Hooghly News: পাণ্ডুয়ায় গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু, আটক স্বামী
মৃতার ভাই জানান, এটা একেবারেই আত্মহত্যার ঘটনা নয়। বরং তাঁর বোনকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ, মৃতার শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: গৃহবধূকে হত্যা করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির (Hooghly) পাণ্ডুয়ায়। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছত্রিশের মৃত মহিলার নাম অপর্ণা হালদার। কোন্নগরের কানাইপুরের বাসিন্দা অপর্ণার সঙ্গে বছর পনেরো আগে বৈঁচির আবাদ পাড়ার বাসিন্দা প্রশান্ত হালদারের বিয়ে হয়। প্রশান্ত হালদার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। মৃতার পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, গতকাল অর্থাৎ শনিবার হঠাৎই প্রশান্তর বাড়ি থেকে অপর্ণার বাপের বাড়িতে ফোন করে জানান হয় যে, অপর্ণা গলায় দড়ি দেওয়ায় তাঁকে পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে জানান হয়, পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। জানা গিয়েছে, পাণ্ডুয়া গ্রামীন হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আজ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, আজ সকালে মৃতের পরিবারের সদস্যরা পাণ্ডুয়া থানায় আসেন। মৃত গৃহবধূ অপর্ণা হালদারের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা যখন থানায় মৃতার দেহ দেখেন, তাঁরা দেখেন অপর্ণার চোখে কালো দাগ এবং শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপরই তাঁরা মৃতার স্বামী প্রশান্ত এবং শ্বশুরবাড়ির আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। মৃতার ভাই অমিত বিশ্বাস জানান, এটা একেবারেই আত্মহত্যার ঘটনা নয়। বরং তাঁর বোনকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ, মৃতার শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন তাঁরা।
অভিযুক্ত স্বামী প্রশান্তর পিসতুতো দাদা সরজিত মল্লিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, শনিবার রাতে কী হয়েছিল, সে সম্পর্কে তাঁর জানা নেই। তবে, দোলের দিন বাড়িতেই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল প্রশান্ত। সেই সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল হয়। কী কারণে গন্ডগোল হচ্ছিল, সে সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু বলতে না পারলেও তিনি জানিয়েছেন যে, প্রশান্ত তার শ্বশুরবাড়িতে লাখ পাঁচেক টাকা ধার দিয়েছিল। সেই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হতে পারে। আর সেই অপমানেও অপর্ণা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। কিন্তু মৃতার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন কেন? সে প্রসঙ্গে কিছু জানাতে পারেননি প্রশান্তর পিসতুতো দাদা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মৃতার পরিবারের সদস্যরা স্বামী প্রশান্ত ও শ্বশুরবাড়ির কয়েকজন সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছেন তাঁরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসলে অপর্ণা হালদারের মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।