ডেঙ্গিতে মৃত্যু ৭ বছরের শিশুর, হাসপাতাল বিল ধরাল ১৮ লাখ টাকার, তদন্তে হরিয়ানা সরকার
গুরুগ্রাম ও চণ্ডীগড়: ডেঙ্গির চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সে। বাঁচেনি ৭ বছরের মেয়েটি। ১৫ দিনে ২৭০০ গ্লাভস আর ৫০০ সিরিঞ্জের খরচ দেখিয়ে হাসপাতাল তার বাবা মাকে বিল ধরিয়েছে ১৮ লাখ টাকার। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই খবর প্রকাশিত হতে তা পৌঁছয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে। দিল্লির নির্দেশে ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিয়ানা সরকার।
যমজ দুই বোনের মধ্যে আদ্যা ছিল একটু বড়। ২ মাস আগে ডেঙ্গি হয় তার। তাকে ভর্তি করা হয় দ্বারকার এক বেসরকারি হাসপাতালে। পঞ্চম দিনে বাবা মা তাকে নিয়ে আসেন গুরুগ্রামের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযোগ, তাঁদের কোনও কিছু না জানিয়ে পরদিনই আদ্যাকে ভেন্টিলেটরে দিয়ে দেয় হাসপাতাল।
এরপর তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। মস্তিষ্ক থেকে কিডনি- গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গ আক্রান্ত হয় ডেঙ্গিতে। হাসপাতাল শুধু ওষুধের বিলই ধরিয়েছে ৪ লাখ টাকার। শিশুটির ৭০ শতাংশ মস্তিষ্ক ড্যামেজ হয়ে গেলেও হাসপাতাল বলে গোটা শরীরে প্লাজমা ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে, যার খরচ ১৫-২০ লাখ টাকা। তার বাবা মা জিজ্ঞেস করেন, সন্তানের বাঁচার সম্ভাবনা নেই তা পরিষ্কার, তাহলে এই প্লাজমা ট্রান্সপ্ল্যান্টের যৌক্তিকতা কী। অভিযোগ, হাসপাতাল নাকি দাবি করে, মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গেলেও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এর ফলে কাজ শুরু করতে পারে।
শিশুটির মা দীপ্তির অভিযোগ, মৃত্যুর পর তাঁর মেয়েকে যে কাপড়ে ঢেকে দেয় হাসপাতাল, বিলে তার দামও ধরে নিয়েছে তারা।
হাসপাতাল অবশ্য বলছে, আদ্যার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল, সে ব্যাপারে জানানো হয় তার পরিবারকে। সমস্ত নিয়মকানুন, প্রটোকল মেনেই তার চিকিৎসা হয়েছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর এ ব্যাপারে টুইট করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চান।
[embed]https://twitter.com/rajeev_mp/status/932444989354786816?ref_src=twsrc%5Etfw&ref_url=http%3A%2F%2Fabpnews.abplive.in%2Findia-news%2Ffortis-hospital-charges-rs-18-lakh-from-family-of-dengue-patient-who-died-727967[/embed]এরপরই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। সেইমতো, হরিয়ানা সরকারের থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান। একইসঙ্গে, রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন গোটা বিষয়টি অবিলম্বে তদন্ত করে দেখতে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ পেয়ে পদক্ষেপ নেয় রাজ্য প্রশাসন। হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ জানান, শীর্ষ আধিকারিক এই বিষয়টি তদন্ত করছেন। তিনি জানান, ওই আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত রিপোর্ট জমা করতে, যাতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা যায়। ভিজ বলেন, রাজ্যের কোনও হাসপাতালকে জনস্বাস্থ্য ও মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে খেলা করতে পারে না।