Uluberia : ভাগাড় থেকে ১৭টি মানবভ্রূণ উদ্ধার ! ৪ নার্সিংহোমে হানা পুলিশ-প্রশাসনের
Uluberia Municipality : ঘটনা সামনে আসার পরই হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও উলুবেড়িয়া পুরসভার তরফে তাদের কয়েকজন আধিকারিককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
সুনীত হালদার, হাওড়া : উলুবেড়িয়া পুরসভার (Uluberia Municipality) ভাগাড় থেকে ১৭টি মানবভ্রূণ (Human Foetus) উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে। পুর চেয়ারম্যান ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল চারটি নার্সিংহোমে হানা দেন। খতিয়ে দেখেন নার্সিংহোমের বিভিন্ন নথি।
মঙ্গলে মানব ভ্রূণ উদ্ধার। বুধে নার্সিংহোম পরিদর্শনে পুলিশ-প্রশাসন। মঙ্গলবার হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে ১৭টি মানব ভ্রূণ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়ে যাওয়ার পর, বুধবার দেখা গেল পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতা। ঘটনা সামনে আসার পরই হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও উলুবেড়িয়া পুরসভার তরফে তাদের কয়েকজন আধিকারিককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন ; হাওড়ার বাগনানে বাড়িতে ঢুকে বিজেপি নেতাকে মার, ফাটল মাথা
বুধবার দুপুরে তৃণমূল পরিচালিত উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস এবং স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক অফিসার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ৪টি নার্সিংহোমে হানা দেন। উলুবেড়িয়া শহরে অবস্থিত ওই ৪টি নার্সিংহোমের রেজিস্টার খতিয়ে দেখা হয়। কতজন অন্তঃসত্ত্বা ভর্তি আছেন, তার তথ্য সংগ্রহ করেন আধিকারিকরা। নার্সিংহোমগুলি কীভাবে তাদের মেডিকেল বর্জ্য বাইরে ফেলে সেবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হয়।
এনিয়ে উলুবেড়িয়া পুরসভা চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা অভয় দাস বলেন, মেডিকেল বর্জ্য ফেলা নিয়ে যদি কোনও গাফিলতি থাকে তাহলে সেই নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পুরসভার ভাগাড়ে চব্বিশ ঘণ্টা লোক রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তৎপর পুলিশ-প্রশাসন-
উলুবেড়িয়া শহরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে, বাণীতবলা এলাকায়, পুরসভার ভাগাড়ে ১৭টি মানব ভ্রূণ কীভাবে এল ইতিমধ্যেই তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে উলুবেড়িয়া শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো নার্সিংহোম গজিয়ে উঠেছে। নার্সিংহোমের আড়ালেই কি লুকিয়ে রয়েছে অবৈধ ভ্রূণ হত্যা চক্র ? আইন অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহের বেশি বয়সী ভ্রূণ নষ্ট করা অপরাধ। বিশেষ ক্ষেত্রে ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট সময়কাল পেরনোর পর ভ্রূণ নষ্টের অভিযোগ ওঠে।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ও আইএমএ-র সদস্য সুজয় চক্রবর্তী বলেন, টার্মিনেশন অফ মেডিক্যাল প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট আছে। অ্যাবর্সনের কিছু নীয়মনীতি আছে। নার্সিংহোমে তা মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের বলা হবে। গাফিলতি থাকলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। হাওড়া গ্রামীণ বিজেপির সভাপতি অরুণোদয় পাল চৌধুরী বলেন, উলুবেড়িয়ার নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে যুক্ত শাসকদলের নেতারা। নানা ধরনের বেআইনি কাজকর্ম চলছে। সাধারণ মানুষকে ধোকা দেওয়ার চেষ্টা।
যদিও অভয় দাস বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে পুরসভা যুক্ত নয়।
রাজনীতিতে কথার লড়াই থামার নয়। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভ্রূণ হত্যার পরম্পরা কবে বন্ধ হবে?