এক্সপ্লোর
Advertisement
রামাযণে সীতার বনবাস পর্ব ছাঁটাই, গালিবেও কোপ মারার উদ্যোগ সংঘের
কলকাতা: রামচন্দ্র কি সীতাকে সত্যিই বনবাসে পাঠিয়েছিলেন? হঠাৎ এই প্রশ্ন শুনে আপনি অবাক হতে পারেন। কিন্তু, আসল কথা হল এই প্রশ্ন নিয়েই এখন উঠেপড়ে লেগেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। এমনকী তার উত্তর খুঁজতে ১২ এবং ১৩ অগাস্ট গোরক্ষপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মেলনও ডেকে ফেলেছে তারা। কিন্তু, হঠাৎ এমন উদ্যোগের কারণ কী, তা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপড়া শুরু হয়েছে। পুরাণবিদদের একাংশ অবশ্য একে গৈরিকিকরণের চেষ্টা ছাড়া আর কিছু বলতে নারাজ। পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেছেন, এই ভাবনা নতুন নয়। আগেও হয়েছে। নতুন করে ভাবা হচ্ছে। এর পিছনে উদ্দেশ্য আছে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরএসএসের অখিল ভারতীয় ইতিহাস সংকলন যোজনার সংগঠন সচিব বালমুকুন্দ পাণ্ডের মতে, যুদ্ধকাণ্ডের পর রামায়ণ আর বাল্মীকির রচনা নয়। ‘উত্তরকাণ্ড’ যোগ হয়েছে পরে। সেখানেই যাবতীয় বিকৃতি ঘটেছে। উত্তরকাণ্ডে সীতার বনবাস থেকে অগ্নিপরীক্ষায় রামের ‘নারীবিরোধী’ ভাবমূর্তি ফুটে উঠেছে।
যদিও, পুরাণবিদরা তা মানতে নারাজ। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেছেন,রামকে ওনারা অন্যভাবে দেখাতে চাইছেন। নারীবাদীদের আঘাত লাগতে পারে বলে।
উত্তরকাণ্ডের সংশোধন করা হলে, তা আদৌ কতটা যুক্তিযুক্ত হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে শুধুমাত্র রামায়ণের অংশবিশেষ নিয়ে পর্যালোচনা করেই ক্ষান্ত থাকছে না আরএসএস, তাদের নজর পড়েছে কিংবদন্তী কবি মির্জা গালিবের দিকেও। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঙ্ঘের শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছে, এনসিইআরটি পাঠ্যপুস্তকের হিন্দি বই থেকে বাদ দিতে হবে যাবতীয় উর্দু, ফারসি, ইংরেজি শব্দ-কবিতা। সেক্ষেত্রে কোপ পড়বে মির্জা গালিবের কবিতার উপরেও।
কিন্তু, হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন? ন্যাসের তরফে দীনানাথ বাতরার দাবি, এনসিইআরটি-র প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক তিনি পড়েছেন।
সেখানে হিন্দি বইতে অনেক ‘বিদেশি’ ভাষা রয়েছে।
তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় সরকার যখন নতুন শিক্ষা নীতি তৈরি করছে, সেই সময়ে হিন্দি বইতে বাকি ভাষার প্রয়োগ বন্ধ করা উচিত।
না হলে হিন্দি ভাষার উপরে ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ কমে যাবে।
কিন্তু, কবিতার কি আদৌ কোনও ভাষা হয়? মির্জা গালিব তো ভারতের সম্পদ, তাঁর শিল্পকর্মেও এবার কোপ পড়বে? গালিব নিজেই বলেছিলেন,উর্দুর জন্ম ভারতবর্ষের সেনা ছাউনিগুলিতে। উর্দু শব্দের অর্থই তো ছাউনি। সেই ভাষা আজ কেবল মুসলমানদের সম্পত্তি হয়ে গেল কী করে? ভাষার উপর কোনও ধর্মের মালিকানা হয় কখনও? উর্দু তামাম হিন্দুস্তানের ভাষা...হিন্দু মুসলমান একই মাটির সন্তান, ভাষার প্রশ্নে তাদের বিরোধ ঘটিয়ে দেশটাকে লুটে নিতে চাইছে সাহেবরা।...
আর সেই গালিবের শিল্পকর্মের উপরই যখন কোপ পড়ার আশঙ্কা তখন অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে নিন্দুকদের প্রতি গালিবের সেই বিখ্যাত কলি....হর বাত পে কহতে হো ক্যা হ্যায়...গুফতুগু ক্যায়া হ্যায়....।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement