নয়াদিল্লি: মহাকাশ গবেষণায় অসাধ্যসাধন করল চিন। মহাকাশে মাছ চাষ করে দেখাল তারা। নিজস্ব স্পেস স্টেশনে মাছ চাষের উপযুক্ত ব্যবস্থা করে তারা। সেখানে মাছ ছাড়াই হয়নি শুধু, যত্ন সহকারে মাছগুলি প্রতিপালন করেছেন বিজ্ঞানীরা সবক'টি মাছেরই আয়ু পূর্ণ হয়। ৪৩ দিনের সময়কালে মহাকাশে মাছগুলি বাড়ে এবং ডিমও পাড়ে। মহাকাশ অভিযানে এমন নজির আর নেই। (Chinese Zebrafish in Space)


Shenzhou-18 অভিযানের আওতায় মহাকাশে মাছ চাষ করে চিন। পৃথিবীর বাইরে বাস্তুতন্ত্রের সূচনা ঘটনা যায় কি না, তা দেখতেই পরীক্ষামূলক ভাবে মাছ চাষ করা হয় মহাকাশে। আর তাতেই বিপুল সাফল্য পেয়েছেন চিনা বিজ্ঞনীরা। মহাকাশের অ্যাকোরিয়ামে চারটি Zebrafish চাষ করা হয়েছিল। গায়ে ডোরাকাটা দাগের জন্যই এমন নাম। ভারতের গ্রাম বাংলাতেও এই মাছ পাওয়া যায়। মহাকাশে চাষ করা ওই চারটি মাছই ছোট থেকে বড় হয়, আবার ডিমও পাড়ে। (Science News)


গত ২৫ এপ্রিল চারটি Zebrafish, চার গ্রাম ওজনের জলজ উদ্ভিদ নিয়ে মহাকাশযানে চেপে রওনা দেন তিন চিনা নভোশ্চর।  ৪ নভেম্ব পৃথিবীতে ফেরেন তাঁরা, মহাকাশ থেকে মাছ চাষ করার ওই জলের নমুনাও নিয়ে ফেরেন। মাছগুলিকে রাখতে বিশেষ অ্যাকোরিয়ামের বন্দোবস্ত করা হয়। সিরিঞ্জে করে খাবার দেওয়া হয়। 



চিনা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাকাশে জলজ প্রাণীরা বেঁচে থাকতে পারে কি না, সেখানকার প্রতিকূল পরিবেশে বাস্তুতন্ত্রের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে কি না, তা-ই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছিল। এই পরীক্ষার জন্য ভেবেচিন্তেই Zebrafish-কে বেছে নেওয়া হয়। কারণ মানুষের সঙ্গে জিনগত মিল রয়েছে এই মাছের। দ্রুত বেড়ে ওঠে। ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ গবেষণার জন্য এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 


চিনা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাইরে, মহাকাশে মাছচাষের এই গবেষণা অত্যন্ত জরুরি ছিল জীববিজ্ঞানকে আরও ভাল ভাবে বোঝার জন্য। মহাকাশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রাণীর শরীরে কী প্রভাব পড়ে এবং কোন প্রযুক্তির সাহায্যে সেই ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা যায়, তা বোঝার চেষ্টা চলছে। মহাকাশ গবেষণায় যে চিন কারও থেকে কম যায় না, তা আবারও প্রমাণিত হল এই গবেষণায়। বর্তমানে Zebrafish নিয়ে চিনের ৫০০-র বেশি ল্যাবরেটরিতে গবেষণা চলছে।