WC 2011: মাত্র ৩ রানের জন্য হাতছাড়া শতরান, এত বছর পরেও কেন ধোনিকেই পরোক্ষভাবে দায়ী করেন গম্ভীর?
WC 2011: ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের (world cup final) কথা উঠতেই আফশোসের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলায় বারবার। মাত্র ৩ রানের জন্য সেদিন ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শতরান হাতছাড়া হয়েছিল বাঁহাতি ওপেনারের।
মুম্বই: অবসরের পর বারবার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে গৌতম গম্ভীর (gautam gambhir) বলেছিলেন যে তিনি ভাগ্যবান যে কেরিয়ারে ২ টো মাত্র বিশ্বকাপ খেলেছেন, আর ২ টোতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত (india)। কিন্তু একই সঙ্গে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের (world cup final) কথা উঠতেই আফশোসের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলায় বারবার। মাত্র ৩ রানের জন্য সেদিন ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শতরান হাতছাড়া হয়েছিল দিল্লির (delhi) এই তারকা বাঁহাতি ওপেনারের। পরবর্তীতে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। সেদিন এমএস ধোনির সঙ্গে গম্ভীরের (gautam gambhir) ১০৯ রানের পার্টনারশিপই ২৮ বছর পর ভারতের দ্বিতীয়বার বিশ্বজয়ের পথ মসৃণ করে দেয়। কিন্তু পরবর্তী ১০ বছরে বারবার গম্ভীর-ধোনি সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী বেশ কয়েকবার নিজেও গম্ভীর সেই ইনিংসের প্রশ্ন উঠলেই ধোনিকে পরোক্ষভাবে দায়ী করেছেন। কিন্তু কেন? সেদিন গৌতম গম্ভীরের সেই ম্যাচ উইনিং ইনিংস নিয়েই আজকের ওস্তাদের মার...এ আমাদের প্রতিবেদন--
সেদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়েছিলেন লঙ্কা অধিনায়ক সঙ্গকারা। শ্রীলঙ্কা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭৪ রান বোর্ডে তুলে নেয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সচিন তেন্ডুলকর ও বীরেন্দ্র সহবাগের উইকেট হারিয়ে তখন রীতিমতাে চাপে টিম ইন্ডিয়া। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ের গ্যালারিও মুহূর্তেই পিন ড্রপ সাইলেন্স। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের একবারে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেও শেষে কি হারের মুখ দেখতে হবে? প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেরানো কোটি কোটি সমর্থককে একটু আশার আলো দেখিয়ে ধীরে ধীরে স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়ে চললেন গৌতম গম্ভীর। প্রথমে তরুণ বিরাট কোহলিকে নিয়ে ৮৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। বিরাট আউট হলে ক্রিজে আসেন ধোনি। অধিনায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে এরপর ২২ গজে ১০৯ রানের অনবদ্য পার্টনারশিপ। গোটা টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন বাঁহাতি তারকা। ৪টে অর্ধশতরান সহ মোট ৯ ইনিংসে ঝুলিতে ৩৯৩ রান। ফাইনালেও তার ব্যতিক্রম হল না। কিন্তু তাল কাটল ৪১.২ ওভারে গিয়ে। ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১২২ বলে ৯৭ রানের ইনিংস খেলে থিসারা পেরেরার বলে বোল্ড আউট হয়ে যান গম্ভীর। স্টেপ আউট করে চালিয়ে খেলতে গিয়েই উইকেট খুঁইয়ে বসেন তিনি। যদিও তাতে ভারতের জয় পেতে কোনও সমস্যা হয়নি। কারণ যুবরাজের সঙ্গে জুটি বেঁধে পরে ম্যাচ জিতে দেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কিন্তু প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে শতরানের নজির গড়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন গম্ভীর।
গম্ভীরকে এই নিয়ে পরবর্তীতে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ''৯৭ রানের আগে পর্যন্ত আমার মাথায় একবারের জন্যও ব্যক্তিগত স্কোর মাথায় আসেনি। তখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রাই আমার মাথায় ঘুরছিল। কিন্তু ধোনি সেই মুহূর্তে আমায় বলেছিল যে আর মাত্র ৩ রান বাকি, তাই ওটা দ্রুত করে নিজের শতরান যাতে পূরণ করে নেই আমি। সেই মুহূর্তে হঠাৎ করেই আমার মাথায় ব্যক্তিগত স্কোর প্রাধান্য পেয়ে গিয়েছিল। ব্যস, দ্রুত সেই রান তুলতে গিয়েই নিজের মনসংযোগ খুঁইয়ে বসি আমি। আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় আমি নিজেকে বলছিলাম বারবার যে এই তিন রান না করতে পারার যন্ত্রণা আমাকে সারা জীবন কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে।''
গম্ভীরের দুরন্ত ৯৭ রান সত্তেও সেদিন অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন এমএস ধোনি। যদিও অনেকেই মনে করেন যে সেই পুরস্কারটি প্রাপ্য ছিল গম্ভীরের। তবে তা নিয়ে যদিও ২ জনের কেউই মুখ খোলেননি কোনওদিন। তবে এই বিশ্বকাপের পর থেকেই ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলে ক্রমাগত ব্রাত্য হতে থাকেন গম্ভীর।
আরও পড়ুন: হারের মধ্যেই বিরাট ধাক্কা রুটদের, জরিমানার সঙ্গে কাটা গেল পয়েন্টও