বর্জ্য যখন সম্পদ : আমলকির বীজ অকেজো নয় - বলছে পতঞ্জলির গবেষণা
আমলকি বীজে পতঞ্জলির যুগান্তকারী গবেষণা : রোগ নিরাময় ও কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক, বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতির দাবি

আমলকির বীজের উপকারিতা
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে অবস্থিত পতঞ্জলি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে আবারও একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে বলে দাবি। সাধারণত, আমলকির শাঁস অংশ ব্যবহার করার পর এর বীজ বর্জ্য হিসাবে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু, পতঞ্জলির বিজ্ঞানীরা এই তথাকথিত “অকেজো” বীজ নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন যে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অমূল্য সম্পদ। পতঞ্জলির দাবি, এই উদ্ভাবনটি এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পাচ্ছে, তাদের দাবি, এটি একটি চমৎকার উদাহরণ যে কীভাবে ভারতের আয়ুর্বেদিক জ্ঞান এবং আধুনিক বিজ্ঞান একত্রিত হতে পারে।
গবেষণায় কী পাওয়া গেছে?
সংস্থাটি জানিয়েছে, “পতঞ্জলির গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দল আবিষ্কার করেছে যে আমলকির বীজে ঔষধি গুণ রয়েছে যা মূলধারার আয়ুর্বেদ আগে ব্যবহার করেনি। রাসায়নিক বিশ্লেষণে বীজে কোয়ার্সেটিন, এলাজিক অ্যাসিড, ফ্ল্যাভোনয়েড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ট্যানিনের উপস্থিতি দেখা গেছে।”
পতঞ্জলির আরও দাবি
“এখন এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে এই যৌগগুলি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলির অ্যান্টি-এজিং ( অকাল বার্ধক্য রোধ), অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহ কমানোর) এবং কার্ডিও-প্রোটেক্টিভ (হৃদ্পিণ্ড রক্ষাকারী) বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই গবেষণা উচ্চ রক্তচাপ এবং ত্বক-সম্পর্কিত সমস্যার জন্য কার্যকর হতে পারে, পাশাপাশি, ডায়াবেটিস এবং কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মতো জীবনযাত্রার ব্যাধিগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সাহায্য করতে পারে।”
এই রাজ্যগুলিতে বীজ সংগ্রহ শুরু হয়েছে
পতঞ্জলির বক্তব্য অনুসারে, “এই আবিষ্কারের সবচেয়ে বড় সামাজিক প্রভাব হল কৃষকদের সরাসরি সুবিধা — 'বর্জ্য থেকে সম্পদ' মডেলকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। যে বীজগুলি আগে ফেলে দেওয়া হত তা এখন আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। পতঞ্জলি উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর প্রদেশের কৃষকদের কাছ থেকে আমলকির বীজ সংগ্রহ শুরু করেছে, যা তাদের অতিরিক্ত উপার্জন দিচ্ছে। এটি স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে এবং আমদানিকৃত ভেষজ কাঁচামালের উপর নির্ভরতা কমায়।”
বিশ্ব মঞ্চে স্বীকৃতি
সংস্থাটির আরও বক্তব্য, “পতঞ্জলির প্রচেষ্টা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় স্তরেই প্রশংসিত হয়েছে। আয়ুষ মন্ত্রক এবং এশিয়ান ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন বোর্ডের মতো মর্যাদাপূর্ণ সংস্থাগুলি এই গবেষণাটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউরোপ, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডের গবেষণা পত্রগুলিতেও পতঞ্জলির ফলাফল উল্লেখ করা হয়েছে।”
এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে, পতঞ্জলি আমলকির বীজের তেল ক্যাপসুল, ত্বকের যত্নের ফর্মুলেশন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী পণ্য তৈরি করেছে — যার সবগুলিরই এখন বিদেশে চাহিদা বাড়ছে। এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে যখন প্রাচীন জ্ঞান আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন তার ফলাফল মানবজাতির উপকারে আসে।






















