এক্সপ্লোর
Advertisement
প্রধান বিচারপতির তিরস্কার চেয়ে উপরাষ্ট্রপতিকে নোটিস রাজ্যসভার ৬০ এর বেশি এমপি-র, ইমপিচমেন্টকে রাজনীতির অস্ত্র করছে কংগ্রেস, পাল্টা জেটলি
নয়াদিল্লি: # বিরোধীদের উদ্যোগের পাল্টা আসরে নেমে শাসক দলের তরফে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অভিযোগ করলেন, কংগ্রেস, তার বন্ধুরা ইমপিচমেন্টের গুরুত্বকে খাটো করে তাকে রাজনীতির হাতিয়ার করছে। এটা বিপজ্জনক ব্যাপার।
# এক ফেসবুক পোস্টে জেটলি আরও বলেন, ইমপিচমেন্টের নোটিসের মাধ্যমে একজন বিচারপতিকে ভয় দেখানো হচ্ছে, অন্য বিচারপতিদেরও বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, আপনি আমাদের দলে না থাকলে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে ৫০ জন এমপিই যথেষ্ট।
গতকাল বিচারক লোয়া মৃত্যু মামলার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বিরোধীরা জনজীবনে, রাজনীতির আঙিনায় মিথ্যাকে পুঁজি করে প্রোপাগান্ডা চালানোর যে চক্রান্ত করেছে, তা উন্মোচিত করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের রায়।
# আগে কখনও রাজনীতির লোকজন, গুটিকয়েক অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, আইনজীবীকে এত খোলাখুলি, নগ্ন ভাবে মিথ্যাচারে সামিল হতে দেখা যায়নি। তাঁরা জনসমক্ষে প্রায় চক্রান্তকারী প্রতিপন্ন হচ্ছেন।
বিরোধীদের দাবি ছিল, বিচারক লোয়া যে সোহরাবুদ্দিন মামলার শুনানি করছিলেন, তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সেই মামলার যোগসূত্র রয়েছে। ঘটনা হল, ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। যদিও তিনি পরে খালাস পান। বিচারক লোয়ার মৃত্যুতে বিরোধীদের নিশানা হন তিনি।
# জেটলি বলেন, সোহরাবুদ্দিন মামলায় অমিত শাহের কোনও ভূমিকাই ছিল না। রাজ্য পুলিশের মাধ্যমে কয়েকটি কেন্দ্রীয় এজেন্সির চালানো এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল সোহরাবুদ্দিন।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের ইমপিচমেন্ট চেয়ে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভা চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডুকে নোটিস দিল বিরোধী দলগুলি। সূত্রের খবর, সাতটি বিরোধী দলের ৬০ জনের বেশি রাজ্যসভা এমপি কংগ্রেসের নেতৃত্বে ওই নোটিস দিয়েছেন। কংগ্রেস ছাড়াও নোটিসে সই করেছেন এনসিপি, সিপিআই, সিপিএম, সপা, বসপা সাংসদরা।
এদিন সংসদে নিজেদের মধ্যে একপ্রস্থ আলোচনা করে ইমপিচমেন্ট নোটিসে চূড়ান্ত রূপ দেন তাঁরা। বৈঠকের পর বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ সাংবাদিকদের নোটিস দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে চলেছেন বলে জানান। বৈঠকে আজাদ ছাড়াও কংগ্রেসের কপিল সিবল, রণদীপ সুরজেওয়ালা, সিপিআইয়ের ডি রাজা ও এনসিপির বন্দনা চবন ছিলেন।
গোড়ায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করার উদ্যোগে সামিল হলেও তা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস ও ডিএমকে সরে এসেছে বলে সূত্রের খবর। এই দুই দল আজকের নোটিস দেওয়ার উদ্যোগে সামিল হয়নি।
সাংবাদিক সম্মেলনে আজাদ বলেন, ৫টি অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণের অভিযোগে তাঁরা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া চান। উনি যেভাবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন, বিশেষ কয়েকটি মামলা যেভাবে বিবেচনা করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ, ওনার আচরণ সাংবিধানিক রীতিনীতি ভেঙেছে। একইসঙ্গে কংগ্রেস নেতাটি জানান, প্রথমে ইমপিচমেন্ট নোটিসে ৭১ সাংসদ সই করলেও ৭ জন পরে পিছিয়ে আসেন।
আরেক কংগ্রেস নেতা কপিল সিবলের বক্তব্য, প্রধান বিচারপতির আচরণের প্রতি ইঙ্গিত করে অন্য বিচারপতিরা যখন মনে করছেন যে, বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বিপন্ন হতে বসেছে, তখন আমরা কি চুপ করে থাকব, কিছু করব না? অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়েই তাঁরা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট নোটিস দিচ্ছেন বলে জানান সিবল। বলেন, জনতার প্রতিনিধি হিসাবে আমরা যেমন তাঁদের কাছে দায়বদ্ধ, ঠিক সেভাবেই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার ক্ষমতাও আমাদের আছে। আইনের মাহাত্ম্য যে কোনও পদের গরিমার চেয়েও বড়।
প্রসঙ্গত, সোহরাবুদ্দিন শেখ সংঘর্ষ মামলার শুনানি করা বিচারক বি এইচ লোয়ার মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে পেশ করা একগুচ্ছ পিটিশন গতকালই খারিজ করেছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। পরদিনই বিরোধীরা নোটিস দিল তাঁর ইমপিচমেন্ট চেয়ে।
রাজ্যসভায় ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনতে গেলে কম করে ৫০ জন এমপি-র সমর্থন চাই। লোকসভায় প্রয়োজন ১০০ সাংসদের সম্মতি।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে ইমপিচমেন্ট নোটিস জমা পড়লে তিনি এর পিছনে যুক্তি বা সারবত্তা আছে কিনা, সেটা ঠিক করবেন। তিনি যদি মনে করেন, নোটিসের ভিত্তি আছে, তবে তিনি একটি কমিটি তৈরি করতে পারেন অথবা নোটিসটি প্রত্যাখ্যান করবেন।
এক্ষেত্রে বিরোধীদের এদিনের নোটিসটি গৃহীত হলে এই প্রথম ভারতের ইতিহাসে কোনও প্রধান বিচারপতি ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হবেন।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
আন্তর্জাতিক
ক্রিকেট
জেলার
Advertisement