Kalyan Vs Mohua : 'শুয়োরের সঙ্গে তুলনা' থেকে, 'চোর জোচ্চোর.... ' কল্যাণ-মহুয়ার দ্বন্দ্বে বাছা বাছা শব্দপ্রয়োগ
'মহুয়া মৈত্রর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আজ আমাকে তিনি নারী বিদ্বেষী বলে সেই সমর্থনের প্রতিদান দিচ্ছেন' বিস্ফোরক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা : ফের মাথাচাড়া দিল তৃণমূলের দুই সাংসদের পুরনো দ্বন্দ্ব! সোমবার দিল্লিতে মহুয়া মৈত্রকে দেখে, প্রকাশ্যেই কটাক্ষের সুর শোনা গেল কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। পরে সাংবাদিকদের সামনেও তিনি বলেন, বলেছিলাম দিনটা খারাপ যাবে। দিনটা খারাপই গেছে। এর আগেও একাধিক ইস্য়ুতে তৃণমূলের এই দুই সাংসদের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। বাছাবাছা শব্দবন্ধে একে অপরকে আক্রমণ করেছেন, সৌজন্যের লেশমাত্র না রেখেই। সোমবার ফের একবার কল্যাণ আর মহুয়ার দ্বন্দ্ব সামনে চলে আসার পর আজ মঙ্গলবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, '২০২৩-এ সংসদে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। সে সময় আমি মহুয়া মৈত্রর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আজ আমাকে তিনি নারী বিদ্বেষী বলে সেই সমর্থনের প্রতিদান দিচ্ছেন। যাঁর কৃতজ্ঞতা নেই, তাঁকে সমর্থনের জন্য আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি' । ফের বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোটের আগেই, নতুন করে মাথাচাড়া দিল তৃণমূলের দুই সাংসদের পুরনো দ্বন্দ্ব! ফের সরাসরি সংঘাতে কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং মহুয়া মৈত্র!সোমবার তৃণমূলের 'চিফ হুইপে'র পদ ছাড়ার ঘোষণা করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সোমবার দিল্লির পার্টি অফিস থেকে ভার্চুয়ালি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদরা। সেখানে ঢোকার মুখে, মহুয়া মৈত্রকে দেখে কটাক্ষের সুর শোনা যায় কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের গলায়। সঙ্গে সঙ্গে কল্যাণ বলে ওঠেন ...দিনটাই আজ চলে গেল রে! অর্থাৎ তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত মহুয়ার মুখে দেখলে দিন খারাপ যাবে তাঁর। এরপর এনিয়ে আর রাখঢাক করেননি কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বলেন 'মুখটা দেখে আপনার দিনটা খারাপ যাবে...'এরপর তিনি মিটিং থেকে বেরিয়ে ফের বলেন, 'দিন তো খারাপ গেছেই। আমি বলেইছিলাম দিনটা খারাপ যাবে। দিনটা খারাপ গেছেই।'
লোকসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ পদে ইস্তফা ঘোষণা করে সোশাল মিডিয়াতে মহুয়া মৈত্রর নাম করে কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'মহুয়া মৈত্র প্রকাশ্যে যে ব্য়ক্তিগত মন্তব্য় করেছেন, তা আমি দেখেছি। যে শব্দ ব্য়বহার করেছেন, বিশেষত একজন সতীর্থ সাংসদকে তিনি যেভাবে শুয়োরের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তা শুধু দুর্ভাগ্য়জনক নয়, প্রকাশ্য়ে কী বলা যায়, সেই সাধারণ নিয়মটুকুর প্রতি গভীর অবজ্ঞার প্রতিফলন। '
সম্প্রতি দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে যাওয়ার সময়ও তৃণমূলের অন্দরের লড়াই বাইরে চলে আসে। সোশাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও পোস্ট করেছিলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য়। সেখানে কল্যাণকে বলতে শোনা যায়...'চোর জোচ্চোরে.... আমি তো চাই মিডিয়া হোক। ও কত বড় অসভ্য...' এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান কল্য়াণ । পরিষ্কার বলে দেন, 'অসভ্য মহিলা MP-কে সহ্য করব না..সুন্দরী মহিলা বলে এই নয় আর ইংরেজি ফটফটফটফটফট করে করতে পারে বলে, এই নয় যে পুরুষকে অসম্মান করতে পারে তাঁরা।'
কসবা গণধর্ষণকাণ্ডেও দুই তৃণমূল সাংসদের সংঘাত সামনে চলে আসে। নির্যাতিতার দিকে কার্যত আঙুল তুলে বিতর্কে জড়ান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 'পড়ুয়ারা যদি তাদের সহপাঠিনীকে ধর্ষণ করে এর চেয়ে দুঃখের খবর তো কিছু নেই। কলেজের ভিতরে যদি করে, পুলিশ থাকবে কলেজে?'যার পর তৃণমূলের তরফে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হয়, দল সেই বক্তব্যের সঙ্গে কোনওভাবেই একমত নয়। দলের অফিসিয়াল পোস্ট রি-পোস্ট করেন মহুয়া মৈত্র। কারও নাম না করে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ লেখেন,'নারী-বিদ্বেষ ভারতের সব দলেই আছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এই জন্যই আলাদা কারণ, সে যেই করুক না কেন, আমরা এই ধরনের ন্যক্কারজনক মন্তব্যের নিন্দা করি।'পাল্টা কল্যাণ বলেন, ' নারী বিদ্বেষী আমি নই। আমি নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি কথা বলি। আর মহুয়া মৈত্র এতটাই নারী বিদ্বেষী, কৃষ্ণনগর লোকসভায় কোনও মহিলা কর্মী, ভাল নেত্রী যাঁরা তাঁদের উঠতে দেয় না। ...আই হেট হার '
আবারও দুই সাংসদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই এক্কেবারে বাইরে চলে এল। আগলটুকুও রইল না।






















