Panchayat Elections 2023: সাগরদিঘি জুগিয়েছে অক্সিজেন, কর্নাটকে বেড়েছে আত্মবিশ্বাস, তাতেই কি বাংলায় তাল কাটছে বাম-কংগ্রেস জোটে!
Left Congress Alliance: কিছুটা হলেও 'এই হাম সাথ সাথ হ্য়ায়' সুরের তাল কেটেছে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর।
উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, বিটন চক্রবর্তী ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Elections 2023) সামনে রেখে এ রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ কী হবে? আসন সমঝোতা নিয়ে কোন পথে হাঁটবে দুই দল? কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পর আরও বেশি সংখ্যক আসনে প্রার্থী দিতে ইচ্ছুক কংগ্রেস নেতৃত্ব। জোটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কংগ্রেস নেতারা? কিন্তু কংগ্রেসকে এত আসন কি ছাড়বে বামেরা? থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন (Left Congress Alliance)।
তাল কাটল 'হম সাথ সাথ হ্য়ায়' সুরে!
সাগরদিঘিতে জয়ের পর সব ঠিকঠাকই চলছিল। সিউড়িতে একমঞ্চ থেকে তৃণমূল-বিজেপিকে তীব্র আক্রমণও করেছিলেন মহম্মদ সেলিম এবং অধীর চৌধুরী। কিন্তু, কিছুটা হলেও এই 'হম সাথ সাথ হ্য়ায়' সুরের তাল কেটেছে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর।
বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা কোন ফর্মুলায় হবে, তা নিয়েই দুই শিবিরে শুরু হয়েছে অলিখিত দরকষাকষি। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের একাংশের মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তে বাংলায় কংগ্রেস অনেকটাই অক্সিজেন পেয়েছে। কর্নাটকে বিপুল জয়ের পর আচরণই বদলে গিয়েছে তাদের। তাই পঞ্চায়েত ভোটে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
গত সপ্তাহেই, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে সব কংগ্রেস নেতাই সিপিএম-এর থেকে বেশি আসনে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ রাজ্যে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নেপাল মাহাতো বলেন, "আমরা কংগ্রেস কর্মীদের বলেছি ৮০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন। বাকি ২০ শতাংশ আসন দেখা যাবে। দেখা গেছে, অতীতে সিপিএমের সঙ্গে জোট করে কোনও লাভ হয়নি। সাম্প্রতিককালে জোট করে ত্রিপুরা হেরেছে। কর্নাটকে একক ভাবে লড়াই করে জিতেছে। তাহলে জোট নিয়ে এত মাথাব্যাথা কেন? অলীক দাবি করে লাভ নেই। তবে জোটের কথা উড়িয়ে দিচ্ছি না।"
আরও পড়ুন: Mamata Nabanna PC: 'ওরা কী মনে করে? আমরা কি বেগার শ্রমিক?', সাংবাদিক সম্মেলনে উষ্মা মমতার
কংগ্রেসের এই অবস্থানের পাল্টা কড়া অবস্থান নিয়েছে সিপিএম-ও। সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "৮০ শতাংশ হবে, না ৪০ শতাংশ, সেটা গ্রাম বাংলা ঠিক করবে। আমরা তো দাবি করিনি উত্তরপ্রদেশ এবং পাঞ্জাবে হারের পর পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস দুর্বল হয়ে গেল!"
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই দোলাচলের মধ্যে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "যে দলটা এত মানুষ খুন করল, তার সঙ্গে এক হয়ে জোট করা মানুষ কখনওই মেনে নেবেন না।"
আসন সমঝোতার প্রশ্নে চালকের আসনে বসবে কে?
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, প্রথম বার বাম ও কংগ্রেস জোট করে ভোটে লড়ে, ৭৭টি আসনে জয়লাভ করে। এর পর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে আসন সমঝোতা ভেস্তে গেলেও, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বহরমপুর এবং মালদা দক্ষিণে প্রার্থী দেয়নি বামেরা। ২০২১-এ ফের বাম, কংগ্রেসের মধ্যে জোট হয়। তাতে শামিল করা হয় আইএসএফ-কে।
কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে রাজ্য বিধানসভায় একটিও আসনে জিততে পারেনি বাম এবং কংগ্রেস। মালদা, মুর্শিদাবাদ যে কংগ্রেসের গড়, সেই মিথও কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০২৩-এ সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় পায় কংগ্রেস। সিপিএম-এর সমর্থনে সাগরদিঘি থেকে জয়ী হন কংগ্রেসের বায়রন বিশ্বাস।
কিন্তু, এই মুহূর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আসন সমঝোতার প্রশ্নে চালকের আসনে বসবে কে? কে-ই বা হবে সওয়ারি? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।