The Resistance Force: নিরীহ পর্যটক হত্যায় উঠে আসছে নিষিদ্ধ The Resistance Force-এর নাম, কারা তারা?
Kashmir Terror Attack: বাইরের লোকজনের স্থায়ী বসবাসে আপত্তি? সদস্যরা অল্পবয়সি ও টেক-স্যাভি, পহেলগাঁওয়ে নিধনযজ্ঞ চালানো The Resistance Force আসলে কারা?

নয়াদিল্লি: ছোট সংগঠন হিসেবে এতদিন ‘ছোটখাটো’ নাশকতাই চালিয়ে এসেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে যা ঘটল, তাতে অন্যতম ত্রাসে পরিণত হল জঙ্গি সংগঠন The Resistance Front. ধর্মপরিচয় জেনে ধরে ধরে ২৬ জন পর্যটককে খুন করেছে তারা। স্পর্শকাতর কাশ্মীরে ফের রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। কিন্তু The Resistance Front আসলে কারা? কী এদের লক্ষ্য? (The Resistance Force)
মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করে The Resistance Front. পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন তারা। ২০১৯ সালে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার অনুচ্ছেদ ২০১৯ খর্ব করলে এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা হয়। কেন তারা এই হামলা চালাল, তার সাপেক্ষে যুক্তিও দিয়েছে জঙ্গিরা। (Kashmir Terror Attack)
মঙ্গলবার হামলার পর পরই দায়স্বীকার করে The Resistance Front. তারা জানায়, বাইরে থেকে আসা মানুষদের Domicile Certificate দিয়েছে সরকার। উপত্যকার জনবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটানোই সরকারের লক্ষ্য। সরকারের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই নাশকতা চালিয়েছে তারা। Domicile Certificate একটি সরকারি শংসাপত্র, যা দেখিয়ে বাইরের লোকজন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারে।
জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য সংরক্ষিত বিশেষ অনুচ্ছেদ ৩৭০ খর্ব করার পর থেকে বার বার বহিরাগতদের কাশ্মীরে ঢোকার প্রসঙ্গ ওঠে। দেশের বেশ কিছু রাজ্যে এমনিই বহিরাগতদের স্থায়ী ভাবে বসবাসে বিধিনিষেধ রয়েছে। কাশ্মীরে তাহলে বাইরের লোকজনকে স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে কেন, প্রশ্ন উঠেছিল। হামলার কারণ হিসেবে সেই যুক্তিকেই খাড়া করেছে The Resistance Front. তাদের বক্তব্য, ‘বেআইনি বসতি গড়ে তুলতে গেলে হিংসা হবেই’।
The Resistance Front নিজেদের স্বাধীন সংগঠন হিসেবে দাবি করে, ‘কাশ্মীরি প্রতিরোধ’ সংগঠন হিসেবে দাবি করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, The Resistance Front আসলে লস্করের ছায়া সংগঠন। UAPA ধারায় আগেই লস্করকে নিষিদ্ধ করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, The Resistance Front-এর মাধ্যমে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে কাশ্মীরের যুবকদের নাশকতায় নিযুক্ত করছে লস্কর। পাকিস্তান থেকে উপত্যকায় অস্ত্র ঢুকছে, পাচার হচ্ছে মাদক।
The Resistance Front-এর কমান্ডার শেখ সাজ্জাদ গুলকে ইতিমধ্যেই জঙ্গি ঘোষণা করেছে ভারত। উপত্যকায় বেছে বেছে তারা কাশ্মীরের বাইরের মানুষজন, কাশ্মীরের সংখ্য়ালঘুদের নিশানা করে বলে অভিযোগ, যার মধ্যে কাশ্মীরি পণ্ডিতরাও পড়েন। ২০২১ সালে সকলের জনপ্রিয় কেমিস্ট মাখনলাল পণ্ডিত,, স্কুলের অধ্যক্ষা সুপিন্দর কৌরকে খুন করে The Resistance Front. একটি নির্মাণ সংস্থার শ্রমিকদেরও তারা হত্যা করে। কাশ্মীরি সমাজকর্মী বাবর কাদরিকেও খুন করে The Resistance Front.
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, The Resistance Front-এর সদস্যরা মূলত কমবয়সি। প্রযুক্তি সম্পর্কে বেশ জ্ঞান রয়েছে তাদের। GoPro-র মতো বডি ক্যামেরা ব্যবহার করে তারা, যা হামলার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে ঘটনাস্থল থেকেই। সেই ভিডিও দেখিয়ে আরও ছেলেমেয়ে নিয়োগ করা হয়। গোড়ার দিকে The Resistance Front-এর সদস্যরা পাকিস্তানে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা স্থানীয় যুবক ছিল। বৈধ পাসপোর্টে পাকিস্তান গিয়ে, ওয়াঘা সীমান্ত হয়ে দেশে ফেরে তারা। এর পর, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়েও পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার হিড়িক শুরু হয়।
২০২১ সালে সংগঠনের তদানীন্তন কমান্ডার আব্বাস শেখকে হত্যা করে The Resistance Front-কে সাময়িক ধাক্কা দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। ২০২৪ সালের মে মাসে বসিত দারকেও নিকেশ করা হয়। বসির প্রথম সারির জঙ্গি ছিল। ১৮টি নাশকতামূলক হামলায় যুক্ত ছিল সে। সেই The Resistance Front-ই এখন নতুন করে মাথা তুলতে শুরু করেছে উপত্যকায়। পহেলগাঁওয়ে তাদের হামলার পর নিরাপত্তার ফাঁকফোকরও স্পষ্ট হয়ে গেল। জঙ্গিরা কাশ্মীরি স্বার্থের যুক্তি দিলেও, স্থানীয়রা তীব্র নিন্দা করেছেন এই হামলার। এই হামলার পর কাশ্মীরের পর্যটন ধাক্কা খাবে। অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। তাই জঙ্গিরা আদৌ কাশ্মীরের কথা ভাবছে না বলে মত তাঁদের। উপত্যকার মুসলিম বাসিন্দারা জম্মুতে একত্রিত হয়ে পাকিস্তান বিরোধী স্লোগানও তোলেন।






















