(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
জম্মুতে জোড়া হামলায় নিহত ২ অফিসার সহ ৭ জওয়ান, আহত বিএসএফ অফিসার সহ পাঁচ, খতম ৬ জঙ্গি
জম্মু: একই দিনে জোড়া জঙ্গি হামলা। জম্মুর নাগরোটায় আত্মঘাতী হামলায় ২ অফিসার সহ সাত জওয়ানের মৃত্যু। সেনার পাল্টা গুলিতে মৃত্যু ৩ জঙ্গির। সাম্বায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখল বিএসএফ। ভারতীয় জওয়ানদের গুলিতে ৩ জঙ্গির মৃত্যু। জখম বিএসএফের এক ডিআইজি সহ পাঁচজন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, এদিন জম্মুর নাগরোটা সেনা শিবিরে আত্মঘাতী হামলায় দুই অফিসার সহ সাতজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। জম্মু শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাগরোটায় প্রায় এক হাজার সেনা অফিসারের বাস। সেনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১৬ কোরের সদর এখানেই!
উরির স্মৃতি উস্কে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নাগরোটার আর্টিলারি ইউনিটে পুলিশের উর্দি পরে হামলা চালায় আত্মঘাতী জঙ্গিরা। সেনা সূত্রে খবর, শুরুতেই সেনা অফিসারদের মেস লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গ্রেনেড ছুড়তে শুরু করে জঙ্গিরা। সেই সঙ্গে চলে গুলিবৃষ্টি।
জঙ্গিদের গুলিতে ভারতীয় সেনার দুই অফিসার সহ সাত জওয়ান নিহত হয়েছেন। মারা যান ১৬৬ আর্টিলারি ইউনিটের মেজর কুণাল গোসাবি (৩৩), ১৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের লান্স নায়েক সম্ভাজি যশবন্ত কদম (৩২), ১২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের গ্রেনেডিয়ার রাগবেন্দ্র সিংহ (২৮)।
গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মারা যান মেজর গিরিশ কুমার অক্ষয় (৩১), হাভিলদার সুখরাজ সিংহ (৩২), রাইফেলম্যান অসীম রাই (৩২)।
গুলিতে পাল্টা জবাব দেয় সেনাও। দীর্ঘক্ষণ চলে এই গুলির লড়াই। কয়েক ঘণ্টা লড়াই চলার পর পিছু হঠতে শুরু করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের খুঁজে বার করতে আকাশপথে নজরদারি শুরু করে হেলিকপ্টার।
নামানো হয় সেনার ‘প্যারা’ কম্যান্ডোকে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে বন্ধ রাখা হয় যান চলাচল। বন্ধ করে দেওয়া হয় সব স্কুলও। এর মধ্যে সেনার মেসে ঢুকে এক আধিকারিকের স্ত্রী ও সন্তানকে পণবন্দিও করে ফেলে জঙ্গিরা।
অবশেষে দুপুর দেড়টা নাগাদ জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে যায় সেনা। চারদিক থেকে ঘিরে, গুলি চালিয়ে তিন জঙ্গিকে গুলি করে মারে ভারতীয় সেনা। মুক্ত করা হয় ১২ জওয়ান, ২ মহিলা এবং ২ শিশুকে।
এদিকে, নাগরোটায় যখন সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই চলছে, তখন সাম্বার চামলিয়ালে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা শুরু করে জঙ্গিদের আরেকটি দল। এই গতিবিধি নজরে পড়তেই গুলি চালাতে শুরু করে বিএসএফ। পাল্টা গুলি চালায় জঙ্গিরাও। শেষমেশ অবশ্য গুলির লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারেনি জঙ্গিরা।
বিএসএফের গুলিতে তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়। জঙ্গিদের গুলিতে বিএসএফ-এর ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসার এবং আরও পাঁচ জওয়ান জখম হন। আরও কোনও জঙ্গি লুকিয়ে আছে কিনা, দেখতে এলাকায় দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে চিরুনি তল্লাশি। পুরো জম্মু-কাশ্মীরে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
এদিনের জোড়া হামলা ধরে, এক সপ্তাহে মোট সাতবার হামলা চলল উপত্যকায়। সেনা সূত্রে খবর, এদিনের জঙ্গি হামলাতেও ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের যোগ। সূত্রের খবর, সাম্বায় যে চার জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল, তারা প্রত্যেকেই এসেছিল পাকিস্তান থেকে। সীমান্তের ওপার থেকে লাগাতার তাদের কভার ফায়ারিং দিচ্ছিল পাক সেনা। পাক সেনার ছোড়া সেই গুলিতেই জখম হন বিএসএফের ডিআইজি সহ পাঁচ ভারতীয় জওয়ান।