ISL: অপ্রতিরোধ্য মোলিনা ব্রিগেড, ঘরের মাঠে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে জয় বাগানের
Mohun Bagan vs Hyderabad FC: লিগের প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের পর এই নিয়ে যুবভারতীতে টানা ছ’টি জয়। অর্থাৎ ঘরের মাঠে জয়ের ডাবল হ্যাটট্রিক করে ফেলল হোসে মোলিনার দল।
কলকাতা: ঘরের মাঠে সবুজ-মেরুন বাহিনীর বিজয়রথ থামানোর ক্ষমতা বোধহয় কারও নেই। বৃহস্পতিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের জয় দেখে সে রকম মনে হওয়াই স্বাভাবিক। এ বারের আইএসএলে তারা ঘরের মাঠে ছ’নম্বর জয় অর্জন করল হায়দরাবাদ এফসি-কে ৩-০-য় হারিয়ে। সাতটি হোম ম্যাচের মধ্যে ছ’টিতেই জয় পেয়েছে তারা। লিগের প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের পর এই নিয়ে যুবভারতীতে টানা ছ’টি জয়। অর্থাৎ ঘরের মাঠে জয়ের ডাবল হ্যাটট্রিক করে ফেলল হোসে মোলিনার দল।
অপ্রতিরোধ্য মোহনবাগানের দুর্ভেদ্য রক্ষণের জন্য এ দিন তুমুল লড়াই করেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি মরিয়া হায়দরাবাদ এফসি। বল দখলে মোহনবাগানের চেয়ে এগিয়ে (৪৫-৫৫) ছিল তারা। সারা ম্যাচে সাত-সাতটি শট লক্ষ্যে ছিল তাদের, যেখানে মোহনবাগানের আটটি শট ছিল গোলে। গোলের সুযোগ তৈরিতেও এগিয়ে (১০-৯) ছিল নিজামের শহরের দল। তা সত্ত্বেও তাদের রক্ষণের দুর্বলতাকে দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়ে পরপর গোল তুলে নেয় সবুজ-মেরুন বাহিনী, যা একেবারেই পারেনি হায়দরাবাদ এফসি। এখানেই দুই দলের মধ্যে ফারাক তৈরি হয়ে যায়।
ম্যাচের ন’মিনিটের মাথায় এক অনিচ্ছাকৃত ভুলে প্রতিপক্ষের গোলের খাতা খুলে দেন হায়দরাবাদের সার্বিয়ান ডিফেন্ডার স্তেফান সাপিচ। ৪১ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ান বাগান ডিফেন্ডার টম অলড্রেড। ৫১ মিনিটের মাথায় কামিংসের গোলে জয় সুনিশ্চিত করে গতবারের শিল্ড চ্যাম্পিয়নরা। তবে যতগুলি সুযোগ এ দিন তৈরি করেছিল বাগান-বাহিনী, তাতে আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত তারা।
গোলের লক্ষ্যে থাকা তাদের আটটি শটের মধ্যে পাঁচটিই ছিল লিস্টন কোলাসোর। কিন্তু এ দিন তাঁর সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান হায়দরাবাদের গোলকিপার অর্শদীপ সিং, যিনি এ দিন ছ’টি প্রায় অবধারিত গোল সেভ করে দলকে বড় হারের হাত থেকে বাঁচান। ১৪ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে বহাল রইল তারা। ১৬-র গোল পার্থক্য তাদের, যার ধারে-কাছে আপাতত কেউ নেই। আর কোনও আইএসএল মরশুমে কখনও ১৪ ম্যাচের পর ১৬-র গোলপার্থক্য অর্জন করতে পারেনি মোহনবাগান। এই নিয়ে সাতটি ম্যাচে গোল অক্ষত রাখল তারা। যা এ মরশুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
প্রত্যাশা অনুযায়ীই এ দিন দুটি পরিবর্তন করে দল নামান মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা। মনবীর সিংয়ের জায়গায় সহাল আব্দুল সামাদ ও আপুইয়ার জায়গায় দীপক টাঙরি। হায়দরাবাদ এফসি অবশ্য দলে কোনও পরিবর্তন করেনি।
ঘরের মাঠে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাই নিয়ম হয়ে উঠেছে মোহনবাগানের। এ দিনও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। তবে দশ মিনিটের মধ্যেই যে গোল ‘উপহার’ পেয়ে যাবে তারা, তা বোধহয় ভাবতেই পারেনি সবুজ-মেরুন বাহিনী। বাঁদিক দিয়ে ওঠা লিস্টন কোলাসোর স্কোয়ার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের মাথা থেকে সোজা গোলে শট নেন সহাল আব্দুল সামাদ, যা গোলকিপার অর্শদীপের হাতে লেগে সামনে ছিটকে আসে। তাঁর সামনে থাকা ডিফেন্ডার স্তেফান সাাপিচের গায়ে লেগে বল ফের গোলে ফিরে যায় ও গোল লাইন পেরিয়েও যায় (১-০)।
এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর চাপ ক্রমশ বাড়াতে থাকে হোম টিম। ১৭ মিনিটের মাথায় জেমি ম্যাকলারেনের শট পোস্টে লেগে ফিরে না এলে তখনই ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত মোহনবাগান। জেসন কামিংসের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে ডানদিক থেকে কোণাকুনি শট নেন ম্যাকলারেন, যা সোজা পোস্টে ধাক্কা খায়। ২৬ মিনিটের মাথায় লিস্টন কোলাসোর দূরপাল্লার শট ফের সেভ করেন অর্শদীপ। ৪০ মিনিটের মাথায় বিপজ্জনক জায়গা থেকে নেওয়া কোলাসোর ফ্রি কিকও বাঁচান হায়দরাবাদের গোলকিপার। তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল