Transgender Man Gives Birth: রূপান্তরিত পুরুষের কোলে সন্তান এল, কোনও অস্ত্রোপচার নয়, স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই
Viral News: এই অসম্ভব সম্ভব হল কী ভাবে, বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন রূপান্তরিত ওই পুরুষ।

নয়াদিল্লি: ব্রিটেনে ফের ইতিহাস গড়লেন রূপান্তরিত এক পুরুষ। প্রাকৃতিক ভাবে সন্তানধারণ এবং সন্তান প্রসব করে নজির গড়লেন তিনি। তাঁর পুত্রসন্তানের বয়সও দু’বছর হয়ে গিয়েছে। এতদিনে নিজের জীবনযুদ্ধের কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তিনি। ব্রিটেনে এই নিয়ে চতুর্থ কোনও পুরুষ সন্তানের জন্ম দিলেন। নারী থেকে পুরুষ হয়ে ওঠা কেউ একেবারে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তানধারণ করলেন এই প্রথম। কিন্তু এই অসম্ভব সম্ভব হল কী ভাবে, বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। এই মুহূ্তে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন ওই রূপান্তরিত পুরুষ। (Transgender Man Gives Birth)
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমে রূপান্তরকামী ওই পুরুষকে M বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, জন্মসূত্রে মেয়ে তিনি। ১৭ বছর বয়সে নিজেকে পুরুষের রূপান্তরিত করার ইচ্ছে জাগে তাঁর। M জানিয়েছেন, টেস্টোস্টেরন নিতে শুরু করেন তিনি। এর পর অস্ত্রোপচার করে কেটে বাদ দেন স্তনযুগল। সম্পূর্ণ ভাবে পুরুষ হয়ে ওঠার দিকে একটু একটু করে এগোতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু টাকার অভাবে নিম্নাঙ্গের অস্ত্রোপচার করাতে পারেননি সেই সময়। (Viral News)
সেই অবস্থাতেই প্রেমিক C-র সঙ্গে আলাপ তাঁর। শিশুদের দেখভালের অভিজ্ঞতা ছিল C-র। টেস্টোস্টেরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মুখ ব্রণয় ভরে যাচ্ছিল বলে এর পর টেস্টোস্টেরন নেওয়া বন্ধ করে দেন M. এর পরই সন্তানধারণ করেন তিনি. নারী থেকে পুরুষ হয়ে ওঠা কেউ এই প্রথম স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান ধারণ করলেন ব্রিটেনে। M জানিয়েছেন, তাঁর বয়স ২৭ বছর, সঙ্গী C-র ৩১। দু'বছরের ছেলে তাঁদের দু'জনকেই বাবা বলে ডাকে।
এতদিন পর কেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করলেন তিনি, সে প্রসঙ্গে M বলেন, "রূপান্তরকামী হওয়ার ইতিবাচক দিকও যে আছে, আমি চাই মানুষ সেটা বোঝার চেষ্টা করুক। আমাদেরকে খল চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়, শিকারির সঙ্গে তুলনা করা হয়। আমরাও কিন্তু আর পাঁচটা যুগলের মতো যুগল। জীবন যেভাবে নিয়ে যাচ্ছে, সেভাবেই চলছি। আমরা সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপন করি। নিজেদের জীবনে আনন্দে রয়েছি। রূপান্তরকামী (রূপান্তরিত)-রাও যে পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারেন, তা দেখাতে চাই।"
M বলেন, "হরমোনকে ঠেকাতে চাইলেও, এগ ফ্রিজ করে রাখার প্রয়োজন নেই। যদি রূপান্তরিত হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক উপায়ে সন্তানধারণ করা সম্ভব। আমরা যখন পেরেছি, অন্যরাও পারবেন।" M জানিয়েছেন, ১৭ বছর বয়সে নিজের রূপান্তরকামী পরিচয় প্রকাশ করেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে পুরুষ হয়ে উঠতে টেস্টোস্টেরন নিতে শুরু করেন। ২০ বছর বয়সে কেটে বাদ দেন স্তন। কিন্তু নিম্নাঙ্গের অস্ত্রোপচার, অর্থাৎ Phalloplasty করানো হয়নি। C-র সঙ্গে দেখা হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরই বুঝতে পারেন গর্ভে সন্তান ধারণ করেছেন।
নারী থেকে পুরুষ হওয়ার সময় টেস্টোস্টেরন নিতে হয়, যাতে দাড়ি-গোঁফ গজায়, গলার স্বর ভারী হয়ে আসে। পেশি আরও মজবুত হয়, বন্ধ হয়ে যায় ঋতুস্রাব। সন্তানধারণ করার ক্ষেত্রে অন্তত তিন মাসে আগে টেস্টোস্টেরন নেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়, যাতে সন্তানের বৃদ্ধির উপর কোনও প্রভাব না পড়ে। M জানিয়েছেন, টেস্টোস্টেরন নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় আবারও ঋতুস্রাব শুরু হয় তাঁর। আর তাতেই সন্তানধারণ করেন।
২০২১ সালেই নিজের নাগরিক পরিচয়পত্র পাল্টে ফেলেন M. নারী থেকে সেখানে নিজেকে পুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি। লিঙ্গ শনাক্তকরণ সার্টিফিকেটও রয়েছে তাঁর কাছে। কিন্তু সন্তানের জন্মের শংসাপত্র মা হিসেবে M-এর নাম রয়েছে। বাবা C. অর্থাৎ এই মুহূর্তে খাতায়কলমে M একই সঙ্গে পুরুষ এবং নারী। M জানিয়েছেন, সন্তান প্রসব নিয়ে গর্ববোধ করেন তিনি। ছেলে যাতে ভাই বা বোন পায়, তাই আগামী দিনে ফের সন্তানধারণ করতে চান M.
এর আগে, ২০১৯ সালে ২১ বছর বয়সে একজন স্বাভাবিক ভাবে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। লিঙ্গ পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মাঝেই ২০১৬ সালে চিকিৎসা হঠাৎ বন্ধ রাখেন তিনি। স্পার্ম ডোনারের মাধ্যমে সন্তানধারণ করেন। ২০২৩ সালে আর এক রূপান্তরিত পুরুষ নিজের সন্তানধারণের কথা প্রকাশ করেন। একটি পত্রিকার প্রচ্ছদেও জায়গা করেন নেন। M জানিয়েছেন, "গর্ভাবস্থায় আরও বেশি করে নিজেকে চিনেছি। ওর (সন্তানের) জন্মের শংসাপত্রে আমি ওর মা, কিন্তু আমি জানি, আমি ওর বাবা। সমাজ আরও উন্নত হতে পারত। আগামী দিনে নিশ্চয়ই তেমন হবে।" M এবং C-র বাগদানও হয়ে গিয়েছে।
তথ্যসূত্র: DailyMail
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
