![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
Diwali 2021: শ্মশানে ৫টি মানুষের খুলি রেখে শুরু হয় পুজো, স্বপ্নাদেশে পাওয়া পাথরেই পূজিত হন নারায়ণগড়ের ত্রিশূল কালী
এক নাগা সন্ন্যাসী এসে শ্মশান এর উপরে পাঁচটি মানুষের মাথা রেখে পুজো শুরু করেন বলে কথিত।
![Diwali 2021: শ্মশানে ৫টি মানুষের খুলি রেখে শুরু হয় পুজো, স্বপ্নাদেশে পাওয়া পাথরেই পূজিত হন নারায়ণগড়ের ত্রিশূল কালী Diwali 2021 west medinipur trishul kalipujo has its own history and significance Diwali 2021: শ্মশানে ৫টি মানুষের খুলি রেখে শুরু হয় পুজো, স্বপ্নাদেশে পাওয়া পাথরেই পূজিত হন নারায়ণগড়ের ত্রিশূল কালী](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/10/27/cb4c75121eda559ac2eecb6e86a7b9e3_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রায় ২০০ বছর পার করেছে নারায়ণগড়ের গনুয়ার কালি পুজো। কিন্তু জনপ্রিয়তা আজও কমেনি, বরং বেড়েছে। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এই পুজোয়। মাত্র কয়েক বছর হল তৈরি হয়েছে মন্দির। যদিও তা এখনও অসম্পূর্ণ, এখনও চলছে কাজ। এর আগে প্রায় ২০০ বছর ধরে খোলা আকাশের নীচেই পূজিতা হচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের ১৫ নং কুসবশান অঞ্চলের গনুয়ার শ্মশান কালী মা। দেবীর বহু জাগ্রত ঘটনার কারণে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয় এই পুজোয়। তবে করোনার কারণে কিছুটা রাশ টানা হয়েছে সমাগম নিয়মে।
এই পুজোর ইতিহাস বহু প্রাচীন। যা শুনলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে শিউরে উঠতে হয়। জানা যায়, জমিদার পঞ্চানন সাহু, দেবেন্দ্রনাথ সাহু, রাজেন্দ্রনাথ সাহু পরিবারের অর্থাৎ সাহু বাড়ির জায়গাতেই মায়ের আবির্ভাব। কথিত আছে সাহু পরিবারের এক মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরে, যা পরবর্তীতে দুরারোগ্য কঠিন ব্যাধিতে পরিণত হয়। মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহু পরিবার মেয়েকে কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের বহু জায়গায় নিয়ে যান কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অবশেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে শোকে ভেঙ্গে পড়ে পরিবারের লোকেরা। তখনই সাহু পরিারের তৎকালীন কর্তা স্বপ্নাদেশ পায় যে কোথাও গিয়ে কোনও লাভ হবে না, মেয়েকে যদি সুস্থ করতে হয় তা হলে গনুয়া যাও। ওখানে তোমাদের জায়গায় মাটি চাপা হয়ে আছি আমি। সেখান থেকে আমাকে বের কর। আমার পুজো শুরু কর। এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে তৎক্ষণাৎ সাহু পরিবারের লোকজনেরা গনুয়ার আজকে যে জায়গায় মন্দির স্থাপিত হয়েছে সেখানে যান।
সেইসময় উক্ত এলাকায় এক নাগা সন্ন্যাসী এসে শ্মশান এর উপরে পাঁচটি মানুষের মাথা রেখে পুজো শুরু করেন বলে কথিত। সাহু পরিবারের সদস্যদের শ্মশান এর উপর দৈনন্দিন পুজো করার নির্দেশ দেন তিনি। বাঘ,ভাল্লুকে ভরা গভীর জঙ্গল কেটে এরপর শুরু হয় খনন কার্য। যা পাওয়া যায় তা হল দুটি কালো পাথর আর একটি ত্রিশূল। আর তাতেই ভক্তি ভরে মায়ের পুজো শুরু করেন সাহু পরিবারের লোকজনেরা । আর সেই থেকে শুরু হয়ে আসছে পাথরের উপর ত্রিশূল কালির মায়ের ফটো বসিয়ে পূজো। আজও কোন কালী মায়ের মূর্তি পুজো হয় না এখানে। আর সেই পুজো শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই অসুস্থ মেয়েটিও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে দুরারোগ্য রোগ থেকে।
এই খবর যখন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তখনই মানুষ নিজেদের অসুবিধার কথা জানিয়ে মায়ের কাছে মানত করতে ছোটেন। মনোস্কামনা পূর্ণ লক্ষ্যে পৌরাণিক রীতি মেনে আজও পুজোর দিন ১০০০ বেশি ছাগ বলি দেওয়া হয়। কথিত আছে যারা মায়ের কাছে মানত করেন সকলেরই মনোস্কামনা পূর্ণ করেন গনুয়ার কালী মা। সেই থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মায়ের কাছে পুজো দেওয়ার ভীড় আজ সেই পুজো লক্ষাধিক মানুষের ভীড়ে পরিণত হয়েছে। বহু দিন ধরে পারিবারিক পুজো থাকলেও মানুষের অতিরিক্ত ঢলের কারণে এই পুজোকে সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। বিগত বেশ কয়েকবছর বছর ধরে সার্বজনীন পুজো হিসেবে পূজিতা হচ্ছেন গনুয়ার কালী মা। পুজো সার্বজনীন রূপ পাওয়ার পর গ্রামের মানুষ পুজো কমিটি প্রশাসনের কাছে খোলা আকাশের নিচে মায়ের পুজো যাতে করতে না হয় তার জন্য মন্দির তৈরি করার আবেদন জানান। অবশেষে প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের উদ্যোগে মায়ের মন্দির নির্মিত হয়। বিগত চার বছর ধরে সেই মন্দিরেই পূজিতা হচ্ছেন গনুয়ার জাগ্রত শ্মশান কালীমা।
জমিদার বাড়ি সদস্য স্বপন সাহু বলেন এখানে শ্মশান ছিল। জঙ্গলে ঘেরা গোটা এলাকা ছিল এক নাগা সন্ন্যাসী এই জায়গায় এসে জব ,তপ শুরু করেছিলেন। তারপর তিনি জমিদারকে বলেন যে পাথর রয়েছে পাথরের নিচে মায়ের অধিষ্ঠিত জাগ্রত মূর্তি আছেন। সে পাথর কোনদিনও তোলা যাবে না পাথর থাকবেই তার উপর মূর্তি হবে আর সেই রীতি অনুযায়ী পরম্পরা মেনেই চলছে কালীপুজো ।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)