গরিবের জীবনের মান বাড়াতে অস্ত্র নোট বাতিল, জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে সওয়াল মোদীর
নয়াদিল্লি: নোট বাতিলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। দেশব্যাপী মানুষের দুর্ভোগের অভিযোগও সমানে উঠছে। কিন্তু নির্বিকার নরেন্দ্র মোদী। শনিবার বিজেপির দুদিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষদিনে তিনি নোট বাতিলের সমর্থনে গরিব-দরদী বার্তা দিয়ে দাবি করেন, তাঁর সরকারের মূল নজর রয়েছে তাঁদের দিকেই। তাঁদের জীবনযাত্রার মান বাড়াতেই কালো টাকা ও দুর্নীতি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি হাতিয়ার নোট বাতিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র সেবাই ভগবানের সেবা। তিনি ক্ষমতার জন্য লালায়িত নন, স্বর্গে যেতে চান না বা পুনর্জন্মও প্রত্যাশা করেন না, শুধু চান মানুষের যন্ত্রণা লাঘব করতে, এমনই দাবি করেন তিনি।
এদিন ফের নির্বাচনী সংস্কারের হয়ে সওয়াল করে এ ব্যাপারে সব দলের মধ্যে ঐকমত্যের ওপর জোর দেন মোদী। বলেন, নোট বাতিল ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও বেশি আর্থিক স্বচ্ছতা আসবে। রাজনৈতিক দলগুলির তহবিল সংগ্রহেও স্বচ্ছতা আনার ব্যাপারে বিজেপি মুখ্য ভূমিকা পালন করতে চায়। কোথা থেকে আমরা টাকা পয়সা পাচ্ছি, তহবিল সংগ্রহ করছি, তা জানার অধিকার আছে মানুষের।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, উত্তরপ্রদেশ সহ ৫ রাজ্যের ভোটে বিজেপির জয় হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মোদী। ভোটে পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে বলে মন্তব্য করেন। দলীয় কর্মীদের বুথ স্তরে জোর দিতে হবে বলে জানিয়ে মোদী বলেন, তাঁরা যত বেশি পরিশ্রম করবেন, দল তত বেশি সাফল্য পাবে।
প্রসাদ জানান, মোদীর প্রায় ৫০ মিনিটের ভাষণে ঘুরেফিরে আসে গরিবদের প্রসঙ্গ। মোদী বলেন, গরিবরা এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত (নোট বাতিল) স্বাগত জানিয়েছেন। দুর্নীতি সহ সামাজিক গলদ দূর করতে এটি উপযোগী পদক্ষেপ বলেই গ্রহণ করেছেন তাঁরা। এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক বদলের লক্ষ্যেই, তাই তার ফলে উদ্ভূত দুর্ভোগও হাসিমুখে সহ্য করেছেন। গত দুমাসে সমাজের সহ্যশক্তির পরিচয় মিলেছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ ওদের জীবনযাত্রার উন্নতি নিয়ে ভাবিত। কিন্তু গরিব মানুষের জীবনের মানে গুণগত বদল ঘটানোই আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার। প্রসাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, গরিব মানুষ ও তাদের গরিবিকে বিজেপি ভোটে জেতার অস্ত্র করতে চায় না। তাদের নিছক ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে দেখে না।
সূত্রের খবর, মোদী ভাষণে স্পষ্ট দলীয় নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা যেন কেউ পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের হয়ে টিকিট চেয়ে তদ্বির না করেন। টিকিট বন্টনের ব্যাপারটা দলই দেখবে।