(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Bengal SSC scam: 'খালি খাতাতেও চাকরি', কত টাকা ? SSC’র নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় বিস্ফোরক ভাইরাল অডিও!
SSC scam: বিস্ফোরক ভাইরাল অডিও!অভিযোগ , লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে শিক্ষকের চাকরি খালি খাতাতেও টাকার বিনিময়ে চাকরি
সৌভিক মজুমদার, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও দীপক ঘোষ, কলকাতা : এসএসসি’র নিয়োগ-দুর্নীতির ( Bengal ‘SSC scam’ ) মামলায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ শুনিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।
এবিপি আনন্দর (ABP Ananda) হাতে এসেছে, SSC’র নিয়োগ-দুর্নীতির মামলা সংক্রান্ত সেই বিস্ফোরক ভাইরাল অডিও ক্লিপ (Viral Audio Clip)। সেই অডিও ক্লিপটি এবিপি আনন্দ-র ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে শোনানো হয়। যদিও এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করে দেখেনি এবিপি আনন্দ।
কথোপকথনে এক ব্যক্তিকে দাবি করতে শোনা গেছে, ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে, ফেল করা প্রার্থীও চাকরি পেয়েছে। এই কথোপকথনে যা যা শোনা গিয়েছে, তাতে চোখ কপালে ওঠার মতো। যে কোনও নম্বর পেলেই চলবে, সাদা খাতা জমা দিলেও ক্ষতি নেই। শুধু ফেলো কড়ি মাখো তেল ! টাকার খেলা।
ওই যেখানে চাকরির জন্য খোলাখুলি টাকা দাবি করতে শোনা যাচ্ছে এক ব্যক্তিকে। বাজেট কত? কোন ক্লাসের জন্য ? এইসব প্রশ্ন ওঠার পরই হাসতে হাসতে ফোনের ওপারের কণ্ঠ দাবি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ! যদিও তার ব্যাখ্যা, ' আমরা তো এক লাখ টাকা নেব। আমি এতটা দায়িত্ব নেব, এক লাখ টাকার জন্য। বাকি তো অফিসের '
আরও পড়ুন :
'চৌকাঠে শুয়ে পথ আটকাব' দলবদলুদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া দেবাংশু কী বলছেন অর্জুনের ঘর ওয়াপসিতে
ফোনের মহিলা কণ্ঠ আবার আকুতির সুরে বলছেন, ' আমার তো এখানে বিদ্যাসাগরেরই বিএড। কিন্তু, অ্যামাউন্টটা এমন বলছেন, যে মনে হয়, কিডনি-ফিডনি বিক্রি করে দিতে হবে, ঘরবাড়ি বাদ দিয়েও ! ' তাতেই জানা গেল, প্রাইমারি টিচারের চাকরি দিতেই ১৪-১৫ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। কথোপকথনের সময় ফোনের একপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে এও বলতে শোনা গেছে, যে ফেল করা ব্যক্তিকেও তাঁরা টাকার বিনিময়ে চাকরি করিয়ে দেন। ফোনের একপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে, হাসতে হাসতে এও বলতে শোনা যায়, যে খালি খাতাতেও তাঁরা টাকার বিনিময়ে চাকরি করিয়ে দিতে পারেন। তবে ফোনের ওপারের কণ্ঠ যেহেতু নিজেকে পাশ করা ক্যান্ডিডেট বলছেন, তাই একটু ছাড় মিলবে । ' যেহেতু ওয়েটিং-এ আছো, যদি যোগাযোগ করো, ২ লাখ কম হবে। '
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম কী জানালেন :
ভাইরাল এই অডিও ক্লিপ শোনানোর পর তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক তরজা। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম, যিনি কোর্টে অডিও টেপটি পেশ করেন, তিনি হাজের ছিলেন এবিপি আনন্দ-র 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে। তিনি অনুষ্ঠানে জানান, আদালতে তিনি বলেছিলেন এটি একটি মাল্টি-লেয়ারড স্ক্যাম, আদালতের ভাষায় এটি যা গণদুর্নীতি। আইনজীবীর দাবি, এটি কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। এতে হয়ত জেলা প্রশাসন, হেড মাস্টার থেকে পাড়ার দালাল সকলেই জড়িত। নইলে লকডাউনের মধ্যে একজন নিয়োগ পান কীভাবে ! আইনজীবী শামিম জানান, এই টেপ তিনি পেয়েছেন সাধারণ মামলাকারীর কাছ থেকে। সেখান থেকেই জানা যায়, একদিনে ২০০ রও বেশি ক্যান্ডিডেট অ্যাপয়েনমেন্ট পেয়েছে। আসল সংখ্যাটা হয়ত আরও বেশি, তা জানা যাবে তদন্তের পরেই।
BJP র প্রতিনিধি তরুণজ্যোতি তিওয়ারির দাবি
এই প্রসঙ্গে এপ্রিল মাসের একটি ঘটনার কেসের উল্লেখ করেন তরুণজ্যোতি । কলকাতার অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালকে গ্রেফতার করে আর্থিক প্রতারণা-কাণ্ডে । কিন্তু প্রবীর কয়াল বিধায়কের নাম টেনে আনার পরও তাঁকে কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করেনি। এইভাবে তিনি একটি দুর্নীতির পিছনে বড় হাতের প্রশ্রয়ের বিষয়টি ইঙ্গিত করেন।
অধ্য়াপক সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি
' গোটা বিষয়টা এমনভাবে চলছে, যেন তৃণমূল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, সততার ভিত্তিতে তদন্ত হোক, দোষীরা শাস্তি পাক। তবে কিছু মানুষকে যেন টার্গেট করে নেওয়া হচ্ছে। ' দাবি অধ্য়াপক সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ।
টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরির অভিযোগ নিয়ে, প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক-মন্ত্রী ও সিবিআইয়ের প্রাক্তন জয়েন্ট ডিরেক্টর উপেন বিশ্বাসের একটি পুরনো ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সম্প্রতি চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে শিক্ষকের চাকরি দেওয়া হয়েছিল। ভিডিওয় অভিযুক্তকে রঞ্জন বলে উল্লেখ করলেও, তাঁর আসল পরিচয় বলতে চাননি উপেন বিশ্বাস। এবার এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল আদালতে শোনানো ভাইরাল অডিও।