তান্তরণের দাবি ওঠে। জানা যায়, পুণের মুন্ধওয়ায় মহারাষ্ট্র সরকারের ৪৩ একর একটি জমির দাম ১৮০০ কোটি টাকা। অথচ ওই জমি মাত্র ৩০০ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়েছে Amedia Enterprises LLP সংস্থাকে, যে সংস্থার অন্যতম পার্টনার অজিতের ছেলে পার্থ। জমিটি প্রথমে Botanical Survey-কে ১৫ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, বার্ষিক ১ টাকা হারে সেই ইজারার মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত ৫০ হাজার বছরের বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। ওই জমিটি নিম্নবর্গের মাহার সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিতও ছিল। অর্থাৎ জমিটির উপর সরকারি মালিকানাই প্রতিষ্ঠিত ছিল। সরকারি অনুমতি ছাড়া বিক্রি করা অসম্ভব। (Parth Pawar)
কিন্তু মুম্বইয়ের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের কাছে জমা পড়া ওই রিপোর্টে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়। জানানো হয়, সরকারি ওই জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে রীতিমতো রেজিস্ট্রি করে, যাতে স্ট্যাম্প ডিউটি লেগেছে মাত্র ৫০০ টাকা, বাজারমূল্য অনুযায়ী যা ২১ কোটি টাকা হওয়ার কথা। স্ট্যাম্প ডিউিটতে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হলেও, সব মিলিয়ে ৬ কোটি টাকা দিতে হতো। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার দু’দিন পর স্ট্যাম্প ডিউটি মাফ করে দেওয়ার নির্দেশ আসে। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের ক্ষতি করে ওই জমি বিক্রির চুক্তি হয়েছে। জানা যায়, জমি বিক্রির চুক্তিপত্রে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি হিসেবে নাম রয়েছে শীতল তেজওয়ানির, যিনি ২৭২ জন এবং Amedia Enterprises LLP-র হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন, যে সংস্থা ওই জায়গায় ডেটা সেন্টার গড়তে আগ্রহী। সরকারের তরফে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট ছাড়াই জমি বিক্রি হল কী করে, ওঠে প্রশ্ন।
বিষয়টি সামনে আসার পরই এক আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়। মুখ্য়মন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন, যার জন্য বিশেষ তদন্ত কমিটি গড়ে আট দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। অপরাধ প্রমাণিত হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে জানান ফড়নবীস। কিন্তু তদন্তে Amedia Enterprises LLP-র নাম থাকলেও, পার্থর পার্টনার দিগ্বিজয় পাটিলের নাম থাকলেও, FIR-এ কোথাও অজিতপুত্র পার্থর উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সেই নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে, শনিবার অজিত ছেলের হয়ে কৈফেয়ত দিতে এগিয়ে আসেন। তাঁর বক্তব্য, “পার্থ এবং ওর সহযোগীরা জানত না ওটি সরকারি জমি। রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে, কোনও টাকা হাতবদল হয়নি”। এই চুক্তির সঙ্গে তাঁর কোনও সংযোগ নেই বলেও জানান অজিত।
তবে শেষ পর্যন্ত চুক্তি বাতিলের ঘোষণা করা হলেও, বিপাকে পড়েই অজিতপুত্রকে পিছু হঠতে হয়েছে বলে মনে করছেন বিরোধীরা। অজিতের কাকা, NCP সুপ্রিমো শরদও এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলেছেন, অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। ওঁর উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্যাসত্য তুলে ধরা সকলের সামনে।”
NCP-কে ভেঙে বিজেপি ও শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে)-র সঙ্গে হাত মিলিয়েই মহারাষ্ট্রের ‘মহা বিকাশ আঘাডি’ সরকার ভেঙে দেন অজিত। বর্তমানে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তিনি। সেই থেকে কাকা-ভাইপোর মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে। শরদ জানিয়েছেন, তাঁরা একই পরিবারের সদস্য হলেও, আদর্শগত ভাবে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছেন।























