'ভুয়ো টিকায় প্রোটিন পদার্থ থাকলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হতে পারে', বলছেন চিকিৎসকরা
কোভিশিল্ডও নয়, কোভ্যাকসিনও নয়। তাহলে করোনার টিকার নামে কী ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল কসবার ক্যাম্পে!
কলকাতা: 'তরলের মধ্যে যদি কোনও প্রোটিন জাতীয় পদার্থ থাকে তাহলে বিভিন্নি প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এমনকী সেই প্রতিক্রিয়া মারাত্মক আকারও নিতে পারে।' কসবার ভুয়ো টিকা কেন্দ্রের ভুয়ো টিকা নিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন চিকিৎসক অজয় সরকার।
কোভিশিল্ডও নয়, কোভ্যাকসিনও নয়। তাহলে করোনার টিকার নামে কী ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল কসবার ক্যাম্পে! এই নিয়েই এখন তোলপাড় শহর। প্রতারণাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জনের অফিসে থেকে কোভিশিল্ড স্টিকার দেওয়া বেশ কিছু ভায়াল মিলেছে। যা আসলে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ইঞ্জেকশন অ্যামিকাসিন বলে দাবি করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের তরফে।
এই নিয়ে এবিপি আনন্দকে ফোনে চিকিৎসক অজয় সরকার বলেন, 'এটা আমি আগেই টিভিতে দেখে বুঝতে পেরেছিলাম যে এটা ভ্যাকসিন হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। কারণ ভ্যাকসিন ওরকম ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। এটা একটা জল জাতীয় তরল তার সঙ্গে কোনও কেমিক্যাল অ্যানালিসিস মেশানো হয়ে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, 'আমার মনে হয় এর থেকে কোনও রিয়্যাকশন হল কি না তা টেস্ট করা উচিত। যাঁরা এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের নাম, ঠিকানা কিছু আছে কি না সেটাও দেখা উচিত। শুধু জল থাকলে কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার কথা না। এটার সঙ্গে যদি এমন কোনও বস্তু গিয়ে থাকে যার অ্যান্টিজেনিক ক্যারেক্টার নেই তাহলে আংশিক প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু তরলের মধ্যে যদি কোনও প্রোটিন জাতীয় পদার্থ থাকে তাহলে একাধিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সিরিয়াস প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।'
উল্লেখ্য, দেবাঞ্জনের অফিস থেকে পাওয়া ভায়াল পরীক্ষা করে ফরেন্সিকের অনুমান, কোভিশিল্ডের আড়ালে অ্যামিকাসিন-৫০০ ইঞ্জেকশন! অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই অ্যামিকাসিন-৫০০।
এদিন দুপুর থেকেই দেবাঞ্জনকে নিয়ে তাঁর অফিসে তল্লাশি চালায় পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল। কসবায় আয়োজন করা ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পে দেওয়া ভ্যাকসিনের কোন ব্যাচ নম্বর ছিল না। আসল ভ্যাকসিনের ভায়ালের সঙ্গে এর কোনও মিলও পাওয়া যায়নি। ভুয়ো টিকার ভায়ালের উপরে ছিল একটি সবুজ স্টিকার। তার উপরে কোভিশিল্ড নাম লেখা ছিল। এ ছাড়াও ভায়ালের উপরে মিক্সড ভ্যাকসিন লেখা ছিল।
অর্থাৎ পাউডার ও তরল মিশিয়ে এই ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। বিসিজি ভ্যাকসিনে এই ধরনের মিক্সড ভায়াল ব্যবহার হয়। করোনাভাইরাসের জন্য এখনও কোন মিক্সড ভ্যাকসিন বাজারে আসেনি। করোনার ক্ষেত্রে একটি ভায়াল থেকে প্রায় ১০ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু এই ভুয়ো ভ্যাকসিনের ভায়াল আকারে অনেকটাই ছোট।