Swami Ramdev : 'বেদে কোনও বৈষম্য নেই', গুরুকুল উৎসবে বৈদিক ঐক্যের বার্তা দিলেন স্বামী রামদেব
Patanjali University Gurukul festival : পতঞ্জলি গুরুকুলম শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করছে।

Patanjali University Gurukul festival : পতঞ্জলি গুরুকুলমের বার্ষিক অনুষ্ঠান উদযাপন হল পতঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে স্বামী রামদেব প্রাচীন গুরু-শিষ্য ঐতিহ্যের প্রশংসা করে বলেছেন, পতঞ্জলি গুরুকুলম শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করছে।
আগে কী শেখানো হত
ভারতীয় শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত গুরুকুলম সম্প্রতি বিশিষ্ট সাধুদের উপস্থিতিতে তাদের বার্ষিক উৎসবের আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানে পতঞ্জলি যোগপীঠের সভাপতি স্বামী রামদেব বলেন, প্রাচীন গুরুকুলগুলিতে শিক্ষার্থীদের কেবল জ্ঞানই শেখানো হত না, বরং নীতিশাস্ত্র, চরিত্রের পবিত্রতা, কথাবার্তা ও আচরণে নম্রতা ও সুশৃঙ্খল আচরণও শেখানো হত।
স্বামী রামদেব কী বলেন
এখানেই থেমে থাকেননি স্বামী রামদেবের বার্তা। তিনি বলেন, "প্রাচীন গুরুকুলগুলিতে শিক্ষিত শিক্ষার্থীরা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিত। পতঞ্জলি গুরুকুলম, একই প্রাচীন ঋষি ঐতিহ্য অনুসরণ করে, তার শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত করছে।" তিনি আরও বলেন, “পতঞ্জলি গুরুকুলমে ভারতের প্রায় সব রাজ্যের তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিশুরা পড়াশোনা করে। মহর্ষি দয়ানন্দ, ভগবান বাসবন্ন, সন্ত মণিবদেবেশ্বর, সন্ত জ্ঞানেশ্বর, সন্ত রবিদাস এবং সন্ত কবীরদাসের মতো মহান ঋষি ও সন্তরা সকল কুসংস্কার, সামাজিক বাধা এবং বৈষম্যের প্রাচীর ভেঙে সমাজকে ঐক্য, সহাবস্থান ও সম্প্রীতির বার্তা দেন অনুষ্ঠানে।”
‘বেদে কোনও বৈষম্য নেই’
স্বামী রামদেব আরও বলেন, “সমগ্র সৃষ্টিতে এক ব্রহ্ম, এক পরম সত্তা সর্বত্র বিরাজমান। সনাতন ধর্মের এই ঐশ্বরিক সত্য ও শাশ্বত বার্তাগুলি মানবজাতির কাছে সম্পূর্ণ সত্যতার সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বলা হয়েছিল, বেদে কোনও বৈষম্য নেই। পতঞ্জলি গুরুকুলমের আচার্যরা শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠনে, জীবনে উৎকর্ষ অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।”
ভারতীয় সংস্কৃতির জীবন্ত উদাহরণ গুরুকুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জুনা পীঠের প্রধান আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী অবধেষানন্দ গিরি জি মহারাজ বলেন, “পতঞ্জলি গুরুকুলম ভারতের কালজয়ী, অমর সংস্কৃতি, বৈদিক মূল্যবোধ এবং প্রাচীন ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও লালন-পালনের জন্য একটি অসাধারণ পরীক্ষাগার। এর ছাত্রদের মধ্যে মানব চেতনার এক উচ্চতর রূপ জাগ্রত হচ্ছে। স্বামী রামদেব কর্তৃক প্রজ্জ্বলিত পতঞ্জলি গুরুকুলমের প্রদীপ সমগ্র বিশ্বকে আলোকিত করবে।”
‘শিশুরাও সংস্কৃতিবান হচ্ছে’
আচার্য বালকৃষ্ণ বলেন, “পতঞ্জলি গুরুকুলম ভারতীয় সংস্কৃতি, সনাতন ঐতিহ্য এবং বিশ্বাসকে শক্তিশালী করেছে। পতঞ্জলিতে, শিশুরা কেবল জ্ঞানই অর্জন করছে না, মূল্যবোধও অর্জন করছে। যে বাবা-মায়েরা এই উদ্দেশ্যে তাদের সন্তানদের এখানে পাঠিয়েছেন তারা আজ অবশ্যই গর্বিত বোধ করছেন, কারণ তাদের স্বপ্ন পতঞ্জলির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।”
এই অনুষ্ঠানে পরমার্থ নিকেতন ঋষিকেশের সভাপতি স্বামী চিদানন্দ মুনি বলেন, “পতঞ্জলি গুরুকুলমের সন্তানদের দেখে আমি বুঝতে পেরেছি যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই চিরন্তন সত্যগুলি প্রকাশ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের দেশে যা প্রকাশ করা উচিত ছিল, তা লুকনো ছিল, যা কখনও ছিল না তা দেখানো হয়েছিল। ভারতের ইতিহাসের আসল ভিত্তি সনাতন ধর্মে নিহিত। আজ, ভারতকে নিজের চোখ দিয়ে নিজেকে দেখতে হবে -পতঞ্জলি গুরুকুলম এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”
অনুষ্ঠানে পতঞ্জলি গুরুকুলমের শিক্ষা, ক্রীড়া ও শাস্ত্র প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল। এখানে পতঞ্জলি গুরুকুল জ্বালাপুর, পতঞ্জলি কন্যা গুরুকুলম দেবপ্রয়াগ ও পতঞ্জলি গুরুকুলম হরিদ্বারের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য ও নাটক পরিবেশন করে।























