দেশবাসীর আশঙ্কা, ক্ষোভকে হাতিয়ার করেই হোয়াইট হাউস জয় ট্রাম্পের
ওয়াশিংটন: হোয়াইট হাউসের দৌড়ে হিলারি ক্লিন্টনকে ‘ট্রাম্প’ ডোনাল্ডের! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন এই রিপাবলিকান।
ডোনাল্ড ট্রাম্প— এক বর্ণময় চরিত্র। মার্কিন ধনকূবের, বিতর্ক যাঁর নিত্যসঙ্গী। অথচ, সেই বিতর্কের পাশ কাটিয়ে, রাজনৈতিক যুক্তিকে ফুৎকারে উড়িয়ে কার্যত একার হাতে দেশের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে ছক-ভাঙা নির্বাচনে জয়ী হলেন তিনি।
নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট জায়ান্ট ট্রাম্প নির্বাচনে হাতিয়ার করেছিলেন দেশবাসীর অন্দরে পুঞ্জীভূত হতে থাকা আশঙ্কা ও ক্ষোভকে। রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ট্রাম্প নিজে বিতর্কিত চরিত্র হলেও, নিজের নির্বাচনী-কৌশলের অঙ্গ হিসেবে ট্রাম্প যে ইস্যুকে তুলে এনেছিলেন, সেগুলি আম-মার্কিনীদের নাড়া দিয়েছিল।
কী সেই কৌশল? একটা বিষয়ে ট্রাম্প অনেক আগেই বুঝে গিয়েছিলেন। তা হল, মার্কিনীদের মধ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া প্রবল ভাবে বইছে। বিশেষ করে, চাকুরীজীবী সাধারণ শ্রেণির মধ্যে এই ক্ষোভ মারাত্মক। এর কারণ, দেশে কর্মসংস্থানের জোয়ার না থাকা।
আরও পড়ুন:
আমি দেশকে ভালবাসি, বললেন নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিগত বহু বছর ধরেই বহু মার্কিন সংস্থা আউটসোর্সিং করায় সাধারণ মার্কিনীদের চাকরি বিদেশে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি, বহু সংস্থা বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করায় মার খেয়েছে দেশের উৎপাদন শিল্প।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজের আট বছরের শাসনকালে চাকরি তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে, সব মিলিয়ে জনমানসে তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ। মানুষ আরেক ডেমোক্র্যাটকে হোয়াইট হাউসে দেখতে চায়নি।
আর এই বিষয়টিকে প্রথম থেকেই হাতিয়ার করেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারে, ‘বিদেশে চাকরি-চুরি’ নিয়ে সোচ্চার হন তিনি। রাজনীতির ময়দানে নবাগত হলেও ব্যবসায়িক দূরদর্শিতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের ক্ষোভকে নিজের প্রচারে কাজে লাগান।
আরও পড়ুন:
হিলারিকে হারিয়ে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
এর পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ বাসিন্দাদের বিরুদ্ধেও মার্কিনীদের মধ্যে ছিল ক্ষোভ। এই সব ইস্যুকে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদের মতো ব্যবহার করেন ট্রাম্প।
তবে, বিতর্কও কম হয়নি তাঁকে ঘিরে। একাধিক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। বহু সময় তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিতর্কের সৃষ্টি করেন। আবার কখনও মহিলাদের উদ্দেশ্যে তাঁর কুরুচিকর মন্তব্যের ভিডিও প্রকাশিত হয়।
যার জেরে একসময় তাঁর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। তবে, এখন সব অতীত। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ যে ভোটবাক্সে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি, সদ্যসমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনের ফলই জলজ্যান্ত প্রমাণ।