নাড্ডা আসছেন, গেরুয়া শিবির সরগরম, নদিয়ার চটুই মাঠে প্রস্তুতি তুঙ্গে
কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে বিজেপির রথযাত্রা মামলা। এই যুক্তি দিয়ে শনিবার নবদ্বীপে জেপি নাড্ডার জনসভায় অনুমতি দিলেও, রথযাত্রার অনুমতি এখনও দেয়নি পুলিশ। চৈতন্যভূমে গেরুয়া রথের চাকা ঘোরা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, বিজেপির প্রস্তুতিতে কোনও খামতি নেই। চটুই মাঠে মঞ্চ বাঁধার কাজ শেষ।
প্রদ্যোত দাস, নদিয়া: বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে কাল নবদ্বীপ থেকে রথ ছোটানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বিজেপি। অথচ এখনও পর্যন্ত ঝুলে তার অনুমতি। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা হাইকোর্টে রথ মামলা বিচারাধীন থাকায়, এখনই অনুমতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, বিজেপি তাদের হাইভোল্টেজ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে অনড়।
রাত পোহালেই জে পি নাড্ডার উপস্থিতিতে নবদ্বীপ থেকে বিজেপির প্রথম রথযাত্রা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু, এখনও রথযাত্রার প্রশাসনিক অনুমতির বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার নবদ্বীপে জেপি নাড্ডার দুটি কর্মসূচি রয়েছে ৷ প্রথমটি জনসভা, দ্বিতীয়টি রথযাত্রা ৷ এর মধ্যে শুধুমাত্র নাড্ডার জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশ সূত্রে দাবি, কলকাতা হাইকোর্টে রথযাত্রা মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাই তাদের পক্ষে এখন অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। বিজেপির রথযাত্রা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। সূত্রের খবর, ৯ ফেব্রুয়ারি তার শুনানি হবে। এই পরিস্থিতিতে নবদ্বীপ থেকে রথযাত্রা শুরু নিয়ে তৈরি হল জটিলতা। যদিও চৈতন্যভূমি থেকে রথের চাকা গড়াতে অনড় বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, ‘‘পলিটিকাল পার্টি তার কর্মসূচি নিজের মতো করে পালন করবে। এতে পারমিশন নেওয়ার কী আছে ৷’’
বিজেপির রথযাত্রার অনুমতি নিয়ে রাজনৈতিক তরজার শেষ এখানেই নয়। তৃণমূলের তরফে এদিন ট্যুইট করে বলা হয়....বিজেপি যেমনটা দাবি করছে তা ঠিক নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও যাত্রার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেনি। বিদ্বেষমূলক প্রচার চালাচ্ছে তারা, যার সত্যতা বা সারবত্তা কোনওটাই নেই। পশ্চিবঙ্গ সরকার যাত্রা কর্মসূচিতে অনুমতি না দিয়ে থাকলে, তা প্রামাণ্য নথি দিয়ে দেখাক বিজেপি ৷ বিজেপির এক কর্মকর্তা মুখ্য সচিবের কাছ থেকে রথযাত্রার অনুমতি চেয়েছিলেন। মুখ্য সচিবের দফতর জানায়, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের আওতাধীন। সেখানে আবেদন জানাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এসবের মাঝে কলকাতা হাইকোর্টে এনিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। এই ইস্যুতে শাসকদলের কোনও ভূমিকা নেই। এদের উদ্দেশ্য খারাপ। চৈতন্য মহাপ্রভুর রথ ছিল সাম্যের ঐক্যের। এদের রথ ঘৃণার বিভাজনের ৷ রাজ্য বিজেপি-তে পাঁচটি সাংগঠনিক জোন রয়েছে। উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ, নবদ্বীপ, মেদিনীপুর এবং কলকাতা। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি জোনে একটি করে রথযাত্রা করা হবে।
কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে বিজেপির রথযাত্রা মামলা। এই যুক্তি দিয়ে শনিবার নবদ্বীপে জেপি নাড্ডার জনসভায় অনুমতি দিলেও, রথযাত্রার অনুমতি এখনও দেয়নি পুলিশ। চৈতন্যভূমে গেরুয়া রথের চাকা ঘোরা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, বিজেপির প্রস্তুতিতে কোনও খামতি নেই। চটুই মাঠে মঞ্চ বাঁধার কাজ শেষ। দলীয় পতাকায় ছয়লাপ সভাস্থল। পাহাড়ায় সিআরপিএফ। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটেয় এখান থেকেই পরিবর্তন যাত্রা সূচনার কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির। পুলিশ রথযাত্রায় অনুমতি না দিলেও, গেরুয়া শিবিরের তরফে প্রাথমিক রুট পর্যন্ত ঠিক করে রাখা হয়েছে। চটুই মাঠ থেকে বেরিয়ে গৌড়াঙ্গ সেতু হয়ে প্রথমে কৃষ্ণনগর ৷ সেখান থেকে ধুবুলিয়া হয়ে বেথুয়াডহরি ৷ সেখানে শনিবার রাত্রিবাসের সিদ্ধান্ত ৷ রবিবার সকালে বেথুয়াডহরি থেকে বেরিয়ে প্রথমে বার্ণিয়া ৷ সেখান থেকে পলাশিপাড়া হয়ে তেহট্টে রথ পৌঁছনোর কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির। পুলিশের অনুমতি না মিললেও, বিজেপি শিবির রথ ছোটাতে অনড়।