সন্তানদের চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে নিজের হৃৎপিণ্ড সহ অঙ্গ বেচতে রাস্তায় মা!
ঘটনাটি দৃষ্টিগোচর হতেই দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে যাবতীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন
এর্নাকুলাম: সন্তানদের চিকিৎসা খরচ চালানো আর সম্ভব হচ্ছিল না। এক প্রকার বাধ্য হয়েই দেহের অঙ্গ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন কেরলের এর্নাকুলমের বাসিন্দা শান্তি।
রাস্তার ধারে বোর্ডে অঙ্গ বিক্রির বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাটি দৃষ্টিগোচর হতেই দ্রুত পদক্ষেপ করে প্রশাসন। যাবতীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। শান্তির সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা।
ঘটনায় প্রকাশ, মাস কয়েক আগে তাঁর বড় ছেলে দুর্ঘটনায় আহত হয়। মস্তিস্কে অস্ত্রোপচার করতে হয় তাঁর। তাঁর আরেক ছেলের পেটে টিউমার ধরা পড়ে। অস্ত্রোপচার করতে হয় তারও।
এখানেই শেষ নয়। শান্তির ১১ বছরের মেয়েও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তারও নিউরো সার্জারির প্রয়োজন।
একা শান্তির পক্ষে এত খরচ জোগাড় করা অসম্ভব ছিল। শান্তির এই একার লড়াইয়ে পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। উপরন্তু বাড়ির ভাড়া মেটাতে না পারায় পরিবারকে বাড়ি থেকে উৎখাত করে দিয়েছে বাড়িওয়ালা।
রুঢ় বাস্তবের মুখোমুখি হয়েও হার মানতে নারাজ শান্তি। তিন সন্তানকে নিয়ে একা লড়াই করার অদম্য জেদ থেকে চিকিৎসার টাকা জোগাড়ে রাস্তায় নামেন শান্তি।
এরপরই তিন সন্তানকে নিয়ে, তার অবস্থার কথা বর্ণনা করে আর্থিক সাহায্য চেয়ে রাস্তায় দাঁড়ান শান্তি। হৃৎপিণ্ড সহ তাঁর অন্য অঙ্গ বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেন শান্তি।
সবমিলিয়ে তাঁর প্রায় ২০ লক্ষ টাকার দরকার ছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর সম্প্রচার হতেই এগিয়ে আসেন অনেকে। বেশ কয়েকটি সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
এর্নাকুলামের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর জানিয়েছেন, তাঁদেরকে ওই বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লায়নস ক্লাব তাঁদের বকেয়া বাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শান্তির দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে এগিয়ে এসেছে কেরল সরকার। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা জানিয়েছেন তাঁর সন্তানদের চিকিৎসা খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।