West Bengal BJP: ‘মিটিংয়ে চেয়ার দেওয়া হতো না, আমাকে দলছাড়া করতে চেয়েছিলেন কিছু লোক’, দিলীপের নিশানায় কে?
Dilip Ghosh: বুধবার দিল্লিতে বিজেপি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দিলীপ।

কলকাতা: দল ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেন না বলে একদিন আগেই বার্তা আসে। দলের নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখাও করতে গিয়েছিলেন। তবে দল ছাড়ার কথা না বললেও, বুধবার দিল্লি গিয়ে কার্যত বোমা পাঠালেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, কিছু লোক তাঁকে দলছাড়া করতে চেয়েছিলেন বইকি। কিন্তু তিনি লড়ে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় তাঁকে দিঘায় আমন্ত্রণ জানানোয়, কিছু লোকের অস্বস্তি হচ্ছিল বলেও জানালেন দিলীপ। (Dilip Ghosh)
বুধবার দিল্লিতে বিজেপি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দিলীপ। সেখান থেকে বেরিয়ে স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে পাশে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। আর সেখানেই একের পর এক বোমা ফাটান দিলীপ। বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মান-অভিমান চলছে কিনা জানতে চাওয়া হলে দিলীপ বলেন, "মান-অভিমান চলতে পারে না দলে। এক বছর হল দল কোনও দায়িত্ব দেয়নি। '২৪ পর্যন্ত তো আমি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছিলাম! তার পর নির্বাচন হল। আবার বাংলায় নির্বাচন আসছে। দল মনে করলে যা দায়িত্ব দেবে, করব।" (West Bengal BJP)
২১ জুলাই বিশেষ কিছু ঘটবে বলে এর আগে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন দিলীপ। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তাঁকে দেখা যাবে কিনা, সেই সময় জল্পনা জোর পায়। কিন্তু পরবর্তীতে শমীক জানিয়ে দেন, দিলীপ বিজেপি-তে আছেন এবং থাকবেন। আদি-নব্য দ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই বলেও দাবি করেন শমীক। দিলীপও বলছেন, "উনি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। উনি রাজ্য সভাপতি। উনি যেটা ঠিক করবেন, সবাি মেনে নেবেন। ওঁর কথায় অনেকে উৎসাহিত। পুরনো কর্মীরা আবার মনে জোর পাচ্ছেন।"
কিন্তু একসময় রাজ্যে বিজেপি-কে যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, দলের বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকায় কোনও অভিমানই কি নেই তাঁর? একেবারে সেকথা উড়িয়ে দিলেন না দিলীপ। ঠারেঠোরে নিজের যন্ত্রণার কথা বুঝিয়ে দিলেন। তাঁর বক্তব্য, "আগের অনেক ঘটনা রয়েছে। দলের মিটিংয়ে আমাকে চেয়ারই দেওয়া হতো না। আমি তো কাজ করে গিয়েছি। দল ছেড়ে চলে যাইনি তো! যারা আমাকে পার্টি ছাড়াতে চেয়েছিল, তারা খুব চেষ্টা করেছিল। দিলীপ ঘোষ কখনও দল ছাড়বে বলেনি। যে পার্টি দাঁড় করিয়েছে, সে দল ছাড়বে কেন? পার্টি ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে লড়ে যাবে।"
রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে দিলীপকে নিয়ে জল্পনা এই প্রথম নয়। অন্য দল থেকে বিজেপি-তে এসে ওঠা নেতাদের সামনে দিলীপ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলেও শোনা যায়। এমনকি লোকসভা নির্বাচনে দিলীপের আসনবদল নিয়েও নানা মতামত শোনা যায়। কিন্তু সম্প্রতি বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দিলীপের দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়া। স্ত্রী রিঙ্কুর সঙ্গে মন্দির দর্শনের পর মমতার সঙ্গে বসে গল্পও করতে দেখা যায় দিলীপকে।
সেই নিয়ে দলের অন্দরেও দিলীপকে নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়। যদিও সাধারণ কর্মীরা নন, কিছু বিশেষ লোকজনই তাঁর দিঘা যাওয়া মেনে নিতে পারেননি বলে মত দিলীপের। পাশাপাশি, মমতাকে সামনে রেখে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করলেন তিনি। দিলীপের বক্তব্য, "যাঁরা এত বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের নামে কত মামলা আছে। আর যাঁকে (মমতা) নিয়ে এত চর্চা, তাঁর নামে মামলা নেই। কেন মামলা নেই? চোর-ডাকাত প্রমাণ করা গিয়েছে কি? তাঁর সঙ্গে বসলে আমি খারাপ? দলের কর্মীরা নন, কিছু লোক অস্বস্তিতে ছিল। সমস্যা এটাই যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আমাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন কেন।"
কিন্তু ২১ জুলাই সত্যিই কি কোনও চমক অপেক্ষা করছে? দিলীপ জানিয়েছেন, কিছু করার চেষ্টা চলছে। সময় এলেই দেখা যাবে।






















