Purulia Travel Destinations: সমৃদ্ধ সবুজ ভূখণ্ড,পাহাড় ঘেরা টুসু-ঝুমুরের দেশ পুরুলিয়া একটি আদর্শ পর্যটন গন্তব্য
Travel Destination:পুরুলিয়ার কাশীপুর রাজবাড়িতে জড়িয়ে আছে মাইকেল মধুসুধন দত্তের ইতিহাস। পাশাপাশি জয়চন্ডী-অযোধ্য়া পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুন্দর সময় উপভোগ করার জন্য আদর্শ।
পাহাড়, জঙ্গল ও জলাধার ঘেরা পুরুলিয়া বরাবরই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেই সারা বিশ্ব থেকে দর্শকদের আসা যাওয়া লেগে থাকে পশ্চিমবঙ্গের এই জেলায়।
কী দেখবেন?
প্রকৃতি-জঙ্গল, পাহাড়, জলাধার ও জলপ্রপাত মিলিয়ে দেখার জায়গা অনেক।
একঝলকে দেখে নেওয়া যাক
কাশিপুর রাজবাড়ী: এই রাজবাড়ীর সাথে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ইতিহাস জড়িত আছে। মাইকেল একসময় এই রাজবাড়িতে চাকরি করতেন। প্রতিবছর রাজবাড়িটি দুর্গাপুজোর সময় সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়া হয়।
বড়ন্তি জলাধার: সুন্দর সবুজ পাহাড় এবং প্রশান্তিতে ঘেরা বারন্তি জলাধার, পুরুলিয়ার সবচেয়ে শান্ত এবং সবচেয়ে চমৎকার জায়গাগুলির মধ্যে একটি।এই অবস্থানটি এখনও অনেক পর্যটকদের কাছে তুলনামূলকভাবে অজানা।তাই জলাধারটি তার নিজস্ব মহিমায় সংরক্ষিত।
জয়চণ্ডী পাহাড়: এই পাহাড় পুরুলিয়ার অন্যতম আকৰ্ষণ। জয়চন্ডি পাহাড় জয়চন্ডী রেল স্টেশন থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আদ্রা স্টেশন থেকেও এখানে চলে আসা যায়। এই পাহাড়ে সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে ছবির শুটিং হয়েছিল। এছাড়া আরো বেশ কিছু ছবির শুটিং এখানে হয়েছে। এই পাহাড়ের ওপরে আছে জয়চন্ডী মন্দির ও বজরং মন্দির।
অযোধ্যা পাহাড়: অযোধ্যা পাহাড় পুরুলিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি। কারণ এই পাহাড় প্রধান শহরের কেন্দ্র থেকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। অনেকে বিশ্বাস করেন যে স্থানটির পৌরাণিক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ ভগবান রাম এবং সীতা তাদের নির্বাসনের সময় এখানে বসবাস করেছিলেন বলে কথিত আছে।
গড়পঞ্চকোট মন্দির: এই মন্দির ছিল সিং দেও রাজত্বের অংশ। এই মন্দির গুলি বর্গী আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং অধিকাংশ ধ্বংস হয়। এখনো সেসব মন্দিরের কিছু অবশিষ্ঠ আছে। পুরুলিয়া শহর থেকে গড়পঞ্চকোটের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার।
পাঞ্চেৎ ড্যাম: পাঞ্চেৎ ড্যাম গড় পঞ্চকোট থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাঞ্চেৎ ড্যাম। এই ড্যামটি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ড দুই রাজ্যের বর্ডারে আছে এই ড্যামটি। এই ড্য়ামের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
সাহেব বাঁধ: সাহেব বাঁধ পুরুলিয়ার সবচেয়ে অন্তর্নিহিত জলাশয়, যা ৫০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।কর্নেল টিকলি ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে এই স্থানটি নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।এই জলাধার একটি ইতিহাস আছে।কর্নেল টিকলি বেশ কয়েকজন কয়েদিকে এই জলের ঝরনার জন্য খনন শুরু করতে বাধ্য করেন। যে কারণে এই বিশাল ট্যাঙ্কটি তৈরি করতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে।এই স্থানটি এখন পুরুলিয়ার অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।
চেলিয়ামা: চেলিয়ামা হল পুরুলিয়ার সবচেয়ে ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য গন্তব্য। চেলিয়ামা, রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। মন্দিরটি ১৭ শতকে নির্মিত হয়েছিল এবং টেরাকোটা স্থাপত্য দ্বারা প্রভাবিত ভাস্কর্যগুলির কারণে এই অঞ্চলে স্থাপত্যের জন্য বিস্ময়কর স্থান। খিলানপথের উপরের প্যানেলে কৃষ্ণলীলার দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও পুরুলিয়ার অন্য়তম আকর্ষণ হল ছৌ নৃত্য়। পুরুলিয়ার সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য 'ছৌ'-কে কেন্দ্র করে। সাঁওতাল, কুমার, মাহাতো, কালিন্দী এবং সহীষ সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয় ছৌ-এর মুখোশধারী শিল্পীরা মূলত স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। সুন্দর মুখোশের ব্যবহার এবং নাচের স্টাইল, মেক-আপ এবং রঙিন পোশাক এই নাচকে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
কী ভাবে আসবেন?
কলকাতা থেকে গাড়িতে ৫ ঘন্টায় পুরুলিয়া পৌঁছানো যায়। দিল্লি রোড ধরে দুর্গাপুর বা আসানসোল হয়ে পৌঁছানো যায় পুরুলিয়া শহরে। পাশাপাশি, ধর্মতলা থেকে অনেক বাস পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছাড়ে। ট্রেনে আসতে গেলে হাওড়া থেকে চক্রধরপুর এক্সপ্রেস নেওয়া যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: www.wbtourism.gov.in এবং https://wbtourism.gov.in/destination/district/purulia
আরও পড়ুন... ম্যানগ্রোভে ঘেরা ব-দ্বীপের মাঝে বাঘ-কুমিরের রোমাঞ্চ! একনজরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোথায় কী