দেশভাগের সময় জিন্নার গ্রাস থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ছিনিয়ে এনেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ: তথাগত
নয়াদিল্লি: ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় মহম্মদ আলি জিন্নার গ্রাস থেকে কার্যত পশ্চিমবঙ্গকে ছিনিয়ে এনেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এমনটাই জানালেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়।
মঙ্গলবার, নিজের লেখা বই ‘দ্য লাইফ অ্যান্ড টাইমস অফ ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি’-র প্রকাশ অনুষ্ঠানে তথাগত বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সেরা কৃতিত্ব হল পশ্চিমবঙ্গের গঠন। তিনি কার্যত জিন্নার গ্রাস থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ছিনিয়ে এনেছিলেন।
তথাগতর মতে, শ্যামাপ্রসাদ এমনিতে সাংবিধানিক পন্থা অবলম্বনের পক্ষপাতী হলেও, বিক্ষিপ্ত ক্ষেত্রে তিনি অন্য ভিনপথও বেছেছিলেন। ত্রিপুরার রাজ্যপালের দাবি, দেশভাগের পক্ষে জনমত তৈরি করতে তিনি রাস্তায় নেমে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই সময় একটি সংবাদপত্রের সমীক্ষায় উঠে এসেছিল যে, ৯৭ শতাংশ হিন্দু দেশভাগের পক্ষে ছিলেন।
তথাগত বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সঙ্গে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের কোনও তুলনা হয় না। কারণ, স্বাধীনতার সময় হওয়া দেশভাগ হিন্দুদের স্বার্থে করা হয়েছিল। এই একবার তিনি সাংবিধানিক পথ থেকে সরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তথাগত জানান, একটা ভুল ধারনা রয়েছে—যে বাঙালিরা চিরকালই বিপ্লবী এবং বাম-মনোভাবাসম্পন্ন। কিন্তু, এমনটা সত্যি নয়। তিনি যোগ করেন, বিশ্বে প্রায় ২৪ কোটি বাংলাভাষী মানুষ রয়েছেন। এর মধ্যে ৭ কোটি হিন্দু ও ১৭ কোটি মুসলিম।
তথাগত বলেন, এই ১৭ কোটি কখনই বিপ্লবী নয়। তাঁরা কখনই আইনকে নিজেদের হাতে তুলে নেননি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অবশ্য অংশ নিয়েছিলেন। তবে তা জাতীয়তাবাদী আদর্শের জন্য, বামপন্থার জন্য নয়।
তথাগতর মতে, ১৯৩০ সালের আগে বাংলায় বামপন্থা ছিল না। সেই সময় বাংলার সংস্কৃতির পরিবেশ বামপন্থা ভাবধারার অনুকূল ছিল। তার ওপর কোনও রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা না থাকার ফলে একটা ধারনা তৈরি হয় যে বাংলা আদ্যোপান্ত বামপন্থায় বিশ্বাসী।
তিনি মনে করিয়ে দেন, ১৯৩০ সালের আগে চিত্তরঞ্জন দাস, অরবিন্দ ঘোষের মত বিপ্লবীরা বামপন্থী ছিলেন না।