সিউড়িতে ১০০ দিনের কাজে বাধার অভিযোগ ঘিরে গণ্ডগোল, মাথা ফাটল পঞ্চায়েত প্রধানের
বিজেপি সমর্থক এক পরিবারের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে ওই পরিবারের বচসা শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পঞ্চায়েত প্রধান গেলে তাঁর ওপর চড়াও হয় পরিবারের সদস্যরা।
গোপাল চট্টোপাধ্যায়, সিউড়ি: বীরভূমের সিউড়িতে একশো দিনের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে অশান্তি। মাথা ফাটল কেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের। ভাঙচুর চালানো হল গ্রামের এক পরিবারের বাড়িতে। আক্রান্ত প্রধানের অভিযোগ, তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি সমর্থক এক পরিবার। পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, শুধুমাত্র বিজেপি সমর্থক সন্দেহে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের।
সোমবার দিনের শুরুতে এভাবেই তেতে উঠল বীরভূমের সিউড়ির কেন্দুয়া গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা। গ্রামেরই এক পরিবারের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালালেন এলাকার বাসিন্দারা। অশান্তির মাঝে পড়ে মাথা ফাটল কেন্দুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার সকালে কেন্দুয়ায় একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকার এক বিজেপি সমর্থক পরিবার শুরুতেই সেই কাজে বাধা দেন। তা নিয়ে দুপক্ষের বচসা শুরু হয়।
তৃণমূল নেতা তথা কেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ণ বাগদির অভিযোগ, এই পরিবার এলাকার সমস্ত উন্নয়নে বাধা দেয়। বিজেপির ইন্ধনে ওরা এটা করে। আজ ঘটনার খবর পেয়ে কথা বলতে এলে ওরা মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়।
আক্রান্ত পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, পুরোটাই তৃণমূলের সাজানো ঘটনা। শুধুমাত্র বিজেপি সমর্থক সন্দেহে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের।
অভিযুক্ত পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমরা কোনও ভাবেই যুক্ত নই। বিধানসভা ভোটে আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছি, এই সন্দেহে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
সিউড়ি থানার পুলিশ আক্রান্ত পরিবারের সদ্যদের উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, এবারের বিধানসভা ভোটে ওই জেলার ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতেই জিতেছে তৃণমূল। ভোটের ফল বেরোনোর পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে কর্মী-সমর্থকদের যোগদানের বিভিন্ন ঘটনা আসছে। আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতিগুলি নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি ঘিরেও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কখনও গঙ্গাজল ছিটিয়ে তৃণমূলে নেওয়া হয়েছে বিজেপি কর্মীদের। আবার কখনও কখনও যোগদানের সময় ধান, তুলসি হাতে ধরিয়ে শপথের ছবিও সামনে এসেছে। এরইমধ্যে কয়েকদিন আগে এবার স্যানিটাইজ করিয়ে দলবদল ঘটানো হয়। ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকেই, বীরভূমজুড়ে দলে দলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ইলামবাজারে দেখা গিয়েছিল এই অভিনব ছবি। দেবীপুর গ্রামের ১৫০ জন বিজেপি কর্মীকে রীতিমতো স্যানিটাইজ করিয়ে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়।
অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে ফের দলবদল ঘিরে শুরু হয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়,তৃণমূল নামের ভয়ঙ্কর ভাইরাস গণতন্ত্রকে খতম করেছে, মানুষ ওদের নিষ্কাশিত করবে বাংলা থেকে। ভয় দেখিয়ে দলবদল করানো হচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূল দাবি করেছিল যে, বিজেপি নামক ভাইরাস থেকে স্যানিটাইজ করে মুক্ত করা হল।