Mamata Banerjee BIG Announcement: মনে করালেন বুদ্ধদেবকে, এবার সিঙ্গুরে শিল্প প্রকল্পের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এগারোর মতো একুশের ভোটেও কি নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে সিঙ্গুর? সেটাই দেখার.....
কলকাতা: জমি আন্দোলনে ভর করে, ২০১১ সালে বাংলায় পালাবদল ঘটিয়েছিল তৃণমূল! তারপর থেকে ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন আরেক হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের মুখে তাঁর মুখে শোনা গেল এই স্লোগান। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কৃষি আমাদের গৌরব, শিল্প আমাদের সম্পদ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে, তাঁর পূর্বসূরি অর্থাৎ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কথা। ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কৃষি হবে আমাদের ভিত্তি, শিল্প হবে আমাদের ভবিষ্যৎ, সেই পথে এগোতেই হবে।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেদিন এই স্লোগান তুলেছিলেন সিঙ্গুর থেকেই। সেই সিঙ্গুর, যেখানকার কৃষিজমি আন্দোলনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার রাস্তা তৈরিতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল। সেই সিঙ্গুর যেখানে কারখানার কাঠামো তৈরি করেও, ন্যানো গাড়ির প্রকল্প গুটিয়ে ফিরতে হয় টাটাদের। বৃহস্পতিবার সেই সিঙ্গুরের জন্য শিল্পের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গুরে আমরা অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট ইন্ডাস্ট্রি হতে পারে। ১১ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে। ব্যবসায়ীদের বলছি, যাতে ইন্টারেস্ট পায়, সেজন্য নানা সুযোগ সুবিধা থাকবে। স্টেশন ও ট্রমা কেয়ার ইউনিটের সংলগ্ন জমি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরে শিল্পের প্রস্তাব দিতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বামেরা।
সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে রায় দেওয়ার পর, কৃষকদের জমি ফিরিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, সেই জমিতে চাষবাস সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।
এই প্রেক্ষাপটে সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প-ঘোষণা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে শোনা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কয়েকজন বলেছেন, আমরাও রাজি আছি। জোর করে না নেওয়া হলে রাজি থাকব। আবার অন্য়রা বলেন, এতদিন পর যদি চেতনা জন্মায় যে শিল্প হলে ভাল, তাহলে ভাল। ওখানে চাষ করা যায় না।
গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছে সিঙ্গুর। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে সিঙ্গুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে গেছে বিজেপি।
এই কারণেই কি বিধানসভা ভোটের আগে, কৌশল বদলে কৃষির পাশাপাশি শিল্পকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রশ্ন তুলে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি।
হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২০১১ সালে এসেছিলেন ভাঁওতাবাজি করে। তখন বলেছিলেন কৃষি। জমিতে আজও চাষ হয়নি। ভোটের আগে আবার মিথ্যে কথা। মিথ্যে ছাড়া মমতা কিছু বোঝে না। দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বলেন, সিঙ্গুর নিয়ে মমতাকে ভাবতে হবে না।
শুধু সিঙ্গুর নয়, কাঁথিতে যখন বিশাল rally করে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী, তখন পূর্ব মেদিনীপুরেরই তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর বিনিয়োগ চেয়ে শিল্পপতিদের আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাজপুরে ডিপ সি পোর্টের পরিকল্পনা করেছিল। গ্লোবাল টেন্ডারের বিজ্ঞাপন দেবে রাজ্য সরকার। এটা হবে তাজপুরে। জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। বড় বড় তাবড় বন্দর বিশেষজ্ঞরা যাতে অংশ নেয়, সেজন্য এই ব্যবস্থা। ২৫ হাজার চাকরি হবে। ১৫ হাজার কোটি লগ্নি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমদানি রফতানি বাড়বে। ইস্পাতের আমদানি রফতানি বাড়বে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৩ শতাংশ ইস্পাত যায়। সেটা আরও বাড়বে। অভূতপূর্ব উন্নতি হবে।